ফরহাদ হোসেন, ভোলা: ভোলা-৩ আসনের বিএনপিতে কমিটি গঠন করাকে কেন্দ্র করে অভ্যন্তরীল কোন্দল প্রকাশ্য রূপ নিয়ে ব্যাপক হারে ফাটল দেখা দিয়েছে। প্রকৃত বিএনপির ত্যাগী নেতা কর্মীদের সঠিক ভাবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে। যার ফলে ইমেজ হারাচ্ছে এই আসনের বিএনপির নেতাকর্মী ও অঙ্গ সংগঠন। নিজেদের ঘরে বিভেদ থাকার কারণে ফায়দা লুটে নিচ্ছে বিরোধী শিবির। এই নিয়ে সাধারণ নেতা কর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, আষি দশকের পর থেকে ভোলা-৩ (লালমোহন- তজুমদ্দিন) আসনটিতে একটানা ৬ বার নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী মেজর (অবঃ) হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ। তখন থেকে এই আসনটি বিএনপির র্দুঘ হিসেবে পরিচিত থাকলেও ১/১১ পর থেকে নিজেদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকাশ্য রূপ নিয়ে ব্যাপক হারে ফাটল দেখা দিয়েছে। দলীয় আধিপত্য বিস্তার করাকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীরা বিভক্ত হয়েছেন কয়েক ভাগে। এখানকার বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীরা বিভিন্ন সময় মামলাও হামলার শিকার হয়েছেন। এখনো মামলায় ঝুলেরয়েছেন ও এলাকায় আসতে পাছেন না সেই সকল নেতা কর্মীদের এখানকার বিএনপি কোন ভাবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। এই কারণে এই খানে পালন করা হচ্ছেনা কেন্দ্রীয় ঘোষিত কোন নির্দেশ ও কর্মসূচী। এসকল বিষয়ে চাপা ক্ষোভ নিয়ে কয়েক দফায় কয়েক শত নেতা কর্মী বিরোধী দলে যোগ দিয়েছেন। এখনো কিছু যোগ দেওয়ার জন্য উৎ পেতে রয়েছেন। এই ভাবে চলতে থাকলে এক সময় এই অসনে বিএনপির কোন চিহ্ন থাকবেনা বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এখানকার সুবিধা বঞ্চিত একধিক বিএনপির নেতা কর্মীরা।
নাম প্রকাশ না করার সত্ত্বে একধিক নেতা কর্মী জানান, লালমোহন ও তজমদ্দিনে যারা প্রকৃত বিএনপির ত্যাগী নেতা কর্মী ও বিভিন্ন সময় মামলাও হামলার শিকার হয়েছে এখনো যারা মামলায় ঝুলে রয়েছেন সেই সকল নেতা কর্মীদের উপজেলা কমিটি থেকে কোন ভাবে মূল্যায়ন করছে না। উপজেলা ও ইউনিয়ন কমিটিতে থাকা নেতারা নিজেদের প্রভাব বিস্তারের জন্য যে কোন কমিটিতে তাদের আত্মীয়দের সবছে বেশি মূল্যায়ন করা হচ্ছে। তাছাড়া এই খানে টাকা হলেই যোগ্যতা ছাড়াই উপজেলা ও ইউনিয়ন বিএনপিতে যে কোন স্থানে পদ পাওয়া যায়। তারা আরো জানান, শহীদ জিয়ার আদর্শে উজ্জীবিত অনেক সমর্থক ও কর্মী দল থেকে অনেকটাই দুরে সরে যাচ্ছেন। বিএনপির ৯১ সালের যে সকল ত্যাগী নেতা কর্মীরা দলের জন্য ছিল নিবেদিত প্রাণ, তারাই এখন বর্তমান বিএনপির নেতা ও নির্ধারকদের আচরণে ক্ষিপ্ত হয়ে আলাদা রয়েছে। এরই ফলে দুর্বল হয়ে পরেছে লালমোহন ও তজুমদ্দিনে উপজেলার বিএনপি। এইভাবে চলতে থাকলে সামনের রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে শীতল হয়ে যাবে বলে মনে করছেন বিএনপির ত্যাগী কর্মীরা। এই দুটি উপজেলা বিএনপির নেতৃত ও কতৃত্ব একে ভারে ভেঙ্গে পরায় ২০০৮ সাল থেকে এখন পযর্ন্ত কেন্দ্রী ঘোষিত কোন হরতাল ও বিভিন্ন কর্মচূসী এখনো পালন করা হয়নি। লালমোহন উপজেলা বিএনপির কমিটি করাকে কেন্দ্র করে পদ পাওয়া ও বঞ্চিতদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়ে দলের যে ফাটল ধরেছে তা আদৌ মিমাংসিত না হওয়ায় যেমন বিরোধ রয়েছে তেমনি রয়েছে হিংসান্তক মনোভাব। তার কারনে প্রকৃত এই খানকার বিএনপির নেতা কর্মীরা চাপা ক্ষোভ নিয়ে দিন দিন মুখ ফিরেয়ে নিচ্ছেন। আপর দিকে লালমোহন উপজেলা ছাত্রদল, পৌর ছাত্রদল ও সকল ইউনিয়নের ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এসকল অধিকাংশ কমিটিতে যারা প্রকৃত ছাত্র নয় তাদেরকে দিয়ে কমিটি করা হয়েছে। এই নিয়েও চাপা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে। পশ্চিম চর উমেদ, চরভূতা, কালমা ও লালমোহন সদর ইউনিয়ন সহ অধিকাংশ ইউনিয়ন কমিটিতে প্রকৃত ছাত্রদেরকে মূল্যান করা হয়নি। আবার কিছু কিছু কমিটিতে জুনিয়রদের দেওয়া হয়েছে সিনিয়রদের পদ। আবার এ সকল কমিটিতেও নিজেদের ক্ষমতা বিস্তারের জন্য আত্মীয় করণ ও টাকার বিনিময় অযোগ্যদের পদ দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এই নিয়ে ছাত্রদলের মধ্যে ও রয়েছে নিজেদে বিরোধ। এই ভাবে চলতে থাকলে এক সময় এই অসনে বিএনপির কোন চিহ্ন থাকবেনা বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সুবিধা বঞ্চিত একধিক নেতা কর্মীরা। এই সকল বিরোধ পূর্ণ মনোভাব পরিহার করে দলের স্বার্থে এক হয়ে কাজ করতে সকলকে আন্তরিকভাবে দেখতে চায় এ দুটি উপজেলার বিএনপির ত্যাগী নেতা কর্মী ও সমর্থকরা। এ ব্যাপারে লালমোহন উপজেলা বিএনপির সভাপতি এনায়েত কবীরের সাথে তার ব্যাবহিত মোবাইল ফোনে একধিক বার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়