Sunday, May 26

কে হবেন পরবর্তী বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী?

নিউজ ডেস্ক:

ব্রেক্সিট ব্যার্থতা মাথায় নিয়ে সম্প্রতি পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। ফলে তিন বছরের মধ্যে দ্বিতীয় বারের মতো নতুন প্রধানমন্ত্রী পেতে চলেছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০১৬ সালে ব্রেক্সিট গণভোটের পর পদত্যাগ করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। এবার সে পথেই হাঁটছেন মে। তাহলে কে হবেন পরবর্তী বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী? 

বর্তমানে এ নিয়েই সরগরম কনজারভেটিভ পার্টির অন্দরমহল। সম্ভাব্য তালিকায় রয়েছে অন্তত ১৪ জনের নাম। এরই মধ্যে চার জন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামার ঘোষণা দিয়ে দিয়েছেন।
ভারতে কংগ্রেসের চরম ব্যর্থতার পরেও সভাপতি পদে বহাল থাকছেন রাহুল গান্ধী। পদত্যাগ করতে হচ্ছে না তাকে। কিন্তু ব্রিটেনের রাজনৈতিক দলগুলি এ বিষয়ে ‘নির্দয়’। কাজ করতে না-পারলে জায়গা ছেড়ে দিতে হবে। ২০১৬ সালে ক্ষমতায় এসেছিলেন থেরেসা। সেই সময়ে ব্রেক্সিট নিয়ে গণভোটের ফল প্রকাশের পরে পদত্যাগ করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। 
দায়িত্ব নিয়েই থেরেসা বলেছিলেন, নির্দিষ্ট সময়-সীমার মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ছেড়ে বেরিয়ে যাবে ব্রিটেন। কিন্তু ইইউয়ের সঙ্গে টানা তিন বছরের টানাপোড়েনে থেরেসার মন্ত্রিসভা থেকে একের পর এক মন্ত্রী পদত্যাগ করেন। 
থেরেসার আনা ব্রেক্সিট বিলের খসড়া বারবার খারিজ হয়ে যায় পার্লামেন্টে। আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে সীমান্ত চুক্তি-সহ বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়েও কনজ়ারভেটিভ পার্টির কট্টর ব্রেক্সিটপন্থীদের খুশি করতে পারেননি থেরেসা। অবশেষে শুক্রবার সকালে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন- ১০, ডাউনিং স্ট্রিটের সামনে দাঁড়িয়ে কান্নাভেজা গলায় থেরেসা কনজ়ারভেটিভ দলের নেত্রী তথা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি। জানান, আগামী ৭ জুন তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়বেন।
বিবিসি জানিয়েছে, সেক্ষেত্রে জুলাইয়ের মধ্যেই নতুন নেতা এবং প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করবে কনজারভেটিভ পার্টি। যতদিন দলীয় প্রধান নির্বাচিত না হবে ততদিন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন মে।
মে যে সপ্তাহে পদত্যাগ করবেন ওই সপ্তাহেই নতুন দলীয় প্রধান নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হবে। এ বিষয়ে টোরি ব্যাকবেঞ্চ ১৯২২ কমিটির প্রধান গ্রাহাম ব্রাডির সঙ্গে একমত হয়েছেন মে।
তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে সবার আগে শোনা যাচ্ছে প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বোরিস জনসনের নাম। বোরিস ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী পদের দৌড়ে তিনি রয়েছেন। স্বপ্ন দেখছেন হাউস অব কমন্সে’র সাবেক কনজ়ারভেটিভ পার্টির নেত্রী অ্যান্ড্রিয়া ল্যাডসামও, গেল বুধবার যিনি মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন। এরা ছাড়াও লড়াইয়ে রয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট। ২০১৬ সালে ভীষণ ভাবে ব্রেক্সিট-বিরোধী ছিলেন তিনি। আচমকাই ভোল বদলে ফেলেন। 
ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ‘সোভিয়েত ইউনিয়ন’-এর সঙ্গে তুলনা করে গালমন্দ করতে শুরু করেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী রোরি স্টুয়ার্ট, এমপি এস্টার ম্যাকভে জানিয়েছেন, তারা লড়াইয়ে থাকছেন। তবে আশ্চর্যজনক ভাবেই চুপ করে রয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ, পরিবেশমন্ত্রী মাইকেল গোভ, এমপি স্যার গ্রাহাম ব্র্যাডি। নিজেরা এখনও কিছু জানাননি। তবে এক রকম নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়, প্রধানমন্ত্রী পদের দৌড়ে থাকবেন এরাও। কারণ থেরেসার পদত্যাগের পিছনে এদেরই মুখ্য ভূমিকা রয়েছে। যে-ই ক্ষমতায় আসুন না কেন, ‘ব্রেক্সিট-বোঝা’ কাঁধে তুলে নিতে হবে তাকেই। 
এসব নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যেই গেল ৬ মে থেকে টানা দাম পড়ছে পাউন্ডের। বিপদঘণ্টা বাজিয়ে দিয়েছে ব্রিটিশ বাণিজ্যমহলও। কী করবেন নতুন প্রধানমন্ত্রী? সম্ভাব্যদের মতই বা কী? সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে বরিস জনসন বলেছেন, “চুক্তি হোক বা না-হোক, ৩১ অক্টোবর ইইউ থেকে বেরোচ্ছেই যুক্তরাজ্য। কোনও চুক্তিতে না-গেলেই ভাল চুক্তি আদায় করে নেয়া যাবে। কাজ করিয়ে নিতে হলে অবজ্ঞাই শ্রেষ্ঠ উপায়।”
টোরি এমপিরা আগামী ১০ জুনের মধ্যে নিজেদের নাম জমা দিতে পারবেন। যে কোনো এমপি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামতে পারবেন, শুধু পার্লামেন্টে তার দুইজন সহকর্মী তাকে সমর্থন দিলেই হবে।
তারপর শুরু হবে বাছাই প্রক্রিয়া। বাছাইয়ে বাদ দিতে দিতে শেষ পর্যন্ত যখন দুজন থাকবেন তখন দলের সব সদস্য ভোট দিয়ে তাদের একজনকে বেছে নেবেন।
সূত্র: বিবিসি ও আনন্দবাজার

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়