প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশর উন্নয়নের সঙ্গে পরিবেশও রক্ষা করতে হবে। প্রতিটি উন্নয়নমূলক কাজের সঙ্গে বৃক্ষরোপন ও জলাধার নির্মাণেও গুরুত্ব দিতে হবে। এ ব্যাপারে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছি। যাতে পরিবেশ সংরক্ষিত থাকে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক
সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা-২০১৯ এর উদ্বোধন
অনুষ্ঠান তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সবাইকে তিনটি করে গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন। একটি করে ফলদ, বনজ ও ভেষজ গাছ লাগানোর পরামর্শ দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যত
আধুনিকায়ন হচ্ছে, যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে, আমাদের অবিবেচনাপ্রসূত কাজের ফলে
পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। আধুনিকভাবে বেঁচে থাকার জন্য আমরা যা যা ব্যবহার
করছি, তার কারণে পরিবেশে দূষণ ছড়াচ্ছে। সাবান, শ্যাম্পু, বডি স্প্রে,
ডিটারজেন্ট, মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, শিল্প কলকারখানা, সবকিছু থেকে দূষণ
ছড়ায়। তবে আমরা পরিবেশ রক্ষায় সচেতন হচ্ছি। উন্নয়ন দরকার, কিন্তু পরিবেশও
রক্ষা করতে হবে। বৃক্ষরোপণ করতে হবে, জলাধার রক্ষা করতে হবে।
ছোটবেলার স্মৃতিচারণা করে প্রধানমন্ত্রী
বলেন, আমরা ছোটবেলায় উখিয়ায় যেতাম, সেখানে কোনো রাস্তা ছিল না তখন। গভীর
জঙ্গলের ভেতর দিয়ে যেতে হতো। ফরেস্ট বাংলোতে উঠতাম, এর চারপাশে ঘন জঙ্গল
ছিল। মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের টেকনাফ-উখিয়ায় আশ্রয় দেয়া হলো। এখন বন শেষ।
তিনি বলেন, মানুষ বাড়লে বন ও পরিবেশ ধ্বংস
হয়। সভ্যতার বিকাশ ও উন্নয়ন চলবে। তবে পরিবেশও রক্ষা করতে হবে। এ বিষয়ে আইন
করা হয়েছে, মোবাইল কোর্ট হচ্ছে। বড় বড় শহরে, মহাসড়কে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণের
চেষ্টা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ১৯৮৪-৮৫ সাল থেকে প্রতিবছর কৃষক
লীগের মাধ্যমে পহেলা আষাঢ় থেকে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি শুরু হতো। সব কর্মীকে
তিনটি করে গাছ লাগাতে বলা হতো। এটা আবার শুরু করবো।
সুন্দরবন ও উপকূলীয় বন রক্ষার তাগিদ দিয়ে
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুন্দরবনকে রক্ষা করতে হবে, বাঘের সংখ্যা বাড়াতে হবে।
হোগলা বন বাঘের ব্রিডিং পয়েন্ট। নদীর লবণাক্ততা কমলে হোগলা বন বাড়বে এবং
বাঘের সংখ্যাও বাড়বে। এর জন্য আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছি। উপকূলীয়
অঞ্চল রক্ষার কাজ জাতির জনকই শুরু করেছিলেন। আমরা উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী
রক্ষার কাজ করেছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা জানি
বৈশ্বিক উষ্ণায়ন আমাদের ওপর আসবে। এর জন্য আমরা দায়ী না, আমরা ভুক্তভোগী।
এর প্রতিকারের ব্যবস্থা আমরা নিতে শুরু করেছি। এর জন্য ফান্ডও তৈরি করা
হয়েছে।
বিদেশ থেকে এ ব্যাপারে খুব একটা সহায়তা
পাওয়া যায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্যারিসে পরিবেশ বিষয়ে একটা চুক্তি
হয়েছে, আশা করি ভবিষ্যতে এর সহায়তা পাওয়া যাবে।
বৃক্ষরোপণে জাতীয় অবদান রাখায় প্রধানমন্ত্রী
১০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করেন। বন ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় অবদান
রাখায় তিনটি ক্যাটাগরিতে দু’জন ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করেন।
একইসঙ্গে গাজীপুরে শেখ কামাল ওয়াইল্ড লাইফ সেন্টারের উদ্বোধন করেন।
সূত্র:
ডেইলি বাংলাদেশ
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়