গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে যশোর ঈদগাহ ময়দানে জেলা আওয়ামীলীগ আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার সুফল বাংলার ঘরে ঘরে পৌছে দিতে এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা ছাড়াও দুর্নীতি মুক্ত দেশ গড়তে এবং মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। খাদ্য সয়ংসর্ম্পনতা ছাড়াও অর্থনীতি অনেক মজবুত ও শক্তিশালী। ক্ষুদা-দারিদ্রের বিরুদ্ধে লড়াই করতে দেশের মানুষকে দক্ষ ও জনশক্তিতে রুপান্তরিত করতে কর্মমুখি শিক্ষার উপর গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। তাই দারিদ্র বিমোচনে গুরুত্ব দিয়ে মানুষের আয় বাড়ানো হয়েছে। ৬০ থেকে ৮০ ভাগ বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে। মানুষের আয় যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে তেমনি ভাবে বাজার নিয়ন্ত্র্রন রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৮০ লাখ বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বেকার যুবকরা এক লাখ টাকা পর্যন্ত সুদমুক্ত ঋণ দিনে এর মাধ্যমে ক্ষুদ্র উদ্যোগ গড়ে তুলতে সক্ষম হবে, স্বাবলম্বী করতে পারবে নিজেদেরকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যশোরকে প্রথম ডিজিটাল জেলা ঘোষণা করেছেন। শুধু যশোর নয় দেশের প্রতিটি জেলা উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায় উন্নয়নে এগিয়ে গেছে। বাংলাদেশ আজ সর্বক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে।
জনসভায় যোগদানের আগে সকালে প্রধানমন্ত্রী বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর বিমান ঘাঁটিতে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী একাডেমীর শীতকালীন গ্রাজুয়েশন কুজকাওয়াজ অনুষ্ঠানেসহ বিভিন্ন কর্মসুচিতে যোগ দেন । পরে দুপুর আড়াইটায় যশোর শহরের গরীবশাহ রোডের বকুল তলায় বঙ্গবন্ধু স্মৃতি ম্যুরাল করে শ্রদ্দাঞ্জলি অর্পন করেন। এরপর বেলা সোয়া তিনটায় সভাস্থলে পৌছে তিনি ন্যাশনাল ই-সার্ভিস সিস্টেমস উদ্বোধন করেন। জনসভায় দীর্ঘ বক্তৃতাকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিগত সরকারের সমালোচনা করে বলেন, তারা দেশকে নিরক্ষর করার ব্যাবস্থা করেছিল, দূর্নীতি, সন্ত্রাস, অত্যাচার, নির্যাতন , হামলার পথ বেছে নিয়েছিল। এজন্যে জনগণ তাদেকে প্রত্যাক্ষন করে বর্তমান সরকারকে ভোটের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে যাতে শিক্ষা, গ্রামীন উন্নয়ন, খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। তিনি যশোরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শিল্প কল কারখানা সাস্থাপনসহ বিভিন্ন উন্নয়নের আশ্বাস দেন। জনসভায় সভাপতিত্ব করেন যশোর জেলা আওয়ামীলীগ এর সভাপতি সাবেক এমপি আলী রেজা রাজু। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর এমপি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদ, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুন্নজান সুফিয়ান, খুলনা জেলা পরিষদের প্রশাসক ও খুলনা জেলা আওয়ামীলীগ এর সভাপতি হারুন-অর-রশিদ, যশোর সদর এমপি খালেদুর রহমান টিটো, এমপি খান টিপু সুলতান, যশোর পৌরসভার সাবেক মেয়র এসএম কামরুজ্জামান চুন্নু, পঙ্কজ দেবনাথ, জহিরুল ইসলাম রেন্টু চাকলাদর প্রমুখ। জনসভাটি সার্বিক পরিচালনায় ছিলেন, জেলা আওয়ামীলীগ এর সাধারণ সম্পাদক ও যশোর সদও উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন চাকলাদার।
আওয়ামী লীগই দেশে আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা প্রচলন করেছে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমদানির ওপর ট্যাক্স প্রত্যাহার করে আমরা কম্পিউটার ও মোবাইল ফোন সহজলভ্য করি। যাতে করে শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে এগিয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, দেশে একটি মাত্র মোবাইল ফোন কোম্পানি ছিল। যারা মনোপলি ব্যবসা করতো। আমরা প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসার পরিবেশ সৃষ্টি করে সাধারণ মানুষের হাতে হাতে মোবাইল পৌঁছে দিতে পেরেছি। এক লাখ ৩০ হাজারের স্থলে এখন মানুষ ১৪০০ টাকায় মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারছে। প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এ সরকার স্বাস্থ্য সেবা মানুষের দোর গোড়ায় পৌছে দিয়েছে। শিক্ষা খাতে ব্যাপক প্রসার আনা হয়েছে। শিক্ষার জন্যে আর অর্থ খরচ হবেনা। মাধ্যমিক শ্রেনী পর্যন্ত কাওকে আর বই কিনতে হবেনা। এবার মাধ্যমিক শ্রেনী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বিনা মুল্যে হাতে ২৭ কোটি বই সরবরাহ করা হবে। গত বছর শিক্ষার্থীদের হাতে ২৩ কোটি ১২ লাখ বই তুলে দেয়া হয়েছিল। বিদুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। যশোরের উর্বর মাটি ও আন্দোলন-সংগ্রামের প্রসঙ্গ উলে�খ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যশোরবাসীর উন্নয়নে কাজ করে যাওয়ার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তিনি বলেন, যশোরের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ও নৌপথগুলোর নাব্য আনতে সরকার ভৈরব নদ খনন করবে। কপোতাক্ষ নদের খননকাজ চলছে। বেনাপোল স্থলবন্দরকে ও ভোমরা স্থলবন্দরকে সম্পসারণ করে বহুমুখীকরণের পাশাপাশি পূর্ণাঙ্গ বন্দরে রূপান্তিত করা হয়েছে।
(ফেয়ার নিউজ)

0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়