Wednesday, April 3

নারী-পুরুষের বন্ধ্যাত্বের কারণ ও চিকিৎসা

কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক:

বন্ধ্যত্ব শুধু সবসময় নারীদের সমস্যা নয়। নারী-পুরুষ উভয়েরই এ সমস্যাই হতে পারে।

যখন কোনো সক্ষম দম্পতি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার না করে একসঙ্গে থাকার পরও এক বছর এবং এর বেশি সময় সহবাস করা সত্ত্বেও সন্তান জন্মদানে ব্যর্থ হয় তখন সেই দম্পতিকে বন্ধ্যা এবং দম্পতির এই অবস্থাকে বন্ধ্যত্ব বলে।  এই বন্ধ্যত্বের হার শতকরা ১০-১৫ ভাগ। 
সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৩৫ শতাংশ ক্ষেত্রে পুরুষ দায়ী, ৩৫ শতাংশ ক্ষেত্রে শুধু মহিলা দায়ী, ২০ শতাংশ ক্ষেত্রে উভয়েই দায়ী। আর ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে কোনো কারণ জানা নেই।
বন্ধ্যত্বের কারণ: একজন পূর্ণাঙ্গ রমণীর ডিম্বাশয় থেকে প্রতি মাসে একটি করে ডিম্বাণু নির্গত হয়। ৪৫ বছর বয়স পর্যন্ত প্রজনন বয়স ধরা হলেও ৩৫ বছরের পর থেকে প্রজনন ক্ষমতা কমতে থাকে। প্রজনন বয়সের শেষ দিকে ডিম্বাণু নিঃসরণ মাসে নাও হতে পারে। প্রজনন বয়সের মধ্যে প্রতি মাসেই প্রজনন মহিলার ২৮-৩৫ দিনের ব্যবধানে ঋতুস্রাব হয়ে থাকে। নিয়মিত ঋতুস্রাব মহিলাদের নিঃসরণের একটি প্রমাণ।
বন্ধ্যত্বের কারণ অগণিত। এর মধ্যে-
নারীর ক্ষেত্রে বন্ধ্যত্বের কারণগুলো হচ্ছে:
> ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু বের না হলে। (নিয়মিত মাসিকের ক্ষেত্রে ডিম্বাণু নির্গত হয় মাসিকের ১২-১৫তম দিনে)।
> ডিম্বাণু নিঃসরণের আগে ও পরে কিছু কিছু হরমোন নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী নিঃসৃত হলে।
> ডিম্বনালি বন্ধ থাকলে (বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যেমন—জরায়ুতে কোনো কারণে ইনফেকশন হলে)।
> জরায়ুতে টিউমার হলে।
> যৌনাঙ্গে যক্ষ্মা হলে।
> জরায়ুর মধ্যের আস্তরণ জরায়ুর ভেতরের অংশ ছিঁড়ে ডিম্বনালি, ডিম্বাশয় বা জরায়ুর বাইরে ছড়িয়ে পড়লে।
> ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত থাকলে।
> থাইরয়েড হরমোনের তারতম্য হলে।
> ধুমপান, মদ্যপান করলে।
> অতিরিক্ত ওজন হলে।
পুরুষের ক্ষেত্রে:
> শুক্রাণু কম উত্পন্ন হলে।
> শুক্রাণু নির্দিষ্ট বেগে গতিশীল না হলে।
> শুক্রাণুর আকৃতি স্বাভাবিক না হলে।
> যৌনবাহিত রোগের কারণে।
> বয়সজনিত কারণে শুক্রাণুর সংখ্যা কম হলে।
> অণ্ডকোষে আঘাত লাগলে।
> শুক্রাণু বের হওয়ার পথ বন্ধ থাকলে।
> ধূমপান, মদ্যপান করলে।
> ডায়াবেটিস বা থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে।
> নিয়মিত বিষণ্নতার ওষুধ খেলে।
> অতিরিক্ত ওজন হলে।
> গরমে একনাগাড়ে কাজ করলে বা টাইট আন্ডার গার্মেন্টস ব্যবহার করলে।
চিকিৎসা:
বন্ধ্যত্বের চিকিৎসা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এই চিকিত্সা ধাপে ধাপে করতে হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে স্বামী-স্ত্রী উভয়কেই বন্ধ্যত্ব সম্পর্কে ধারণা দিতে হয়। বন্ধ্যত্বের কারণ জানাতে হয়। প্রয়োজনে উভয়েরই পরীক্ষা করতে হয়। আমাদের দেশে বন্ধ্যত্বের চিকিৎসা অনেক এগিয়ে গিয়েছে। তাই হাতুড়ে ডাক্তার কিংবা কবিরাজের কাছে ধরনা দিয়ে সময় নষ্ট না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়