নিজস্ব প্রতিবেদক:
কানাইঘাট উপজেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। শুক্রবার বৃষ্টি না হওয়ায় বন্যার পানি কিছুটা কমলেও গোটা উপজেলার বিস্তীর্ণ ফসলি মাঠ, বাড়ি-ঘর বন্যার পানিতে এখনও তলিয়ে রয়েছে। প্রায় শতাধিক গ্রামের বাড়ি-ঘর বানের পানিতে আক্রান্ত। হাজার হাজার মানুষ এখনও পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। শত শত কাঁচা বাড়ি-ঘর বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সুরমনা নদীর তীব্র স্রোতের কারণে গ্রামীণ পাকা ও কাঁচা রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি সাধিত হয়েছে। উপজেলার প্রায় ৯৫ ভাগ আউশ ধানের মাঠ বানের পানির নিচে। শত শত হেক্টরের ফসলি জমি একেবারে বিনষ্ট হওয়ার পথে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। শুক্রবার সুরমা নদীর পানি বিপদ
সীমার ১৫৫ সেঃ মিঃ উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। কানাইঘাট বাজারসহ উপজেলার বেশ কয়েকটি বাজারে এখনও হাঁটু পানি বিরাজ করছে। ঈদের আগে আকস্মিক বন্যায় ব্যবসায়ীরা কোটি কোটি টাকার লোকসানের মুখে। ক্রেতা না থাকায় বিশেষ করে কাপড় ব্যবসায়ীরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। উপজেলার গ্রামীণ এলাকার হাজার হাজার মানুষ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে এক ধরনের ঘরবন্দী হয়ে পড়েছেন। পাহাড়ি তীব্র ঢলে ও পানির স্রোতে সুরমা ডাইকের ডান তীরের একাধিক জায়গায় ভেঙ্গে এখনও তীব্র বেগে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। নদী ভাঙ্গন মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। মাইলের পর মাইল গ্রামীণ জনপদের রাস্তাঘাট পানির স্রোতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মৎস্য সেক্টর, কৃষি সেক্টরের কোটি কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি সাধিত হয়েছে। কানাইঘাট-সুরইঘাট পাকা রাস্তাসহ উপজেলার বেশ কয়েকটি পাকা রাস্তার অনেকাংশে একেবারে ভেঙ্গে গেছে। সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার পর শুক্রবার থেকে সিলেটের সাথে কানাইঘাটের সড়ক যোগাযোগ চালু হলেও কানাইঘাট-দরবস্ত, গাজী বোরহান উদ্দিন সড়কের নীচু অংশ দিয়ে এখনও পানি প্রবাহিত হচ্ছে, ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। পানি সামান্য কমলেও ব্যাপক জলাবদ্ধতার কারণে চরম বিড়ম্বনায় পড়েছেন বন্যায় আক্রান্ত লোকজন। ২০০৪ সালের পর এধরণের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির কবলে পড়েনি কানাইঘাটবাসী। সরকারিভাবে বন্যায় আক্রান্ত লোকজনদের জন্য ১২ মেঃ টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে, আরও বরাদ্দ পাওয়া যাবে বলে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শীর্ষেন্দু পুরকায়স্ত "কানাইঘাট নিউজকে" জানিয়েছেন। উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার অধিকাংশ এলাকার গ্রামের রাস্তাঘাট বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ঈদের আনন্দ মানুষের মধ্যে ম্লান হয়ে গেছে। বিভিন্ন স্থানে গবাদি পশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, গো-খাদ্য তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানবৃন্দ তাদের এলাকাকে বন্যা দুর্গত এলাকা হিসেবে ঘোষণা দাবি জানিয়েছেন এবং জরুরী ভিত্তিতে পানিবন্দি লোকজনদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী ও পানি বিশুদ্ধকরণ ঔষধপত্র বিতরণের দাবি জানান।
কানাইঘাট নিউজ ডটকম/১৫জুন ২০১৮ ইং
খবর বিভাগঃ
প্রতিদিনের কানাইঘাট
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়