Saturday, December 13

জিরো পয়েন্ট-ঝিলমিলে হবে দেশের দীর্ঘতম ফ্লাইওভার


ঢাকা : রাজধানীবাসীর স্বাচ্ছন্দ্য যোগাযোগ নিশ্চিত করতে নতুন এক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। দেশের দীর্ঘতম ফ্লাইওভার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাস্তবায়নাধীন পদ্মা সেতুর সঙ্গে ঢাকার সহজ সংযোগ স্থাপন এবং নতুন শহর ঝিলমিলবাসীকে মূল ঢাকার সঙ্গে যুক্ত রাখতে রাজধানীর জিরো পয়েন্ট থেকে রাজউকের ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্প এলাকা পর্যন্ত একটি ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে। ১১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ ফ্লাইওভার প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই, জরিপ, সম্ভাব্য ব্যয় এবং নির্মাণের সময়কাল মোটামুটি ঠিক করে ফেলেছে সরকার। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায়। তবে বিদেশি বিনিয়োগকারী পেলে তাও কাজে লাগাবে সরকার। এ প্রকল্পের সার্বিক বিষয় আলোচনার জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটির সঙ্গে একটি বৈঠক ডেকেছে সরকারের উচ্চ পর্যায়। বৈঠকটি আগামীকাল রবিবার নগর ভবনে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) মনে করে এ ফ্লাইওভারটি নির্মিত হলে পদ্মা সেতুর সঙ্গে সংযোগ প্রক্রিয়া অত্যন্ত সহজ হবে। কেননা পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের পর ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে যান চলাচল বেড়ে যাবে, এসব যানবাহনের ঢাকায় প্রবেশ সহজ হবে ওই ফ্লাইওভার দিয়ে। আর তাছাড়া সার্বিকভাবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এবং ঢাকার পাশে কেরানীগঞ্জ, দোহার ও নবাবগঞ্জের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ সহজ হবে। ঢাকার অদূরে দোহার অঞ্চলে পদ্মাপাড়ের আশপাশে একটি আন্তর্জাতিক মানের কনভেনশন সেন্টার তৈরির চিন্তাও করছে সরকার। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ইতোমধ্যে সম্ভাব্য স্থানও পরিদর্শন করেছেন একাধিকবার। ওই কনভেনশন সেন্টার হলে যেসব বড় অনুষ্ঠান বা সম্মেলন হবে, তার অতিথি বা অংশগ্রহণকারীরাও এ ফ্লাইওভার ব্যবহার করে খুব সহজেই ঢাকা থেকে সম্মেলন কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারবেন; যা পদ্মাপাড়বাসীকে আধুনিক সুবিধার আওতায় নিয়ে আসবে বলে মনে করে সরকার। পুরান ঢাকার ঘনবসতিপূর্ণ মানুষকে এবং বুড়িগঙ্গা নদীর অন্য পাড়কে আধুনিক ঢাকার উন্নয়নের ছোঁয়া দিতে এ ফ্লাইওভার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করে রাজউক। প্রাথমিক প্রতিবেদনও সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদনে প্রস্তাবিত ফ্লাইওভারটির খসড়া রুট চিহ্নিত করা হয়েছে রাজধানীর জিপিওসংলগ্ন জিরো পয়েন্ট থেকে গুলিস্তান হয়ে পুরান ঢাকার বাবুবাজারের বুড়িগঙ্গা সেতুর পাশ দিয়ে ঢাকা-মাওয়া হাইওয়ে হয়ে ঝিলমিল প্রকল্পের দ্বারপ্রান্ত পর্যন্ত। শিগগিরই এর চূড়ান্ত নকশা তৈরির কাজ শুরু হবে বলেও জানা গেছে। পাশাপাশি বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের যুক্ত করতে রাজউকের পক্ষ থেকে বিভিন্ন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে দৈনিক পত্রিকায়ও এ-সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। জানা গেছে, রাজউকের করা সমীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পিপিপি সেল এ নিয়ে কাজ করছে। এ ফ্লাইওভারটি নির্মাণের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে আড়াই হাজার কোটি টাকা। সরকারের নিজস্ব তহবিল এবং বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের সমন্বয়ে এই অর্থের যোগান দেওয়া হবে। তবে বিদেশি বিনিয়োগকারী পেলে তাও কাজে লাগাতে চায় সরকার। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পিপিপি সেল থেকে রাজউককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কীভাবে এর কাজ দ্রুত শুরু করা যায় তা খতিয়ে দেখার জন্য। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্র জানায়, প্রকল্পটির জন্য বিনিয়োগকারী চূড়ান্ত হলে রাজউক শিগগিরই ফ্লাইওভারটির নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু করবে। পিপিপি সেল থেকে বিনিয়োগ প্রস্তাব চেয়ে ইতোমধ্যে ইআইও (এক্সপ্রেশন অফ ইন্টারেস্ট অফার) আহ্বান করা হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ইআইও পাওয়ার পর পরবর্তী ধাপে দরপত্র আহ্বান করা হবে। এখন পর্যন্ত দু-একটি বিদেশি কোম্পানিও বিনিয়োগ প্রস্তাব দিয়েছে। তাদের ওই প্রস্তাব যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে বলেও জানা গেছে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়