Friday, October 16

কানাইঘাটে জবাই নয়, শ্বাসরুদ্ধে হত্যা করা হয়েছে গৃহবধূকে


নিজস্ব প্রতিবেদক:

সিলেটের কানাইঘাট লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউনিয়নের কালিনগর আগফৌদ গ্রামে স্বামীর হাতে খুন হয়েছেন ফাতেমা বেগম নামের এক গৃহবধু। 

গত বৃস্পতিবার রাত ১১ টার পর যে কোন সময়ে এ হত্যাকান্ডটি সংঘটিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ শামসুদ্দোহা পিপিএম। এ হত্যাকান্ডের সাথে ফাতেমা বেগমের স্বামী মহরম আলী (২৭) ছাড়াও আরো কেউ জড়িত রয়েছে কিনা এবং কি কারনে ফাতেমাকে হত্যা করা হয়েছে তা তদন্ত করে বের করা হবে ওসি জানান। 


হত্যাকান্ডের খবর পেয়ে শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে কানাইঘাট সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল করিম ও থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম ঘটনাস্থলে যান কিন্তু তারা লাশ উদ্ধার করেনি। এক পর্যায়ে বিকাল ২টার দিকে ফাতেমা হত্যাকান্ডের আলামত সংগ্রহ করার জন্য পুলিশের অধিকতর অপরাধ (সিআইডি) ক্রাইমসিন   ইউনিটের   সিলেটের   একটি   দল   ঘটনাস্থলে   এসে   ফাতেমার   লাশের   প্রাথমিক সুরতহাল   রির্পোট   তৈরী   সহ   বেশ   কিছু   আলামত   জব্দ   করেন।   ক্রাইম   সিন   দলের পাশাপাশি থানা পুলিশও পৃথক সুরতহাল রির্পোট তৈরী করে তার লাশ উদ্ধার করে সিলেট ওমেক হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে।থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, একটি পাকা ঘরের মেঝেতে ফাতেমা বেগমের মৃত দেহ পাওয়া যায় এবং মেঝেতে জমাট বাধা রক্তের দাগও ঘরের বিছানা সহ আসবাব পত্র এলামেলো ভাবে পাওয়া যায়। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাতেমা বেগমকে তার স্বামী মহরম আলী গলা কেটে হত্যা করেছে বলে প্রচারকরা হচ্ছে তা একেবারে সত্য নয়। কোন কিছু সঠিকভাবে জানার আগে গুজব ছড়ানো হয়। তিনি বলেন ফাতেমা বেগমের ডান চোখের নিচে এবং বাম চোখের পাশে এবং গলায়নখের আচাড় সহ আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার মুখ ও কান দিয়ে রক্ত বের হয়েছিল। ধারনা করাহচ্ছে ফাতেমা বেগমকে শ^াসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারনা করছে পুলিশ। তবেময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর কিভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে তার কারন যাবে বলেওসি শামসুদ্দোহা জানান।এদিকে   সরেজমিনে   ঘটনাস্থলে   গেলে   স্থানীয়   লোকজন   জানান,   কালীনগর   আগফৌদ গ্রামের আব্দুল খালিকের মেয়ে ফাতেমা বেগমের সাথে একই গ্রামের জলাল উদ্দিনের পুত্র মামাতো ভাই ট্র্যাক্টর চালক মরম আলীর বিয়ে বছর খানেক পূর্বে হয়। বিয়ের পর থেকেশ^শুড়বাড়িতে আলাদা একটি পাকা ঘরে স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করত মরম আলী। বিয়ের পরথেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়াঝাটি লেগে থাকতো, অনেকবার সামাজিক ভাবেস্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া মিমাংসা করা হয় বলে সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল খালিক সহআরো   অনেকে   জানান।   ফাতেমা   বেগমের   মা   জলিকা   বেগমও   বলেন   তার   মেয়ের   সাথেস্বামীর ঝগড়া সব-সময় লেগেই থাকতো। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকেতারা ঘুমিয়ে যান। পরদিন শুক্রবার সকাল বেলা মরম আলীর বাড়ির কয়েকজন মহিলা আমার বাড়িতে এসে বলেন, আমার মেয়ে ফাতেমা নাকি অসুস্থ। একপর্যায়ে তাদের বসত ঘরেরদরজায় এসে ডাকাডাকি করলে আমার মেয়ে ফাতেমা ও তার স্বামীর কোন সাড়া-শব্দ নাপেয়ে দরজায় ধাক্কা দিলে দরজা খুলে যায় এবং ঘরের মেঝেতে আমার মেয়ের রক্তাক্ত লাশ দেখতেপাই, কিন্তু তার স্বামীকে ঘরে দেখা যায়নি। স্ত্রীকে খুন করার পর থেকে মরম আলী পলাতকরয়েছে। তবে পুলিশ মরম আলীকে আটক করার জন্য বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে।এলাকার আরো অনেকে বলছেন মামাতো ভাই  মরম   আলীর   সাথে বিয়ে হওয়ার  পূর্বেফাতেমা বেগমের অন্যত্র একটি বিয়ে হয়েছিল। সেই ঘরে ফাতেমার ছেলে সন্তান রয়েছেজানা গেছে। এ ঘটনায় থানায় নিহতের মা জলিকা বেগম বাদী হয়ে মেয়ের জামাই মরমআলীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।


শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়