Monday, September 30

জৈন্তাপুরের ইউএনও'র বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার

নিজস্ব প্রতিবেদক:
সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার সুযোগ্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌরিন করিমের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারে হতবাক হয়েছেন সচেতন মহল।

জানা যায়, জৈন্তাপুর ভূমি অফিসে দায়েরকৃত একটি উচ্ছেদ মামলা সংক্রান্ত ঘটনা নিয়ে ভূমি অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার সাথে জৈন্তাপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার আনোয়ার হোসেনের মতবিরোধ দেখা দেয়।

এ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন গত ৪ সেপ্টেম্বর জৈন্তাপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মৌরিন করিমের কাছে অফিস চলাকালীন সময় উচ্ছেদ মামলার বিষয় নিয়ে ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নালিশ দেন। 

নির্বাহী কর্মকর্তা মৌরিন করিম বিষয়টি বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে আনোয়ার হোসেন কে জানান। 

এতে নাকোশ হয়ে আনোয়ার হোসেন তার সাথে অসৌজন্য মূলক আচরণ এবং তার বিরুদ্ধে মামলার হুমকি ও ভয় দেখিয়ে অফিস থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ এনে নির্বাহী কর্মকর্তা মৌরিন করিমের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ সহ উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী (ভূমি) তৎকালিন কর্মকর্তা মুন্তাসির হাসান পলাশ ও সার্ভেয়ার রফিকুল ইসলাম এবং অফিসা সহকারী শর্মা কুমার চৌধুরীর বিরুদ্ধে সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবরে ১৬ সেপ্টেম্বর বাদী হয়ে একটি লিখিত দরখাস্ত দায়ের করেন।

বিশেষ করে ইউএনও মৌরিন করিমের বিরুদ্ধে আনোয়ার হোসেনের অভিযোগ দায়ের নিয়ে জৈন্তাপুর উপজেলার রাজনৈতিক মহল, জনপ্রতিনিধি, বিশিষ্টজনরা হতবাক হয়েছেন। 

তারা জানিয়েছেন, বীরমুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেনের সাথে ভূমি অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তাদের একটি উচ্ছেদ মামলা নিয়ে মতবিরোধ থাকতে পারে। কিন্তু নির্বাহী কর্মকর্তা মৌরিন করিমের বিরুদ্ধে আনীত তার অভিযোগ অত্যন্ত দুঃখজনক। 

ঘটনার ১২ দিন পর অভিযোগ দায়েরের পিছনে ষড়যন্ত্র থাকতে পারে বলে তাদের ধারণা।

সে দিনের ঘটনার সময় নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপস্থিত জনপ্রতিনিধি সহ আরো কয়েকজন জানিয়েছেন, নির্বাহী কর্মকর্তা মৌরিন করিম মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেনের সাথে কোন ধরনের খারাপ আচরণ করেননি। উনার অভিযোগের কথা শুনে বিষয়টি আইনগত ভাবে দেখবেন বলে তিনি জানান।

কিন্তু এ নিয়ে সুযোগ্য নির্বাহী অফিসার মৌরিন করিমের বিরুদ্ধে এক ধরনের অপপ্রচার চালানো হচ্ছে যা একেবারে সত্য নয়। 

বিষয়টি তারা সরেজমিনে তদন্ত করলে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে বলে জানান। 

জৈন্তাপুরের সর্বস্তরের জনসাধারণ জানিয়েছেন, নির্বাহী কর্মকর্তা মৌরিন করিম মুক্তিযোদ্ধের চেতনার মত আদর্শের লালিত একজন সরকারি কর্মকর্তা। তিনি জৈন্তাপুরে যোগদান করার পর থেকে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমস্ত রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানমালা সহ সকল ক্ষেত্রে অত্যন্ত সম্মান দিয়ে থাকেন। তিনি জৈন্তাপুরের সকল বীরমুক্তিযোদ্ধাদের উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করে ভূষিত করেছেন। অতীতে কোন নির্বাহী অফিসার মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য যাহা করেননি তা করেছেন মৌরিন করিম।

