Wednesday, May 22

সুন্দরবনে বেড়েছে বাঘের সংখ্যা

নিউজ ডেস্ক:

বর্তমানে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা ১১৪টি। ২০১৮ সালের বাঘ শুমারিতে এ তথ্য পাওয়া গেছে। ২০১৫ সালে সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা ছিল ১০৬টি। সে হিসেবে তিন বছরের বাঘ বেড়েছে আটটি। 

ইউনেসকো ঘোষিত Bengal Tiger Conservation Activity (Bagh) প্রকল্পে বাঘ গণনার কার্যক্রম (দ্বিতীয় পর্যায়) শেষে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ বন বিভাগ। ‘Second Phase Status of Tiger in Bangladesh Sundarbans 2018’ শিরোনামে বাঘ জরিপের তথ্য বিশ্লেষণ করে  মঙ্গলবার বন বিভাগের একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। 
বন বিভাগের একজন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০০৪ সালে সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা ছিল ৪০৪টি। ২০১৫ সালে তা কমে দাঁড়ায় মাত্র ১০৬টিতে। ওই শুমারি করা হয়েছিল ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ের মাধ্যমে।   
বন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তা বলেন, ২০১৬ সালে ইউএসএইড বাংলাদেশ প্রকল্পের আওতায় দ্বিতীয় পর্যায়ে সুন্দরবনে ক্যামেরা ট্রাপিংয়ের মাধ্যমে বাঘ গণনা হয়।
১ ডিসেম্বর ২০১৬ থেকে ১৪ মার্চ ২০১৭ পর্যন্ত সাতক্ষীরা রেঞ্জের ১২০৮ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় দুইটি সেশনে ২৫৩ গ্রীডে ক্যামেরা বসিয়ে জরিপ পরিচালনা করা হয়। পুনরায় ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ থেকে ২৪ এপ্রিল ২০১৮ পর্যন্ত খুলনা রেঞ্জের ১৬৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় একটি সেশনে ৯৬টি ক্যামেরা বসিয়ে জরিপ করা হয়। একইভাবে ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ থেকে ১০ মে ২০১৮ পর্যন্ত শরণখোলা রেঞ্জের ২৮৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় দুইটি সেশনে ১৮৭ গ্রীডে ক্যামেরা বসিয়ে জরিপ করা হয়। 
সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে মোট চারটি ধাপে তিনটি ব্লকে ১ হাজার ৬৫৬ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় ক্যামেরা বসিয়ে ২৪৯ দিন ধরে পরিচালিত ওই জরিপে ৬৩টি পূর্ণ বয়স্ক বাঘ, ৪টি জুভেনাইল বাঘ (১২-১৪ মাস বয়সী) এবং ৫টি বাঘের বাচ্চার (০-১২ মাস বয়সী) ২ হাজার ৪৬৬টি ছবি পাওয়া যায়। যেহেতু সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বাঘের বিচরণক্ষেত্র ৪ হাজার ৪৬৪ বর্গ কিলোমিটার, সে ক্ষেত্রে বাঘ গবেষণা ও জরিপে সর্বাধুনিক বিজ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতি এসইসিআর মডেলে তথ্য বিশ্লেষণ হয়। তাতে দেখা যায়, সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ১১৪টি।
জানা যায়, বন অধিদফতরের সঙ্গে চলতি বাঘ শুমারিতে অংশ নেয় যুক্তরাষ্ট্রের স্মিথসনিয়ান কনজারভেশন ইন্সটিটিউটের ওয়াইল্ড টিম। আর গবেষণায় তথ্য বিশ্লেষণ ও প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এবারের বাঘ জরিপ কার্যক্রমে প্রাপ্ত তথ্য আরো নিশ্চিত হতে একটি খসড়া Wildlife Institute of India -তে পাঠানো হয়। পরে বাংলাদেশের তৈরি বাঘ বিষয়ক প্রতিবেদন সঠিক বলে মতামত দেয় ভারতীয় প্রতিষ্ঠানটি।
সুন্দরবনই হচ্ছে এশিয়ার মধ্যে বন্য প্রাণীর বৃহত্তম আবাসভূমি। বর্তমানে সুন্দরবনে ৩৭৫ প্রজাতির বন্য প্রাণী রয়েছে। বন বিভাগের দেয়া তথ্যানুযায়ী, ২০০০ থেকে ২০১৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সুন্দরবন অঞ্চলে ৪৪টি বাঘ হত্যার ঘটনা ঘটে।
সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, ২০৭০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে বাঘের জন্য কোনো উপযুক্ত জায়গা থাকবে না। কেননা, বিশ্বের তাপমাত্রা ক্রমাগত বৃদ্ধিসহ চোরাশিকারি ও খাদ্যাভাবের কারণে সুন্দরবনে এ প্রাণীর আবাসস্থল এখন চরম হুমকির মুখে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়