Monday, August 19

নো ডায়লগ নো কেয়ারটেকার মনোভাবে আওয়ামী লীগ

ঢাকা : আগামী নির্বাচন সামনে রেখে পয়েন্ট অফ নো রিটার্নে এখন আওয়ামী লীগ। বিরোধী দলকে আর কোনো ছাড় দেয়ার কথাই চিন্তা করছে না দলটি। ক্ষমতাসীন দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী তার সর্বশেষ অবস্থান অত্যন্ত স্বছ ভাবে তুলে ধরেছেন তার সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলনে। দলের নীতি নির্ধারনী সভা সহ দলের বিভিন্ন ফোরামে প্রধানমন্ত্রী প্রতিনিয়ত তার এই অবস্থান তুলে ধরেছেন। দলের তৃণ মূল পর্যায়েও সাধারণ মানুষের কাছে এই ম্যাসেজ পৌছে দিচ্ছেন।

সুত্রমতে প্রধানমন্ত্রী এখন সংবিধানকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন। কারণ হিসেবে জানা গেছে, খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল, সিলেট, গাজীপুর  সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা আক্ষরিক অর্থেই ভেঙ্গে পড়েছিল।

পাঁচটি সিটি নির্বাচনে পরাজয় হতে পারে এমন চিন্তা দলের সভানেত্রির হিসাবের বাইরে ছিলো। নিজস্ব সোর্স, সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা এমন কি দলের সোর্স দিয়ে প্রধানমন্ত্রী পরবর্তীতে নিশ্চিত হন, অভ্যান্তরীর কোন্দলের কারনেই দল বিজয় অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে।

সূত্রগুলো প্রধানমন্ত্রীকে নিশ্চিত করেছে, দল ও সরকারের মধ্যে কোন সমন্বয় নেই। মন্ত্রী এমপি ও মেয়ররা নিজ নিজ স্রোতে চলেছেন। দলের সাধারণ নেতা-কর্মীদের সাথে বিস্তর দূরত্ব। প্রধানমন্ত্রী ধরেই নিয়েছেন, আগামী নির্বাচনে তার এমপি ও মন্ত্রীদের অনেকেই ধরাশায়ী হবেন। যদি এসব জায়গায় প্রার্থী বদল করা যায় তবে পরাজয়ের সংখ্যা অনেক কমে আসবে। সে লক্ষ্যে দলটি ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। 

অন্যদিকে  গোলাম আজমের যাবত জীবন কারাদন্ড হলে সাধারণ মানুষের মধ্যে তিব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তরুণ সমাজও এসব চিহ্নিত রাজাকারদের ফাঁসি চায়। প্রধানমন্ত্রী তারুণ্য ও সাধারণ মানুষের আবেগ স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হিসাবে আওয়ামী লীগের প্রাপ্য এটা গভীর ভাবে বিশ্বাস করেন।

জামায়াত শিবিরের ধারাবাহিক সন্ত্রাসী কার্যক্রম, ঈদের পর পরই হরতাল এবং সর্বশেষ ১৫ আগস্ট বেগম জিয়ার জন্মদিনে অনুষ্ঠান পালনে আওয়ামী লীগ নতুন ভাবে উজ্জীবিত।

বিশেষ করে ঈদ পরবর্তী হরতাল ও ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালনে বিএনপির বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের নেতিবাচক ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগত ভাবে দারুন ভাবে সন্তুষ্ট।

প্রধানমন্ত্রীর এই সন্তোষ প্রকাশ পেয়েছে তার ছেলে ও আইটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের এক ফেসবুক স্টাটাসেও। সোমবার সকালে নিজের অফিসিয়াল ফেইসবুকে দেয়া এক পোস্টে প্রধানমন্ত্রী পুত্র জয় বিরোধী দলের সঙ্গে কোনো আলোচনা ফলপ্রসূ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন।

জয় বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাটি আমাদের সুপ্রিম কোর্ট থেকে অসাংবিধানিক ঘোষিত হয়েছে। আমাদের সংবিধানের মুখবন্ধে বলা হয়েছে বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র যা “নির্বাচিত” জনপ্রতিনিধিদের শাসনাধীন। যার অর্থ হলো যেকোনো “অনির্বাচিত” সরকার অসাংবিধানিক। অনেক মাস আগে থেকেই আমরা বিরোধীদলের কাছে “নির্বাচিত” অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে সমঝোতা প্রস্তাব দিয়ে রেখেছি।’

আন্দোলনের হুমিকি দিলেও শেষ পর্যন্ত বিরোধী দল আগামী জাতীয় নির্বাচনে আসবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যাই হোক না কেন শেষ পর্যন্ত তারা নির্বাচনে আসবে। 

জয়ের এই বক্তব্য থেকেও উঠে এসেছে আওয়ামী লীগের নো ডায়লগ, নো কেয়ারটেকার মনোভাবের বিষয়টিও।

এব্যাপারে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন ডিনিউজকে বলেছেন, আমরা জাতির জনককে হারিয়েছি। ২১ আগস্ট অল্পের জন্য প্রধানমন্ত্রী বেঁচে গিয়েছেন। কিন্তু আইভিকে হারিয়েছি। খুনীদের পৃষ্ঠপোষক বিএনপির সাথে আর কম্প্রোমাইজ নয়। ১৫ আগস্ট বেগম জিয়া তার ভুয়া জন্মদিন পালন করে তার অবস্থান তুলে ধরেছেন। আহমেদ হোসেন বলেন, গণতান্ত্রিক বিশ্বে যেভাবে সংসদ নির্বাচন হয় এ দেশের নির্বাচনও সেভাবেই হবে।

তবে আওয়ামী লীগের নো ডায়লগ, নো কেয়ারটেকার মনোভাবের সমালোচনা করে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম ডিনিউজকে বলেছেন, ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। ক্ষমতার দম্ভে প্রধানমন্ত্রী যা বলেছেন তা কাম্য নয়। দেশকে প্রধানমন্ত্রী বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন বলে মন্তব্য করে সর্বনাশা পথ থেকে ফিরে এসে তত্বাবধায়ক সরকার মেনে নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি দাবি জানান আজম।-----শাহীন রহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট,ডিনিউজ

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়