Friday, December 21

:: পরিবারের কান্না এখনও থামছে না ::

নিজস্ব প্রতিবেদক:
কানাইঘাট পৌরসভার শিবনগর গ্রামের মৃত ফয়জুল হকের বাড়ীতে এখনও শোকের সাগরে ভাসছে। এই বাড়ীর দরিদ্র ও সহজ সরল লোক আব্দুল মালিকের নৃশংস হত্যাকান্ড মেনে নিতে পারছে না তার পরিবার, স্বজন ও গ্রামের মানুষ। তাদের একটাই দাবী হত্যাকারীদের যেন বিচার হয়। আর কাউকে যেন এমন নিষ্ঠুরভাবে জীবন দিতে না হয়। বৃহস্পতিবার নিহত মালিকের বাড়ীতে গেলে গ্রামের শত শত মানুষ ছুঁটে আসেন এবং তারা মালিক হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেন। এসময় মালিক হত্যাকান্ডের বর্ণনা দিতে গিয়ে তার স্বজনরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। নিহত আব্দুল মালিকের মা আমিরুন নেছা বার বার মূর্ছা যাচ্ছিলেন এবং বিলাপ করতে থাকেন আমার মালিককে এনে দাও, কে আমার মুখে অন্ন দিবে, ঔষধ দিবে। এলাকাবাসীর সাথে আলাপ করে জানা যায়, নিহত আব্দুল মালিক নিরীহ ও শান্ত স্বভাবের দিনমজুর ছিল। সে মানুষের বাড়ীতে কাজ কর্ম ও গরু মহিষ চরিয়ে সংসার চালাতো। এখন তার মা, স্ত্রী-সন্তানেরা অনাহারে-অর্ধাহারে জীবন যাপন করছে। নিহত আব্দুল মালিকের ভাই ও মালিক হত্যাকান্ডের বাদী আব্দুন নুর বলেন, ৪ নভেম্বর তাদের বাড়ী থেকে প্রায় দু’মাইল পশ্চিমে হাওরের মধ্যে মহিষের বাতানে মহিষ পাহারায় ছিল তার ছোট ভাই আব্দুল হাসিম ও ভাতিজা মালিকের ছেলে দেলোওয়ার। রাত অনুমান সাড়ে ১২টার দিকে তাদের বাড়ীর পাশে মেধার খালের মুখে বেশ কিছু লোকের সুরগোল ও টর্চ লাইটের আলো দেখে ভাই হাসিম ছুঁটে আসে। মেধার খালের পাড়ে হিজল গাছের কাছে আসামাত্র একই গ্রামের প্রতিবেশি মৃত সামছুল হকের পুত্র হোসেন আহমদ (২২), নুরুল হকের পুত্র আলমাছ (২২), মৃত ছিদ্দেক আলীর পুত্র জয়নাল (৩৫), সফিকুল হকের পুত্র আবুল হোসেন (২৫) গংরা তাকে গালি দিয়ে ডেগার, ছুলফি, দা ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটাতে শুরু করলে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তার সুরচিৎকার শুনে ভাই আব্দুল মালিক রক্ষার জন্য এগিয়ে গেলে তাকেও প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে দা দিয়ে কুপাতে শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা মৃত ভেবে আব্দুল হাসিম ও মালিককে খালের পাড়ে ফেলে চলে যায়। এর কিছুক্ষণ পর অনুমান রাত ১টায় স্থানীয় পৌর কাউন্সিলার মস্তাক আহমদ আমাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলে বলেন, তোমার ভাই হাসিম ও মালিককে মেধার খালের মুখে হুছেন গংরা মেরে ফেলে চলে গেছে। তাদেরকে উদ্ধারের ব্যবস্থা কর। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা গুরুতর আহত হাসিম বলে, মেধার খালের মুখে তাকে প্রতিবেশি হুছন, আলমাছ ও জয়নাল গংরা প্রাণে মারার উদ্দেশ্যে দা, ডেগার ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপাতে শুরু করে। চিৎকার শুনে ভাই আব্দুল মালিক রক্ষার জন্য এগিয়ে আসলে তাকেও কুপাতে শুরু করলে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল হাই বলেন, মালিক হত্যাকান্ডের মামলার চার্জশীট পক্রিয়াধীন এবং হত্যাকান্ডের সাথে প্রকৃত জড়িতদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।





শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়