ফিচার ডেস্ক ::
যেকোনো কাজ করতে গেলেই দুই হাতেরই প্রয়োজন হয়। তবে এক হাতে বাধ্য হয়ে চলা গেলেও বিশ্ব জয় করাটা একদমই চিন্তার বাইরে। কিন্তু এই অসাধ্যই সাধন করেছেন নাতালিয়া পার্তিকা। চলুন জেনে নেয়া যাক তার এক হাতে বিশ্ব জয়ের গল্প-
জন্মের পর থেকে মেয়েটিকে পারলে আড়াল করেই
রাখতেন মা-বাবা। মেয়েটি যে জন্ম থেকেই প্রকৃতির অদ্ভুত এক খেয়ালের শিকার।
ডান হাতের কনুইয়ের সামনের অংশটি ছাড়াই জন্মেছে সে। বড় বোনের ন্যাওটা ছিল।
বড় বোন টেবিল টেনিস খেলতেন। বোনের সঙ্গে এক দিন অনুশীলনে গিয়েছিল সেও। বয়স
তখন মাত্র ৭। সেই প্রথম টেবিল টেনিসের প্যাডেল (ব্যাট) হাতে তোলা। প্রথম
দেখাতেই তার বোনের প্রশিক্ষক মেয়েটির মধ্যে দেখেছিলেন সহজাত প্রতিভা।
বলেছিলেন, এই মেয়ে পারবে!
পোল্যান্ডের মেয়ে নাতালিয়া পার্তিকা
পেরেছেন। না, এখনো বিরাট কোনো সাফল্য আসেনি। ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে একটা
রুপা আছে। কিন্তু শারীরিকভাবে অংশত পঙ্গু হলেও নিজ যোগ্যতায় তিনি টানা
দ্বিতীয়বারের মতো জায়গা করে নিয়েছেন অলিম্পিকে। অলিম্পিকের উত্তেজনাপূর্ণ
ম্যাচে ডেনমার্কের মাই স্কোভকে ৪-৩ সেটে হারিয়ে উঠে গেছেন শেষ ৩২-এ। কিন্তু
২৩ বছর বয়সী তরুণীর লক্ষ্য আরো সামনে এগিয়ে যাওয়া। অলিম্পিকের পর পর
প্যারালিম্পিকেও অংশ নেবেন। অলিম্পিকে আসা ১০ হাজারেরও বেশি অ্যাথলেটের
মধ্যে তিনি সেই দুজনের একজন, প্যারালিম্পিকের আগে যারা অংশ নিচ্ছেন
অলিম্পিকেও অন্যজন অস্কার পিস্টোরিয়াস।
টেবিল টেনিস তাঁর কাছে খেলা নয়, জীবন। নিজের
শৈশবে টেবিল টেনিসের সঙ্গে প্রথম পরিচয়ের স্মৃতি রোমন্থন করে বলেছেন,
আমাকে দেখার পরই আমার বোনের প্রশিক্ষক বললেন, আমি যেন বোনের সঙ্গে রোজ আসি।
এটা আমার জন্য ছিল রোমাঞ্চকর। আমরা সারা দিন বাসায় খেলতাম, দেয়ালে বল
মারতাম, রান্নাঘরের টেবিলেও খেলতাম। আমি প্যাডেল থেকে কখনোই বিচ্ছিন্ন
হইনি। কেন হননি, সেটাও বলেছেন। টেনিস ছাড়া আমি আমার জীবন কল্পনাও করতে পারি
না। টেনিস ছাড়া আমার জীবন একঘেয়ে হয়ে যেত। হয়তো আর অন্য কিছু করাও হতো না।
স্রেফ বাড়িতে বসে থাকা ছাড়া। বেইজিংয়ে প্যারালিম্পিকে ব্যক্তিগত সোনা
জিতেছিলেন। দলগত রুপাও। কিন্তু তাতে তৃপ্ত হননি। আসল অলিম্পিকের সোনাটাই যে
তার চাই। এ হাতেই যে করতে চান বিশ্বজয়!
খবর বিভাগঃ
ফিচার
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়