স্বাস্থ্য ডেস্ক:
জ্যৈষ্ঠ মাসের মিষ্টি ফলের সমারোহ আর মৌ মৌ গন্ধ জানান দেয় এটা মধুমাস। আম, কাঁঠাল, লিচু, আনারস আর জামের সমারোহ এখন। তবে এরমধ্যে লিচু বেশিরভাগ মানুষেরই প্রিয় ফল। বিশেষ করে শিশুরা হাতের নাগালে পেলেই মুখে নিতে ভুল করে না! খোসা ছিলে টপাটপ মুখে পুরলেই হলো। অদ্ভুত আনন্দে মন ভরে যায়। যেমন মোলায়েম রং তেমনি পেলব টেস্ট! আহা! তবে প্রিয় এই ফলটি খেতে সুস্বাদু হলেও কখনো ভুলেও এক সঙ্গে অনেকগুলো লিচু খাওয়া যাবে না। কারণ লিচু একটি আতঙ্কের নামও!
লিচুতে হাইপোগ্লাইসিন নামে একটি রাসায়নিক
থাকে। এই হাইপোগ্লাইসিন শরীরে শর্করা তৈরি রোধ করে। এর ফলে শিশুরা যদি খালি
পেটে অতিরিক্ত লিচু খায় তবে শরীরে শর্করার পরিমাণ অত্যন্ত কমে যায়। যার
কারণে মৃত্যুও হতে পারে। এখানেই শেষ নয়, অতিরিক্ত লিচু খেলে তা খাবার হজম
হতে বাধা দেয় ও পেটের পীড়াজনিত সমস্যা হতে পারে। এছাড়া যারা গ্যাস্ট্রিকের
রোগী তাদের লিচু না খাওয়ায় ভালো।
হাইপোগ্লাইসেমিয়া মারাত্মক এক অবস্থার নাম।
শরীরে বছরের পর বছর গ্লুকোজ মানে সুগারের আধিক্য নিয়ে মানুষ বেঁচে থাকেতে
পারে, ডায়াবেটিস রোগীরা তার প্রমান। অথচ সুগার কমে গেলে একটুও সময় দিবে না।
ঝিমঝিম করতে করতে ঘাম বের হবে, মাথা ফাঁকা ফাঁকা লাগবে, শ্বাসকষ্ট হবে।
তারপর বমি, খিঁচুনি, এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।
আন্তর্জাতিক চিকিৎসা বিজ্ঞান পত্রিকা
‘ল্যানসেট’ এর সাম্প্রতিক সংখ্যায় প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্রে বলা হয়েছে,
সাধারণত খালি পেটে অনেকগুলো লিচু (মূলত অপরিপক্ব লিচু) খেলে লিচুতে থাকা
টক্সিন হাইপোগ্লাইসিনের প্রভাবে সুস্থ-সবল শিশুদেরও হঠাৎ খিঁচুনি আর বমি
শুরু হতে পারে । যাদের অনেকেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে । আর এভাবে আক্রান্ত হওয়া
অর্ধেকেরও বেশি শিশু মারা যায়।
তাহলে করণীয়? একটু সতর্কতা অবলম্বন করলে
চলে! যেমন- খালি পেটে লিচু বিশেষ করে অপরিপক্ক লিচু খাওয়া যাবে না। শিশুদের
খালিপেট লিচু খেতে নিরুৎসাহিত করা এবং বড়দেরও খালিপেট লিচু না খাওয়াই
ভালো। বর্তমানে ইফতার এ লিচুর প্রচলন বেড়েছে। সারাদিন রোজা থাকার কারণে
এমনিতেই হাইপোগ্লাসেমিক থাকে তারপর লিচু খেলে আক্রান্ত হবার একটা সম্ভাবনা
থাকতেই পারে।
খবর বিভাগঃ
স্বাস্থ্য
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়