কানাইঘাট মহিলা কলেজে ভর্তি হতে এসে নিখোঁজের ১৭দিন পরও এস.এস.সি উত্তীর্ণ ফারহানা বেগম (১৭) এর কোন সন্ধান না পাওয়ায় তার পরিবার ও স্বজনদের মধ্যে উৎকন্ঠা বিরাজ করছে। এঘটনায় নিখোঁজ ফারহানার পরিবারের প কানাইঘাট থানায় জিডি এন্ট্রি এবং র্যাব-৯ ও পুলিশ সুপার বরাবরে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। নিখোঁজ ফারহানার মা শফিকা বেগম ও মামা ফয়জুল ইসলাম জানান, গত ২৪মে ফারহানা তার নিজ বাড়ী কানাইঘাট সদর ইউনিয়নের গবিন্দপুর গ্রাম থেকে সকাল ৯টার দিকে কানাইঘাট মহিলা কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য বের হয়। এরপর ফারহানা নিজ বাড়ীতে ফিরে না যাওয়ায় তার স্বজনরা সম্ভাব্য সকল স্থান ও আত্মীয় স্বজনদের বাড়ীতে অনেক খুঁজাখোঁজি করে তার কোন সন্ধান না পেয়ে ২৫মে কানাইঘাট থানায় ফারহানা নিখোঁজের ঘটনায় তার মামা ফয়জুল হাসান জিডি করেন। জিডি নং- ১০১৮। মেয়ের কোন সন্ধান না পেয়ে মা শফিকা বেগম ৩১মে পুলিশ সুপার বরাবরে বাদী হয়ে অভিযোগ দেন। ফারহানার মা জানান, নিখোজের পর ২৬মে ০১৭১০-৯৮৩৮৮৭ এবং ০১৭৬৬-৯১০৭৪১ নাম্বার থেকে ফোনে ভাই ফয়জুল হাসান ও তার মেয়ের জামাইর মোবাইল ফোনে বেশ কয়েকটি মেসেজ আসে। মেসেজে ফারহানা তাকে বাঁচানোর জন্য অনুরোধ করে নতুবা তাকে মেরে ফেলবে এ ধরনের মেসেজ পাঠায়। পরবর্তীতে ৩০মে ০১৭৪০-৯৪৩৩২৮ ও ০১৭৪২-৫৩৪৮৭৩ নাম্বার থেকে ফারহানা তার মায়ের নাম্বারে ফোন করে বলে মা তুমি যদি আমাকে জীবিত ফেরত চাঁও তা হলে ঘরবাড়ী জমিজমা চান মিয়া কুতুব আলী, শফিক ও ফাতেমার নামে লিখিয়ে দাও। তা না হলে ওরা আমাকে মেরে ফেলবে বলে কান্নাকাটি করে ফোন করে। এরপরথেকে ৪টি নাম্বার বন্ধ রয়েছে। ফোনে ফারহানা তার মাকে আরো জানায় ২৪ তারিখ কলেজ থেকে বাড়ী ফেরার পথে বীরদল গ্রামের বাঘের সড়ক থেকে কয়েকজন অপরিচিত যুবক একটি সিএনজিতে তাকে তোলে নিয়ে যায়। এখন সে কোথায় আছে তাও জানেনা। তার মায়ের দাবী জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে বাড়ির লোকজন ফারহানাকে অপহরণ করে তোলে নিয়ে আটক করে রেখেছে। স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন কয়েক বৎসর আগে ফারহানার বাবা মারা যান। সে দরিদ্র ঘরের সন্তান, এলাকার অনেকের আর্তিক সহায়তায় সে লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে। একটি ভিটবাড়ী ছাড়া তার পরিবারে কোন সম্পত্তি নাই। বাবা মারা যাবার পর জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে তার চাচাদের সাথে দ্বন্দ রয়েছে। এ ঘটনায় ফারহানাকে অপহরণ করা হতে পারে বলে অনেকে ধারনা করছেন। মোবাইল ফোনের কল লিস্টের সূত্র ধরে নিখোঁজ ফারহানাকে উদ্ধারের জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী। মামা ফয়জুল হাসান জানান তার নিখোঁজ ভাগ্নিকে দ্রুত প্রশাসন উদ্ধার করতে না পারলে তার প্রাণহানীর ঘটনা ঘটতে পারে। এব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এ.এস.আই. আফসারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জিডি এবং পুলিশ সুপার বরাবরে দায়েরকৃত অভিযোগের সূত্র ধরে ফারহানাকে উদ্ধার করার জন্য তদন্ত চলছে। নিখোঁজের পর ফারহানা যে ৪টি ফোনে কথা বলেছে তার কল লিস্ট তৈরী করে তাকে খুঁজে বের করার সবধরনের চেষ্টা নেওয়া হচ্ছে পুলিশ প্রশাসনের প থেকে। নিখোঁজ ফারহানার গায়ের রং উজ্জল শ্যামলা, উচ্চতা অনুমানিক সাড়ে ৪ফুট, স্বাস্থ্য ভালো, মুখ মন্ডল গোলাকার, নিখোঁজের সময় তার পরনে কালো স্যালোয়ার-কামিজ ও কালো খয়রি বোরকা ছিল।
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়