Sunday, August 4

এডিস মশা সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে সাজেদুল

রাজধানী ঢাকায় গত কয়েকদিনে মহামারির রূপ নিয়েছে ডেঙ্গু। পাশাপাশি সারাদেশে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ বেড়েছে। ছোট শিশু থেকে বৃদ্ধ অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন ডেঙ্গু জ্বরে। সবার মধ্যে ডেঙ্গু আতঙ্ক কাজ করছে।
সম্প্রতি বাড়ির টিউবওয়েলে গোসল করার সময় সাজেদুল ইসলাম (১৬) নামে এক কিশোরের হাতের উপরে একটি মশা বসে। মশাটি তাকে কামড় দেয়ার আগেই সে থাবা দিয়ে মেরে ফেলে। মশাটির বড় বড় পা ও শরীরের গঠন ভিন্ন হওয়ায় এডিস মশা বলে সন্দেহ হয় কিশোর সাজেদুলের।
পরে মশা সাথে নিয়েই মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটে আসে সাজেদুল। তার রক্ত পরীক্ষা করে ডেঙ্গু
এনএস-১ পজেটিভ পান চিকিৎসকরা।
জানা গেছে, ডেঙ্গু আক্রান্ত সাজেদুল গাংনী উপজেলা শহরের একটি ফার্মেসির কর্মচারী। তার বাড়ি জুগিন্দা গ্রামে।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় দায়িত্বপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার ডা. সজিব উদ্দিন স্বাধীন বলেন, যে এডিস মশাটি সে মেরেছে সেটি তাকে কামড় দেয়নি। তার বাড়ির আশপাশে এডিস মশা রয়েছে। কয়েকদিন আগেই তাকে কামড় দিয়েছে। কারণ এডিস মশা কামড়ালে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিক্রিয়া হয় না। কয়েক দিন সময় লাগে।
এদিকে গত ২৯ জুলাই গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আম্বিয়া খাতুন নামে এক গৃহবধূর প্রথম ডেঙ্গু ধরা পড়ে। পরের দিন মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে তিনজন ও গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আরও তিনজন রোগী ভর্তি হন। শুক্রবার সাজেদুল ইসলামসহ আরও এক যুবক ভর্তি হয়েছেন। সব মিলিয়ে মেহেরপুর জেলায় এখন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আটজন। এদের মধ্যে ছয়জন মেহেরপুর ও গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি, একজন কুষ্টিয়া এবং একজন ঢাকায় ভর্তি হয়েছেন।
গাংনীর মানুষের মাঝে ডেঙ্গু নিয়ে এক প্রকার ভীতি সৃষ্টি হয়েছে। কারো শরীরে জ্বর অনুভূত হলেই ডেঙ্গু পরীক্ষার জন্য ছুটে যাচ্ছেন বিভিন্ন হাসপাতাল, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ল্যাবে।
মেহেরপুরের সিভিল সার্জন ডা. শামীম আরা নাজনীন বলেন, আতঙ্কিত না হয়ে ডেঙ্গু জন্মাতে পারে এমন জায়গাগুলো ধ্বংস করতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অযথা পরীক্ষা না করার পরামর্শ দেন তিনি।
প্রসঙ্গত, এবার কোরবানির ঈদের ছুটির সময় ডেঙ্গু গোটা দেশে ভয়ংকর রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা। কারণ ঈদের ছুটিতে রাজধানী ছাড়বেন লাখো মানুষ। এতে ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ও প্রকোপ বাড়ার সম্ভাবনা আছে তাই সবমহলের সচেতনতা আর সতর্কতা ছাড়া এর বিস্তার ঠেকানো সম্ভব নয় বলেও জানা তারা।
গত ২৭ জুলাই ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে কেউ যেন ঢাকা না ছাড়েন সেই পরামর্শও দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়