মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান
* হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি মানুষের কাছ থেকে ভিক্ষা করে, নিশ্চয়ই সে অগি্নস্ফুলিঙ্গ ভিক্ষা করে।
* রাসূল (সা.) বলেছেন, ভিক্ষুক আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত।
* আবদুল্লাহ বিন ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল (সা.) বলেছেন, যে মানুষ মানুষের কাছে ভিক্ষা করে, সে এমন অবস্থায় বিচারের দিন উপস্থিত হবে যে, তার মুখে কোনো মাংসই থাকবে না।
* হজরত জাবের (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, বেহেশত ভিন্ন অন্য কোনো কিছুই আল্লাহর ওয়াস্তে বলে ভিক্ষা করা উচিত নয়।
* হজরত উমর (রা.) এর মতে, সন্দেহজনক জীবিকা ভিক্ষাবৃত্তি অপেক্ষা পছন্দনীয়। ভিক্ষাবৃত্তি যে কোনো বৃত্তি নয়, বিশ্বনবী কর্তৃক সংঘটিত একটি ঘটনাই তার প্রমাণ বহন করে যা অনেকেরই জানা।
* এক ব্যক্তি তাঁর কাছে ভিক্ষা চাইতে এলে তিনি তাকে কাজ করে খেতে উপদেশ দেন। তিনি তার কম্বল বিক্রি করে সে অর্থের অর্ধেক দিয়ে সে দিনের খাবার ও বাকি অর্ধেকে কুঠার কিনে দিয়ে কাঠ কেটে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতে উদ্বুদ্ধ করেন। ভিক্ষাবৃত্তি ইসলাম সমর্থিত হলে তিনি তাকে কাজ করার উপযোগী না করে ভিক্ষা বৃত্তিতেই নিয়োজিত করতেন। ভিক্ষাবৃত্তিতে অন্যের কাছে অর্থনৈতিক সাহায্য বা খাবারের জন্য হাত পাতা হয়। রাসূল (সা.) তা কীভাবে পছন্দ করতে পারেন, যিনি নাকি সামান্য ব্যাপারেও পরনির্ভরশীলতাকে ঘৃণা করতেন?
* উষ্ট্রপৃষ্ঠে উপবিষ্টকালীন তাঁর হাতের লাঠিটি পড়ে গেলে হজরত আবু বকর (রা.) নিজে উট থেকে নেমে তা কুড়িয়ে দিতেন। তাঁকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, আমার প্রিয় নবী (সা.) অন্য কোনো আদম সন্তান থেকে কিছু প্রার্থনা করা পছন্দ করতেন না। হজরত আবু বকর (রা.) স্বেচ্ছায় রাসূলে মকবুল (সা.) এর জন্য তাঁর হয়ে কাজ করে দিতেন। এ ধরনের কাজ হাদিয়া বা স্বেচ্ছাসেবার পর্যায়ে পড়ে, যা ইসলামী আইনে বৈধ। হজরত আবু বকর (রা.) থেকেও অনুরূপ বর্ণনা পাওয়া যায়।
* তিনি বলেন, রাসূল (সা.) আমার জন্য দোয়া করলেন এবং এর জন্য একটি শর্ত আরোপ করলেন, তুমি মানুষের কাছ থেকে ভিক্ষা করতে পারবে না। আমি সম্মত হলাম। তিনি বললেন, তোমার হাতের লাঠিটি যদি পড়ে যায় তা-ও না, তুমি উঁচু থেকে নেমে আসবে এবং তা উঠিয়ে নেবে।
* ভিক্ষাবৃত্তি সম্পর্কে সাধকশ্রেষ্ঠ আইনবেত্তা ও গবেষক ইমাম আবু আহমদ আল গাজ্জালিও কঠোর মনোভাব ব্যক্ত করেছেন। তিনি ভিক্ষাবৃত্তিকে হারাম মনে করেছেন। তিনি বলতেন, ভিক্ষাবৃত্তি সব ঘৃণ্য বস্তু অপেক্ষা অধিকতর এবং জঘন্যরূপে ঘৃণ্য। তিনি এজন্য তিনটি কারণ উল্লেখ করেছেন।
