Thursday, December 4

লাশটি জীবিত !


ঢাকা: ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক নারীকে মৃত ঘোষণা করেছিলেন চিকিৎসকরা। মৃত্যুর ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যুও হয়েছিলো তার নামে। এমনকি মর্গে লাশ নেয়ার জন্য হাসপাতালে এসেছিলেন মর্গের ডোমও। কিন্তু এ কী আশ্চর্য। লাশ দেখি নড়াচড়া করছে? সবাইকে চমকে দিয়ে মৃত ঘোষণা করা ওই নারীটি জেগে ওঠেন। এসময় সেখানে উপস্থিত লোকজন হৈচৈ শুরু করেন। বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ঘটনাটি ঘটে। এ নিয়ে ঢাকা মেডিকেলে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। ২ ডিসেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল অজ্ঞাত ওই নারীকে। তাকে ঢামেকের নতুন ভবনের ৮০২ নং ওয়ার্ডের ৭ নং ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছিল। দুদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করলে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডবয় বেলাল মৃত ঘোষণার কাগজপত্র নিয়ে মর্গ অফিসে যান। মর্গ অফিসের দায়িত্বরত কর্মকর্তা নূরে আলম বাবু মৃত ঘোষণার কাগজপত্র গ্রহণ করে আজিজ নামে এক কর্মীকে মৃত নারীর লাশ আনতে পাঠান। বেলালকে নিয়ে আজিজ লাশ আনতে গেলে লক্ষ্য করেন, মৃত নারীর হাত-পা নড়ছে। এতে পুরো ওয়ার্ডসহ ঢামেকজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। তবে চতুর ওয়ার্ডবয় বেলাল মর্গ অফিসের কর্মী আজিজের কাছ থেকে মৃত ঘোষণার কাগজ কেড়ে নিয়ে চিকিৎসকদের কাছে চলে যান। ঘটনার সত্যতা জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট নারী চিকিৎসক বলেন, ‘আসলে যখন তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছিল, তখন তার হৃদকম্পন বা শারীরিক কোনো সচলতা ছিল না।’ মৃত ঘোষিত নারী দুর্ঘটনার শিকার নাকি অন্য কিছু তা তিনি জানাননি। অপুষ্টির কারণে তার এ দশা হয়েছে বলে তিনি জানান। এরপর রোগী এখনও বেঁচে আছে কিনা জানতে চাইলে ওই নারী চিকিৎসক বলেন, ‘হ্যাঁ সে বেঁচে আছে।’ কথাটি বলেই তিনি ওয়ার্ডবয় বেলালকে স্যালাইন দিতে বলেন। ওই নারীর ভর্তি ফাইলে দেখা গেছে, সেখানে তার ঠিকানা লেখা আছে, প্রযত্নে (কেয়ার/অফ: পরিচালক। কোন পরিচালক প্রশ্ন করা হলে ওয়ার্ডবয় বেলাল জানান, ঢামেক পরিচালকের রেফারেন্সে তাকে ভর্তি করা হয়েছে। এ বিষয়ে ঢামেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ঢামেক জরুরি বিভাগ সংলগ্ন রাস্তায় অবৈধ দোকান উচ্ছেদকালে ২ ডিসেম্বর ওই নারীকে ফুটপাতে পড়ে থাকতে দেখি। তখন লোকজন দিয়ে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা করি। মৃত ঘোষণার পর জেগে ওঠার ব্যাপারে ‍জানতে চাইলে তিনি বলেন, দোষী চিকিৎসককে বিচারের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হবে। এ বিষয়ে ওয়ার্ডের আরেক রোগী দুলালীর (৫০) ভাগিনা মোয়াজ্জেম হোসেন মঞ্জু বলেন, দুপুরে চিকিৎসকরা ওই নারীকে মৃত ঘোষণা করেন। বিকাল ৫টার দিকে মর্গের লোকজন তাকে ভ্যানে ওঠাতে গেলে তিনি নড়েচড়ে ওঠেন। তখন আশপাশের লোকজনই চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন। বর্তমানে ওই নারী সুস্থ আছেন বলে জানা গেছে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়