Friday, January 15

বিশ্বের অপরূপ সৌন্দর্যের ১০ নদী

ফিচার ডেস্ক, কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক:

নদী’ শব্দটিই মনে মধ্যে এক ধরনের শিহরণ তৈরি করে। নদীর সাথে মানুষের জীবনেরও রয়েছে অনন্য মিল। দুটোই বয়ে চলে, বাঁক নেয়, মোড় নেয়। নদী দেখার জন্য পাগলপাড়া নয় এমন মানুষও হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। আর সে নদীগুলো যদি হয় বিশ্বের সবচেয়ে নান্দনিক সৌন্দর্যের নদী তবে তো কোনো কথাই নেই। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে রয়েছে এমন অসাধারণ সৌন্দর্যের সব নদী। 

১. কেনাই নদী: যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যের কেনাইতে অবস্থিত অপরূপ এই নদীটি। ১৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই নদীটির উৎপত্তি কেনাই পর্বতে। দেশটির শাকিয়াক লেক হয়ে সোজা গিয়ে পড়েছে প্রশান্ত মহাসাগরে। নদীটির প্রধান আকর্ষণ স্যামন মাছ ধরা। একেকটি স্যামনের ওজন হতে পারে ৪৪ কেজি পর্যন্ত। 
কেনাই নদী
২. ইরাওয়াদি নদী: মিয়ানমারের ইরাওয়াদি উপত্যকায় অবস্থিত অবস্থিত এই নদীটি দেশটির দীর্ঘতম নদী। মিয়ানমারের বগান শহরটি এই নদীটির তীরেই গড়ে উঠেছে। নদীর দুপাশ দিয়ে চলাচল করে নানা গরু আর মহিষের গাড়ি। চারপাশে আছে অনেক প্যাগোডা। প্রায় ২ হাজার ১৭০ কিলোমিটার ইরাওয়াদি কোচিনের মালি নদী থেকে এর যাত্রা শুরু করে শেষ করেছে আন্দামান সাগরে।
ইরাওয়াদি নদী
৩. রাইন নদী: ইউরোপের দীর্ঘতম ও সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ নদীগুলোর একটি রাইন। এর দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৩২০ কিলোমিটার। প্রতিসেকেন্ডে গড়ে এর মধ্য দিয়ে ২ হাজার ঘনমিটার পানি প্রবাহিত হয়। ইউরোপের ছয়টি দেশ, অস্ট্রিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, লিচেনস্টাইন নেদারল্যান্ডস এবং সুইজারল্যান্ড জুড়ে রয়েছে অসাধারণ সুন্দর এই নদীটি।   
রাইন নদী 
৪. দুয়োরো নদী: আইবেরিয়া পেনিনসুলার অন্যতম প্রধান নদী পর্তুগালের দুয়োরো। ৮৯৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এই নদীটি অসংখ্য পাহাড়বেষ্টিত। পর্তুগালের সোরিয়া প্রদেশে উৎপন্ন হয়ে স্পেন ঘুরে আবার পর্তুগালের শহর পোর্টো এসে শেষ হয়েছে। নদীটির দুই তীর ঘিরে বাস করে প্রায় ১৪ লাখ মানুষ। 
দুয়োরো নদী 
৫. দানিয়ুব নদী: এটি ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী। রাশিয়ার ভলগার পরেই ইউরোপে এর অবস্থান। রোমানিয়া, হাঙেরি, সার্বিয়া, জার্মানি, অস্ট্রিয়া, বুলগেরিয়া, স্লোভাকিয়া, ক্রোয়েশিয়া, ইউক্রেন এবং মালডোভাসহ ইউরোপের অনেক গুরুত্বপূর্ণ শহর অতিক্রম করেছে এই নদীটি। এর দৈর্ঘ্য ২ হাজার ৮৬০ কিলোমিটার।
দানিয়ুব নদী 
