Sunday, June 26

কানাইঘাটে জালাল খুনের ঘটনায় ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা


নিজস্ব প্রতিবেদক: কানাইঘাট লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের কেউটি হাওর গ্রামে জালাল আহমদ (৫০) নামের এক ব্যক্তি খুনের ঘটনায় ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। নিহতের ছেলে শাহীন আহমদ বাদী হয়ে শনিবার কানাইঘাট থানায় এ মামলা দায়ের করেন বলে জানিয়েছেন ওসি হুমায়ুন কবির। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে গত বৃহস্পতিবার রাতে জালাল আহমদকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। তিনি কেউটি হাওর গ্রামের মৃত মাহমুদ আলীর পুত্র। স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, একটি রাস্তার কাজ নিয়ে জালাল আহমদের সাথে একই গ্রামের আব্দুল হকের পুত্র কালা মিয়া ও দুদু মিয়ার পক্ষের লোকজনের বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে সম্প্রতি প্রতিপক্ষের লোকজন জালাল আহমদের পরিবারকে গ্রাম্য সালিশে ‘একঘরে’ করে রাখেন। গত ১৭ জুন জালাল আহমদের ছেলে শাহীন ও ভাতিজা কামরুল গ্রামের মসজিদে জুমার নামায পড়তে গেলে কালা মিয়ার পক্ষের লোকজন তাদের মারপিট করে মসজিদ থেকে বের করে দেয়। বিষয়টি স্থানীয় সালিশে নিষ্পত্তির জন্য এলাকার মুরব্বীরা উদ্যোগ নেন। কিন্তু, প্রতিপক্ষের(কালা-দুদু) পক্ষের লোকজন তা প্রত্যাখ্যান করে করে। গত বৃহস্পতিবার রাত অনুমান সাড়ে ৮টার দিকে স্থানীয় মমতাজগঞ্জ বাজার থেকে কেনাকাটা করে জালাল আহমদ ও তার পুত্র শাহীন (২২), ভাতিজা আবুল হাসনাত, কামরুল, নৌকাযোগে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে স্থানীয় দেউছই হাওরে আসামাত্রই কালা মিয়ার পক্ষের লোকজন দু’টি ইঞ্জিন নৌকা নিয়ে জালাল আহমদকে তুলে আনার চেষ্টা চালায় এবং তার নৌকায় হামলা করে। নৌকাটি হাওরে ডুবে গেলে জালাল আহমদের ছেলে শাহীন, ভাতিজা আবুল হাসনাত ও কামরুল সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হন। কিন্তু, প্রতিপক্ষের লোকজন জালাল আহমদকে ধরে তাদের নৌকায় তুলে নিয়ে এলোপাতাড়ি ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মৃত ভেবে বান্দের আইল নামক স্থানে ফেলে রেখে যায়। পরে জালাল আহমদের আত্মীয় স্বজনরা তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে রাতেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন। কিন্তু, ওসমানী হাসপাতালে আনার পথে জালাল আহমদের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার খবর পেয়ে কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে একদল পুলিশ শুক্রবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। ময়না তদন্তের পর নিহতের লাশ শুক্রবার বাদ মাগরিব গ্রামের মসজিদে জানাজাশেষে দাফন করা হয়। এ ব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হুমায়ুন কবিরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পূর্ব বিরোধের জের ধরে জালাল আহমদকে প্রতিপক্ষের কালা মিয়া, দুদু, আব্দুল হক, মাসুক, জাহিদ, শাহিদ, কয়ছর, চুন্নু মিয়া সহ ১০/১২ জন নৌকা থেকে তুলে নিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। ওসমানী হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় থানায় ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে বলে জানান ওসি।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়