উপজেলা প্রশাসন চত্ত্বরে স্বাধীন বাংলার স্থাপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুর‌্যাল স্থাপন করেছেন। তিনি কোন মুক্তিযোদ্ধার সাথে খারাপ আচরণ করতে পারেননি।

ৱঅনেক বীরমুক্তিযোদ্ধারা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌরিন করিমের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানোর ঘটনায় নিন্দাও করেছেন।

জৈন্তাপুরের অনেক জনপ্রতিনিধি,শিক্ষক সহ নানা শ্রেণি পেশার লোকজন জানিয়েছেন, গত দুই বছর থেকে মৌরিন করিম ইউএনও দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে খারাপ আচরণ সহ অনিয়ম দূর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার কোন অভিযোগ নাগরিকদের নেই। তিনি জৈন্তাপুরের যোগদান করার পর থেকে অত্যন্ত সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। কোন ধরনে অনিয়ম দূর্নীতি কে তিনি প্রশ্রয় দেননি। প্রতিটি সরকারি দপ্তর কে তিনি দূর্নীতি মুক্ত সহ ডিজিটাল প্রক্রিয়ার আওতায় আনেন। 

সরকারি উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ড স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে মাঠ পর্যায়ে তদারকী করে থাকেন। জৈন্তাপুর প্রশাসন পাড়ার সৌন্দর্য্য বর্ধন তিনি করেছেন। জৈন্তাপুরের পর্যটন এলাকার উন্নয়নে তিনি অত্যন্ত আন্তরিক। সব সময় তিনি একজন নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাবে জনসাধারণের অভাব অভিযোগ অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখেন এবং সেই আলোকে সেবা দিয়ে থাকেন। 

এছাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিলেট জেলার শুদ্ধাচার পুরস্কার ২০১৮-২০১৯ এর জন্য মনোনীত হয়ে সম্মান জনক পুরস্কার পেয়েছেন। তাছাড়া মৌরিন করিম আইসিটিতে সিলেট বিভাগের শ্রেষ্ঠ নির্বাহী কর্মকর্তাও নির্বাচিত হন।

মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেনের অভিযোগের বিষয়ে নির্বাহী কর্মকর্তা মৌরিন করিমের কাছে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি জৈন্তাপুরে যোগদান করার পর থেকে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীরমুক্তিযোদ্ধাদের সব সময় সম্মান দিয়ে আসছি। কারণ উনারা হচ্ছেন অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তি। আমার অবস্থান থেকে আমি সব সময় মুক্তিযোদ্ধাদের সকল কাজে সহযোগিতা করেছি। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় ভূমি অফিসের ২/৩ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে আমার অফিসে আসছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন। আমি বিষয়টি বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করব বলে উনাকে অবহিত করি। উনি আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ এনেছেন তা একেবারে সত্য নয়। আমি সেই ধরনের মানুষ নই, যে একজন বীরমুক্তিযোদ্ধা অপমান বোধ করবেন, এমন কোন কাজ করব। 

অভিযোগ দায়েরর পর উনার সাথে আমি যোগাযোগ করে অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। কিন্তু উনার অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমার কোন ধরনের বক্তব্য না নিয়ে কিছু মিডিয়ায় একপেশে সংবাদ প্রচারে আমি অত্যন্ত মর্মাহত হয়েছি। তিনি আনোয়ার হোসেনের অভিযোগের সঠিক তদন্ত করে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করে প্রশাসনের কাজে সহযোগিতা করার জন্য আহ্বান জানান।

তবে অভিযোগের বাদী মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বরাবর বলে আসছেন, তিনি জেলা প্রশাসকের বরাবরে ১৬ সেপ্টেম্বর যে অভিযোগ দায়ের করেছেন তার বিষয় বস্তু সঠিক।

কানাইঘাট নিউজ ডটকম/৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়