৬. নীল নদ: প্রাচীন সভ্যতার দেশ মিশরে অবস্থিত নীল নদ বিশ্বের দীর্ঘতম নদী। এর দৈর্ঘ্য ৬ হাজার ৬৯৫ কিলোমিটার। এর দুটি উপনদী রয়েছে, শ্বেত নীল নদ ও নীলাভ নীল নদ। এর মধ্যে শ্বেত নীল নদ দীর্ঘতর। শ্বেত নীল নদ আফ্রিকার মধ্যভাগের হ্রদ অঞ্চল থেকে উৎপন্ন হয়েছে। প্রাচীন মিশরের প্রায় সমস্ত সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এর তীরেই অবস্থিত। বিশাল ব-দ্বীপ সৃষ্টি করে নীল নদ ভূমধ্যসাগরে গিয়ে মিশেছে।
নীলের সূর্যাস্ত 
৭. ব্রহ্মপুত্র নদ: ব্রহ্মপুত্র নদ এশিয়া মহাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী। এটি হিমালয়ের কৈলাস শৃঙ্গের মানস সরোবর থেকে উৎপন্ন হয়ে তিব্বত ও আসামের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কুড়িগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ময়মনসিংহের দেওয়ানগঞ্জের কাছে ব্রহ্মপুত্র দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বাঁক নিয়ে ভৈরববাজারের দক্ষিণে মেঘনায় গিয়ে পড়েছে। উৎপত্তিস্থল থেকে এর দৈর্ঘ্য ২৮৫০ কিলোমিটার।
ব্রহ্মপুত্র নদ
৮. নেরেতভা নদী: বসনিয়া ও হার্জেগোভিনাতে অবস্থিত এই নদীটিকে ইউরোপের সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন নদী বলা হয়। ২২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই নদীটির ওপর অবস্থিত প্রাচীন স্ট্যারি সেতু। প্রায় সাড়ে চারশো বছরের পুরোনো এই ব্রিজটি। নেরেতভা নদীর ওপর নির্মিত এই সেতু ৪ মিটার প্রশস্ত, ৩০ মিটার দীর্ঘ এবং ২৪ মিটার উঁচু। তবে এই সেতু ১৯৯০ সালে বসনিয়া যুদ্ধের সময় ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। পরে ২০০৪ সালে এটি আগের শৈলীতেই আবার নির্মাণ করা হয়।
নেরেতভা নদী 
৯. ক্যানো ক্রিস্টালস নদী: কলাম্বিয়ার ক্যানো ক্রিস্টালস নামের এই নদীটিকে ‘রিভার অব ফাইভ কালার’ বলা হয়। বছরের জুলাই থেকে নভেম্বরের মধ্যে নদীটির তলদেশ হলুদ, সবুজ, নীল, কালো ও লাল রঙ ধারণ করে। এটি বিশ্বের সুন্দরতম নদীগুলোর মধ্যে একটি। ২০০৯ সালের আগ পর্যন্ত এখানে ফার্ক গেরিলাদের কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় সন্দেহে এখানে ভ্রমণ নিষিদ্ধ ছিল।  
ক্যানো ক্রিস্টালস 
১০. মেকং নদী: উৎপত্তির বিচারে এটি চীনের নদী। কিন্তু আন্তর্জাতিকতার বিচারে এটি ৬টি দেশের নদী। এই দেশগুলো হলো— চীন, মায়ানমার, লাওস, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া এবং ভিয়েতনাম। দৈর্ঘের বিচারে পৃথিবীর ১২তম এবং এশিয়ার ৭ম দীর্ঘ নদী। এর মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৪ হাজার ৩৪০ কিলোমিটার। মেকংয়ের স্রোতধারার দক্ষিণ দিক থেকে ব্যাস্যাক নামক একটি শাখা নদী বের হয়ে ভিয়েতনামে প্রবেশ করেছে। উত্তর দিক দিয়ে মূল মেকং  নদী কিছুটা ঘুরে ভিয়েতনামে প্রবেশ করেছে। আর এই দুই নদীর স্রোত ধারা মিলিত হয়ে তৈরি করেছে মেকং ব-দ্বীপ। উভয় নদী দক্ষিণ চীন সাগরে পতিত হয়েছে।
মেকং নদী 

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়