Saturday, December 22

বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড ২০১৬ সালের মধ্যে বাণিজ্য দ্বিগুণ করবে

বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড দু'দেশের মধ্যে বিভিন্ন পণ্য ও সেবা খাতে বাণিজ্য সম্প্রসারণের মাধ্যমে ২০১৬ সাল নাগাদ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য দ্বিগুণ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।

বাংলাদেশে থাই প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার সফরকালে শনিবার এখানে সাক্ষরিত এক যৌথ বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে ঢাকায় থাই প্রধানমন্ত্রীর দুই দিনের এক সরকারি সফর শনিবার শেষ হয়েছে।

সফরকালে উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রীগণ বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও বহুপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

উভয় নেতা আঞ্চলিক সহযোগিতা এবং সড়ক ও শিপিং অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেন।

এছাড়া থাইল্যান্ড থেকে প্রতি বছর প্রয়োজনে ১০ লাখ টন অর্ধসেদ্ধ চাল কেনা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারকের মেয়াদ আরো তিন বছর বাড়িয়ে ২০১৬ সাল পর্যন্ত করার বিষয়ে বাংলাদেশের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে ব্যাংকক।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে বিনিয়োগের জন্য থাইল্যান্ডের বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের আহবান জানিয়েছেন।

উভয় পক্ষ বাংলাদেশে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনে দু'দেশের সংশ্লিষ্ট কোম্পানীর মধ্যে সম্ভাব্য সহযোগিতা খুঁজে দেখার বিষয়ে একমত হয়েছে।

এছাড়া দু'দেশের মধ্যে বিদ্যমান বাণিজ্য বৈষম্য হ্রাসে পদক্ষেপ নেয়ার ব্যাপারেও বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড সম্মত হয়েছে।

ইংলাক সিনাওয়াত্রা ২০১৩ সালে থাইল্যান্ডে বাংলাদেশের একক বাণিজ্য মেলা আয়োজনের পরিকল্পনাকে স্বাগত জানান।

উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে হাসপাতাল ও থাইল্যান্ডে চিকিৎসা পর্যটনে বিনিয়োগসহ স্বাস্থ্য সেবা ও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার ও শক্তিশালী করতে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্র“প প্রতিষ্ঠায় একমত হয়েছেন।

বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদেশে ‘বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চলে’ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও বিনিয়োগে থাই ব্যবসায়ী নেতাদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

থাইল্যান্ড তার মৎস্য খাতে বাংলাদেশী শ্রমিক নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ায় এর ভূয়সী প্রশংসা করেছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশে পর্যটন সেক্টরের উন্নয়নের জন্য গবেষণা চালাতে কারিগরি সহায়তা প্রদানে থাইল্যান্ড সম্মত হয়েছে।

বাংলাদেশে পর্যটন ও আতিথেয়তা শিল্পে বিশেষ করে পরিবেশ বান্ধব এবং বৌদ্ধ অধ্যুষিত পর্যটন এলাকায় বিনিয়োগ করার বিষয়টি থাইল্যান্ড সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করে দেখবে।

বৈঠকে বাংলাদেশ-থাই যৌথ বাণিজ্য কমিটি জোরদারে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির কৌশল পর্যালোচনা করে দেখতে তারা সম্মত হয়েছেন।

যৌথ বাণিজ্য কমিটির পরবর্তী বৈঠক ২০১৩ সালের প্রথম কোয়ার্টারে করার বিষয়েও একমত্য হয়েছে।

থাই প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও তার দেশের মধ্যকার বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য থাইল্যান্ডের রানং বন্দরের সুবিধা আরো বাড়াতে হবে।

দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীগণ মানব, মাদক ও অস্ত্র পাচার বন্ধ ও সন্ত্রাস বন্ধে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ের মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সম্মত হয়েছেন।

উভয় পক্ষ দু'দেশের প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ব্যাপারে সন্তোষ প্রকাশ করেছে।

দুই প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন আঞ্চলিক সংস্থার অধীনে বর্তমান সহযোগিতাকে স্বাগত জানান এবং বিমস্টেক, এআরএফ ও এসিডি’র আলোকে তাদের অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা আরো জোরদারে আগ্রহ প্রকাশ করা হয়।

বৈঠকে পূর্ব-পশ্চিম অর্থনৈতিক করিডোরে এবং মেকং গঙ্গা সহযোগিতায় বাংলাদেশের যোগদানের বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনা করে দেখার ক্ষেত্রে থাইল্যান্ড আশ্বাস দিয়েছে।

উভয় নেতাই দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সহযোগিতা জোরদারে বিমস্টেকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা স্বীকার করেন। এ প্রসঙ্গে থাই প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় বিমস্টেক সচিবালয় করায় ধন্যবাদ জানান।

অভিন্ন আঞ্চলিক স্বার্থ রক্ষায় প্রাতিষ্ঠানিক সমর্থন প্রদানে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি বলে তারা উভয়ে মনে করেন।

থাই প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সুবিধাজনক সময়ে তার দেশে সফরে যাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানান।

প্রধানমন্ত্রী তার আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন। কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে তার সফর কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হবে।(ওয়ান নিউজ বিডি )




শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়