ভিক্ষার সীমারেখা
* রাসূল (সা.) বলেছেন, তিনটি কারণে ভিক্ষা করা যেতে পারে। এ তিনটি কারণ ব্যতীত ভিক্ষা করা হারাম। কাবিসা বিন মাখরেক (রা.) বর্ণনা করেছেন। রাসূল (সা.) বলেছেন, ওহে কাবিসা, নিশ্চয়ই ভিক্ষা করা তিনটি কারণ ব্যতীত হালাল নয়। (ক) যদি কোনো ব্যক্তি ঋণের জামিন হয় এবং ঋণ গ্রহীতা ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয় তবে সে ঋণ পরিশোধ করার জন্য ভিক্ষা করা হালাল যে পর্যন্ত না জামিনের পরিমাণ অর্থ পাওয়া যায়। তারপরই সে ভিক্ষা থেকে নিবৃত্ত হবে।
* যদি আকস্মিক দুর্ঘটনায় কোনো ব্যক্তির সম্পদ ধ্বংস হয়ে যায় তাহলে জীবিকা না পাওয়া পর্যন্ত অথবা রাসূল (সা.) বলেছেন, জীবিকার অবলম্বন না পাওয়া পর্যন্ত ভিক্ষা করা হালাল।
* যদি কোনো ব্যক্তি কল্পনাতীত অভাবে পতিত হয় যে পর্যন্ত না তার সমাজ থেকে তিনজন সুবিবেচক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলেন, এ ব্যক্তি এরূপ অবিশ্বাস্য দারিদ্র্যে নিপতিত (যে দারিদ্র্যে ভিক্ষা ভিন্ন জীবিকার উপায় নেই) যে ভিক্ষা করতে পারে। এ অবস্থায় ভিক্ষা করা হালাল যে পর্যন্ত না সে জীবিকার সন্ধান করতে পারে। ওহে কাবিসা, এছাড়া যে কোনো কারণে ভিক্ষা হারাম এবং ভিক্ষা গ্রহণকারী হারাম অন্নই গ্রহণ করে।
Sunday, November 23
এ সম্পর্কিত আরও খবর
জুমার দিন যে দোয়া পাঠে ৮০ বছরের গুনাহ মাফ হয়ইসলামে জুমার দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত। এই দিনে এমন কিছু সময় আছে যখন আল্লাহ তার বান্দা
জেনে নিন নেটওয়ার্কিং এর আদ্যোপান্ত বর্তমান পৃথিবীতে যে পেশাগুলো মানুষের পছন্দের তালিকার শীর্ষস্থান দখল করে রয়েছে সেগুলোর মধ্যে নেট
শিশুদেরকে মসজিদে নেওয়া যাবে কি? ইসলামে ইমানের পর নামাজ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ৮২ বার সরাসরি না
জুমার নামাজ না পড়লে যেসব শাস্তি পেতে হবে একজন মুসলমান হওয়ার প্রধান শর্ত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা। আর একজন মুসলমান ও কাফেরের মধ্যে পা
হযরত তালহা (রাঃ) কথা শুনে আল্লাহর রাসুল(সা.) দরদর করে কেঁদে ফেলেন!হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী::হযরত তালহা (রাঃ) প্রতিদিন নবীজীর পেছনে ফজরের নামাজ পড়েন। কিন্তু নামাজে স
যে কারণে আল্লাহ জান্নাত দেওয়া ছাড়া সন্তুষ্ট হবেন না নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত ইত্যাদি ফরজ ইবাদতগুলোকেই কেবল ফজিলতপূর্ণ মনে করা হয়। অথচ হাদিস শরিফে ম
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়