Friday, January 22

জিহ্বার নিয়ন্ত্রণ মুমিনের দায়িত্ব


ইসলাম ডেস্ক: একটি সুন্দর ও সুশৃঙ্খল সমাজ গঠনের নির্দেশনা আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনের সুরা হুজুরাতে দিয়েছেন। এখানে বলা হয়েছে মানুষে মানুষে সম্প্রীতি-ভালোবাসা তখনই হয় যখন মানুষ তার জিহ্বাটাকে সামলে রাখে। এই জিহ্বার অপব্যবহার না করলে সমাজে অশান্তি সৃষ্টি হবে না। এজন্য এই জিহ্বার গুরুত্ব শরিয়তে অনেক বেশি। আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, তুমি যদি এই জিহ্বার আপদ থেকে বাঁচতে চাও এটাকে কন্ট্রোল কর। আর এই জিহ্বা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা হলো প্রয়োজন ছাড়া চুপচাপ থাকা। হাদিসে বলা হয়েছে, যে চুপচাপ থাকবে সে নাজাত পাবে। জিহ্বার ব্যাপারে আমরা খুবই উদাসীন। এটাকে আমরা খুব অনায়াসে ব্যবহার করি। যেখানে ব্যবহার করার না, কথা বলার না, সেখানেও কথা বলি, অন্যায় বলি, মিথ্যা বলি। আবু বকর (রা.) মাঝে মাঝে জিহ্বাটাকে ধরে টানতেন আর বলতেন, এই জিহ্বা আমাকে কত অঘটনে ফেলেছে! কত বেকায়দায়ই না পড়েছি আমি এই জিহ্বার দ্বারা! এই জিহ্বার গুরুত্ব মানুষের জীবনে অনেক বেশি। এর দ্বারা টাট্টা, বিদ্রুপ, উপহাস, পরচর্চা, গিবত, মিথ্যা বলা, অশ্লীল উচ্চারণ এসব কথা থেকে ইসলাম নিষেধ করেছে। এই অঙ্গটিকে এমন কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না যাতে অন্য কষ্ট পায়। ভালো কথা, আল্লাহকে স্মরণ তথা জিকিরের মাধ্যমে জিহ্বাকে সজীব রাখতে হবে। এই অঙ্গটি আল্লাহর বিশেষ নেয়ামতও বটে। যাদের বাকশক্তি নেই তারা বুঝেন এর কদর কত বেশি। আমরা এই জিহ্বাকে যত অপাত্রে ব্যবহার করবো ততই এই নেয়ামতের অবমূল্যায়ন হবে। ইসলামি দার্শনিক ইমাম গাজালি (রহ.) বলেছেন, ‘জিহ্বা একটি গোশতের টুকরা। এটা আল্লাহর অনেক বড় নেয়ামত। তবে এর দ্বারা পাপকর্মও সবচেয়ে বেশি হয় এবং এর শাস্তিও সবচেয়ে বেশি।’ শেখ সাদী (রহ.) বলেছেন, ‘যতক্ষণ কেউ মুখ খুলবে না ততক্ষণ তার দোষ-গুণ প্রকাশ পায় না।’ অন্যান্য প্রাণী থেকে মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব কথা বলতে পারার কারণে। পার্থিব যত উন্নতি-অগ্রগতি সবকিছুর সঙ্গে ভাষার যোগসূত্র রয়েছে। এ জন্য কথা বলার শক্তি যেমন অনেক বড় স্বাধীনতা, তেমনি এটা একটি মহান দায়িত্বও বটে। যিনি তার জিহ্বার সুপ্রয়োগ করেন ইসলামের চোখে তিনি মহান ব্যক্তি। ভালো কথাকে হাদিসে ‘সদকা’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তাই প্রত্যেক মুসলমানের উচিত জিহ্বাকে অপব্যবহার থেকে রক্ষা করা।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়