Thursday, June 6

উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারে পরিবহন ব্যবস্থা দ্রুততর করতে হবে: হুয়াওয়ের প্রতিবেদন

ঢাকা : ২০২৫ সালের মধ্যে জনসাধারণের জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে ব্যপক ইতিবাচক উন্নয়ণ সাধন করা হবে। উন্নততর প্রযুক্তি ব্যবস্থার কারণে পরিবহন ব্যবস্থা হবে দ্রুততর, নিরাপদ এবং সুলভ। ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের 'কানেকটেড ওয়ার্ল্ড : ট্রান্সফরমিং ট্রাভেল, ট্রান্সপোর্টেসন অ্যান্ড সাপ্লাই চেইন' শীর্ষক গবেষণায় এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উন্মোচিত হয়েছে।

ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম, ওডি অ্যান্ড বোস্টন, কনসাল্টিং গ্রুপ ও হুয়াওয়ে এর সম্মিলিত প্রতিবেদনে বলা হয়, এই লক্ষ্য পূরণে কেন্দ্র ও স্থানীয় সরকারের পক্ষ থেকে একাধিক অংশীদারিত্বের প্রয়োজন হবে।

গাড়ি নির্মানকারী প্রতিষ্ঠান, পাবলিক ট্রান্সপোর্ট অপারেটর, সার্বিক সহায়তাদানকারী কোম্পানি, আইসিটি এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান উন্নতর সহযোগিতার লক্ষ্যে প্রয়োজন হুয়াওয়ের ডেপুটি চেয়ারম্যান কেন হু বলেন, ‘ একবার কমিউনিকেশন টেকনোলজি সিস্টেমে পরিবহণ সম্পর্কিত সবধরনের তথ্য সরবরাহ নিশ্চিত করার পর বাস্তব প্রয়োগ শুরু করা যাবে।

তখন যাতায়াত ব্যবস্থা আরও বেশি সুবিধাজনক, নিয়ন্ত্রণযোগ্য এবং সুলভ হয়ে উঠবে।

ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের মোবিলিটি ইন্ড্রাস্টিজের পরিচালক জন মোভানজাদেহ এই প্রতিবেদন থেকে প্রাপ্ত চারটি গুরুত্বপূর্ণ সমাধানের ওপর আলোকপাত করে বলেন, প্রতিটি সমাধানই বৈশ্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে সক্ষম, যা আমাদের প্রাত্যাহিক জীবনের উন্নয়ণ নিশ্চিত করবে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, প্রতিটি সমাধানই প্রয়োগ ও অর্জনযোগ্য। প্রযুক্তিও সহজলভ্য। এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে এই প্রকল্পের যথাযোগ্য সমন্বয় করা।

যানবাহনে স্মার্ট ডিভাইসের ব্যবহার ওয়ারলেস সংযোগের কারণে সরাসরি সড়ক সংলগ্ন পরিকাঠামো জানাতে পারবে । এই প্রযুক্তি চালকের মোবাইলে রাজপথের তাতক্ষণিক পরিস্থিতি, আগাম সতর্কতা ও সমস্যাগুলো জানিয়ে দেবে।

এমনকি যাত্রীদের বিকল্প পথ ব্যবহারের তথ্যও দেয়া হবে। মোবাইল ডিভাইসে সরবরাহকৃত এইসব তথ্য যাত্রীদের সময় বাঁচাবে এবং ভ্রমন পরিকল্পনাকেও বাঁধাগ্রস্ত করবে না।

এই প্রযুক্তি পারস্পরিক যোগাযোগসামর্থ্য ও বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন। প্রযুক্তিটি যাত্রাব্যহত হওয়া যাত্রীদের কিংবা পরিকল্পনা পরিবর্তনকারীদের জন্য স্বযংক্রিযভাবে পুনরায় বুকিং টিকিট বা পুনরায ব্যবসায়িক শিডিউল পরিবর্তন করে দেবে।

সবমিলিয়ে, সার্বিকভাবে এমন একটি যাত্রা ব্যবস্থা প্রতিস্থাপিত হবে যেটি পরিস্থিতি ও প্রয়োজন মাফিক পরিবর্তিত করে নেয়া সম¢বপর। একইসঙ্গে নানাবিধ বাহনের উন্নতর ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস নিঃসরণ কমিয়ে আনার ক্ষেত্রেও এই প্রযুক্তি ভুমিকা রাখবে।

প্রতিদিনই বিশ্বের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৫ সাল নাগাদ এই সংখ্যা আরও ১০০ কোটি বাড়বে। এই প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে পরিবহন ব্যবস্থার ওপর চাপ কমে আসবে লক্ষ্যযোগ্যভাবে।
ভবিষ্যত সুফলের আগাম প্রমাণ চীনের ল্যাংফ্যাং শহরে প্রতিদিন প্রায় ১০ লাখ গাড়ি যাতায়াত করে।

ফলে শহরটিতে যানজট নিয়মিত দৃশ্য। এ অবস্থার পরিবর্তন আনতে ল্যাংফ্যাং ট্রাফিক ও হুয়ায়েই এক যোগে আইসিটি প্রযুক্তি সমাধান ব্যবহার করেছে। এতে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ, যান প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ ও ট্রাফিক নির্দেশিকা দেয়া রয়েছে একইসঙ্গে ভিডিও সার্ভেলিয়ান্স ক্যামেরার মাধ্যমে এই গোটা প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।

এক মাস এই প্রযুক্তি ব্যবহারের পর সকাল ও সন্ধ্যায় যানজট ঘণ্টায় ৩০ শতাংশ কমে এসেছে। একই সঙ্গে ট্রাফিক আইনভঙ্গ করা ও দূর্ঘটনা প্রবণতাই অনেক কমে এসেছে। গোটা শহরেই যাতাযাত ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে।

হুয়াওয়ে বিশ্বাস করে ল্যাংফ্যাং শহরে তথ্যপ্রযুক্তির উপযুক্ত ব্যবহারই যাতায়াত ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ উন্নতি ঘটিয়েছে। এ ধরণের একটি সমাধান ব্যবহারের খরচ প্রতিদিন ট্রাফিক ব্যবস্থায় ব্যয়কৃত খরচের তুলনায় একেবারেই সামান্য।

প্রস্তাবিত চারটি সমাধান, এদের প্রত্যেকটি সামাজিক ও আর্থিক সুফল বয়ে আনবে
* এই প্রযুক্তির ফলে বাহনের ধরণের ওপর নির্ভর করে এক টিকেটেই যাত্রীরা যাতায়াত করতে পারবে।এবং রুট পরিবর্তন ও যাত্রা সক্রান্ত নানা ধরনের উপদেশও পাবে।

* কনডিসন্ড বেইজড মেগাসিটি ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সামগ্রিক যানবাহন অচলাবস্থার নিরসন ঘটিয়ে ভ্রমন অবকাঠামোকে স্বতন্ত্র ও পরিবেশবান্ধব করে তুলবে।

* সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায় চেক-ইন, নিরাপত্তা, সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রন, স্মার্ট ভিসা, বায়োমেট্রিক সণাক্তকরণসহ যাত্রাকালে ঝুঁকির মাত্রা পর্যন্ত বিভাজন করা হবে। এই ব্যবস্থায়, বডি স্ক্যানার, ইলেক্ট্রনিক ভিসা পদ্ধতিও যাচাই করা করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।

* আরএফআইডি [ রেডিও-ফিকোয়েন্সি আইডিয়েনটিফিকেশন ] ব্যবহার করে ট্রাকিং ও স্বচ্ছ সহযোগিতাপরায়ণ সঞ্চালনার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট পণ্যের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়