Sunday, July 31

ফোনে কোন ধরনের ডিসপ্লে ভালো


কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: আইপিএস না অ্যামোলেড? স্মার্টফোনে কোন ধরনের ডিসপ্লে ভাল? এমন প্রশ্ন অনেকেরই। আইপিএস ডিসপ্লে এবং অ্যামোলেড ডিসপ্লের প্রযুক্তি সমসাময়িক হলেও পার্থক্য রয়েছে। আইফোনে ব্যবহার করা হয় আইপিএস এলসিডি ডিসপ্লে। ওদিকে বেশিরভাগ অ্যানড্রয়েড ফ্ল্যাগশিপ ডিভাইস-এ রয়েছে অ্যামোলেড ডিসপ্লে। স্মার্টফোন কেনার সময়ে এখনও বহু মানুষ দামের চিন্তাই বেশি করেন, ফোনের কনফিগারেশন নয়। আবার কনফিগারেশনের মধ্যে কারও কাছে ব্যাটারি ব্যাক-আপ প্রধান বিষয় হয়ে দাঁড়ায়, তো কেউ জোর দেন প্রসেসর এবং র‌্যামের উপর। প্রধানত যারা গেম খেলেন বা নিয়মিত ভিডিও দেখেন ফোনে, তারাই বেশি করে ডিসপ্লে নিয়ে মাথা ঘামান। বেশিরভাগ ক্রেতা ‘ফুল এইচডি’ ডিসপ্লে শুনেই ফোনটি বগলদাবা করে বাড়ি ফেরেন। কিন্তু মোবাইলের কনফিগারেশনে ‘ফুল এইচডি’ লেখা থাকলেই যে সেটি সেরা ডিসপ্লে এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। এইচডি ডিসপ্লে মানে নিঃসন্দেহে ভাল, কিন্তু সেরা কি না তা কীভাবে বোঝা যাবে? স্মার্টফোনের বাজার এখন জমজমাট। প্রচুর ব্র্যান্ড এবং প্রোডাক্ট রেঞ্জ এসে গিয়েছে ক্রেতাদের হাতের মুঠোয়। তাছাড়া এক একটি নির্দিষ্ট ক্রয়সীমার স্মার্টফোনগুলির মধ্যে দামের তারতম্যও খুব বেশি নয়। তাই মাথা গুলিয়ে যাওয়া স্বাভাবিক। বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে ক্রেতারা যে দাম দিয়ে একটি ফোন কিনছেন, তার থেকে হয়তো আর হাজার দু’য়েক টাকা বেশি দিলেই আরও ভাল কনফিগারেশনের স্মার্টফোন পেতেন। তাই ফোন কেনার সময়ে অন্যান্য কনফিগারেশনের পাশাপাশি ডিসপ্লেও খুঁটিয়ে দেখাটা প্রয়োজন। ১. ডিসপ্লের ক্ষেত্রে বাজারসেরা এখন দু’টি ডিসপ্লে প্রযুক্তি— একটি হল অ্যামোলেড বা সুপার অ্যামোলেড এবং অন্যটি হল আইপিএস এলসিডি। দু’টিরই ভাল-মন্দ রয়েছে। ২. অ্যামোলেড ডিসপ্লের বিশেষত্ব হল এতে স্ক্রিনের প্রত্যেকটি পিক্সেল আলাদা ভাবে আলোকিত হয়। এই ধরনের ডিসপ্লেতে একটি পাতলা ফিল্ম ট্রানসিস্টর বা টিএফটি থাকে যার মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়ে পিক্সেলগুলি আলোকিত করে। ৩. আইপিএস এলসিডি (ইন-প্লেন সুইচিং লিকুইড ক্রিস্টাল ডিসপ্লে) প্রযুক্তি অ্যামোলেডের থেকে অনেকটাই আলাদা। এক্ষেত্রে একটি পোলারাইজড আলোকরশ্মিকে একটি কালার ফিল্টারের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত করা হয়। এবার আসা যাক তুল্যমূল্য আলোচনায়। কোন ডিসপ্লে ভাল— আইপিএস না অ্যামোলেড? আইফোনে ব্যবহার করা হয় আইপিএস এলসিডি ডিসপ্লে। ওদিকে বেশিরভাগ অ্যানড্রয়েড ফ্ল্যাগশিপ ডিভাইস-এ রয়েছে সুপার অ্যামোলেড ডিসপ্লে। বিশেষ করে স্যামসাংয়ের গ্যালাক্সি এস সিরিজের বেশি দামের ফোনগুলিতে সুপার অ্যামোলেড তো রয়েইছে, কয়েকটি মাঝারি রেঞ্জের ফোনেও এই ডিসপ্লে দেখা যায়। আইফোন আইপিএস এলসিডি প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার কারণ কোম্পানির বক্তব্য এই প্রযুক্তি অ্যামোলেডের তুলনায় অনেক বেশি সস্তা। ওদিকে স্যামসাংয়ের মত, সুপার অ্যামোলেড প্রযুক্তিতে ডিসপ্লের রঙ অনেক বেশি উজ্বল লাগে। নিঃসন্দেহে সুপার অ্যামোলেড ডিসপ্লে অসাধারণ। শোনা যাচ্ছে, স্যামসাং গ্যালাক্সি এস ৮-এ থাকবে কার্ভড ফোরকে অ্যামোলেড ডিসপ্লে। তাই বলে আইপিএস এলসিডি ডিসপ্লে যে খারাপ তা কিন্তু একেবারেই নয়। আইপিএস ডিসপ্লের ইউএসপি হল শার্পনেস আর ক্ল্যারিটি বা স্বচ্ছতা। তবে রোদের মধ্যে খুব স্পষ্ট হয় অ্যামোলেড ডিসপ্লে আবার অনেকের মতে, তেরছাভাবে বা অ্যাঙ্গুলার ডিসপ্লে ভাল হয় আইপিএস প্রযুক্তিতে। আইফোন ছাড়াও এলজি, এইচটিসি এবং লুমিয়া ফোনগুলিতেও আইপিএস এলসিডি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। তবে ক্রেতারা কোনদিকে যাবেন? সেরা উপায় হল— দোকানে দু’টি ধরনের ডিসপ্লে পাশাপাশি রেখে বিচার করা। যে ডিসপ্লেটি আকর্ষণীয় মনে হবে সেটিই কিনুন, কিন্তু নিজে যাচাই করাটা জরুরি। কারণ ডিসপ্লের ফিলটা একেক জন মানুষের কাছে একেক রকম। তাই সেলসম্যানের কথার উপরে ভরসা করবেন না। এছাড়া সেটটিতে গেম খেলে এবং ভিডিও দেখেও পরীক্ষা করে দেখুন। অনলাইনে যদি ফোন কেনার পরিকল্পনা থাকে, তবে তার আগে উইনডো শপিংয়ে বেরিয়ে দু’টি ধরনের ডিসপ্লে চাক্ষুষ করে আসাই ভাল।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়