রোহিঙ্গা মুসলিমদের ফিরে যাওয়ার জন্য মিয়ানমার এখনো উপযোগী হয়ে ওঠেনি বলে মন্তব্য করেছেন মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি ইয়াংঘি লি।
বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, মিয়ানমারে সার্বিক পরিস্থিতির এখনো কোনো বদল ঘটেনি। বরং গতমাসে রাখাইন ত্যাগ করার কারণে ৩০ হাজার রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধে মামলা করা হয়েছে।সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘যারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরোধিতা করছেন সেসব আন্দোলনকারী, অ্যাক্টিভিস্ট ও সাংবাদিকদের শাস্তি দিচ্ছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। আর এতে গণতন্ত্র বিনষ্ট হচ্ছে। সে কারণে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও এর কমান্ডারদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা অপরিহার্য।’
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সাত লাখেরও বেশি মানুষ।
সহিংসতা কবলিত রাখাইনের পরিস্থিতি অনুসন্ধানে ওই বছরের মার্চে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন গঠন করে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল। তাদের অনুসন্ধানে জানা যায়, মিয়ানমারে এখনও কয়েক লাখ রোহিঙ্গা থেকে গেছে, যাদের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ।
মঙ্গলবার মিশনের প্রধান মারজুকি দারুসম্যান বলেন, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার শক্ত আলামাত পাওয়া গেছে। এর ফলে জেনোসাইড কনভেনশনের আওতায় পড়ে যাচ্ছে মিয়ানমার। সে অনুযায়ী গণহত্যার ব্যাপারে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে।
জাতিসংঘের মিশনের হিসেব অনুযায়ী, রাখাইনে ৬০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত রয়েছে। লি মনে করছেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীরা রাখাইনে নিরাপদভাবে ফিরে আসতে পারবে না। এখনও সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।
এর আগে চলতি বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের তদন্তকারীরা তাদের অনুসন্ধান শেষে জানিয়েছিল, রাখাইনে থেকে যাওয়া রোহিঙ্গারা গণহত্যার মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। রোহিঙ্গা বিরোধী অভিযানে খুন, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের দায়ে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাংসহ দেশটির শীর্ষ জেনারেলদের বিচারের মুখোমুখি করার সুপারিশ করেছিল তারা।
খবর বিভাগঃ
দেশের বাইরে
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়