Saturday, October 26

কী কারণে মাটি খায় আমাজনের ম্যাকাউ?

পাখিরা সাধারণত পোকামাকড়, ফল বা দানাদার শস্য খেয়ে থাকে। খুবই নিরীহ এই পাখিরা প্রকৃতির সৌন্দর্য বর্ধন করে। কিন্তু এমন পাখির কথা কি জানেন, যে পাখি মাটি খায়? হ্যাঁ, এমনই একটি পাখি ম্যাকাউ।

আমাজনের জঙ্গলের ম্যাকাউসহ নানা জাতের টিয়া পাখির কাদা মাটির প্রতি ভারি আগ্রহ। নদীর তীরে এদের বড় বড় ঝাঁককে নরম মাটি ঠোকরাতে দেখা যায়। কিন্তু এই পাখিদের মাটি খাওয়ার কারণ কী?
অনেক তৃণভোজী প্রাণীই উদ্ভিদ থেকে পর্যাপ্ত লবণ পায় না। স্নায়ুগুলো সক্রিয় রাখতে, শরীরে তরলে ভারসাম্য ঠিক রাখাসহ নানা কারণে লবণ দরকার। কাদা মাটি সোডিয়াম লবণের ভালো উত্স। তেমনই পটাসিয়াম আর ম্যাগনেসিয়ামও আছে এতে। তাই পাখিসহ বিভিন্ন প্রাণী মাটি চাটে। এই মাটির স্তরগুলো পরিচিত সল্ট লিক নামে।
আরেকটা মতবাদ হলো, পাখিরা মাটি খায় বা চাটে বিষাক্ত পদার্থ থেকে রেহাই পেতে। বিভিন্ন উদ্ভিদ থেকে যেটা তাদের দেহে আসে। মাটি খাওয়ার ফলে মাটির উপাদানগুলো কুইনাইন, ট্যানিক এসিডের মতো বিষাক্ত পদার্থগুলোকে শুষে নেয়, ফলে ওগুলো আর শরীরে মেশে না।
ম্যাকাউ
ম্যাকাউ
তবে গবেষণা বলছে, সোডিয়াম-তত্ত্বই সঠিক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। পেরুর টিআরসি নামের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পেরুর আমাজন এলাকার বিভিন্ন মাটির স্তর থেকে পাখিদের লবণ চাটার অভ্যাস নিয়ে গবেষণা করে। এতে উঠে আসে- পাখিরা যেসব মাটি বাছাই করে, সেগুলোর বিষাক্ত উপাদান শোষণ করার ক্ষমতা ভালো নয়; বরং সোডিয়ামসমৃদ্ধ। মানু নদীর বিশেষ একটা বাঁকের কথাই ধরা যাক। ওখানে মাটির নির্দিষ্ট একটা স্তরের প্রতি আগ্রহী পাখিরা, আর ওটায় অন্যগুলোর চেয়ে সোডিয়ামের পরিমাণ বেশি।
এসব সল্ট লেকে লাল, নীলসহ বিভিন্ন বর্ণের ম্যাকাউসহ নানা জাতের পাখিদের দেখা পাওয়া যায় বলে পর্যটকরাও এ জায়গাগুলোর প্রতি খুব আগ্রহী। আমাজনের ব্রাজিল, প্যারাগুয়ে, পেরু, বলিভিয়া, ইকুয়েডর প্রভৃতি অংশে এমন অনেক ক্লে লিক বা সোডিয়ামসমৃদ্ধ মাটির স্তর আছে। তবে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সহজে যাওয়া যায় এমন জায়গাগুলোর দেখা পাবে দক্ষিণ পেরুর তামবোপাতা সংরক্ষিত এলাকায়। পেরুর মানু ন্যাশনাল পার্কের ব্লানকুইলো ক্লে লিকেও রংবেরঙের পাখিরা জমায়েত হয় সোডিয়াম লবণের আশায়। পর্যটকদের জন্য এমন বিখ্যাত আরেকটি জায়গা ইকুয়েডরের ইয়াসুনি জাতীয় উদ্যানের সোডিয়াম সমৃদ্ধ মাটির স্তরগুলো।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়