Sunday, July 31

নতুন ও যোগ্য নেতৃত্বের প্রত্যাশায় নেতাকর্মীরা


খুলনা: সম্মেলনের পর পাঁচ বছর পার হলেও কাউন্সিলের দেখা নেই খুলনা জেলা বিএনপির। ঝিমিয়ে পড়া সংগঠনকে গতিশীল করতে এখনই নতুন কমিটির প্রয়োজন বলে মনে করছেন দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। তারা নতুন ও যোগ্য নেতৃত্বের প্রত্যাশায় সম্মেলনের জন্য তাকিয়ে আছেন কেন্দ্রের দিকে। এদিকে খুলনা জেলা বিএনপিতে সাধারণ সম্পদকের পদে যোগ্য নেতা মিলছে না বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। মেয়াদ শেষ হওয়া কমিটির অনেক নেতা এই গুরুত্বপূর্ণ পদে আসতে চাইলেও তাদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে রয়েছে বিভিন্ন অভিযোগ। দলীয় কার্যালয় দখল করে মার্কেট নির্মাণ, চরমপন্থী ও সুন্দরবনের দস্যুদের সঙ্গে আঁতাত, সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগসাজশ, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে একাধিকবার দল থেকে বহিষ্কার হওয়া নেতারাই চাইছেন সাধারণ সম্পদক হতে। ফলে আগামী দিনে আন্দোলন-সংগ্রামে এরা দলকে কতটা এগিয়ে নিতে পারবেন, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। খুলনা জেলা বিএনপির সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০১০ সালে। অধ্যাপক মাজিদুল ইসলামকে সভাপতি এবং এস এম শফিকুল আলম মনাকে সাধারণ সম্পাদক করে তখন কমিটি গঠন করা হয়। এরপর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের অজুহাতে আর কোনো সম্মেলন হয়নি। কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও আর সম্মেলনও করতে পারেনি সংগঠনটি। ফলে শীর্ষ পদের জন্য অনেকেই এখন মুখিয়ে রয়েছেন। সূত্রানুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম দিকে সম্মেলনের তোড়জোড় শুরু হলেও কেন্দ্রীয় সম্মেলন এবং ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের কারণে তাও পিছিয়ে যায়। খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি বরাবরই একসঙ্গে সবকিছু করলেও সম্প্রতি নগর ও জেলা শাখা পৃথকভাবে কর্মসূচি পালন শুরু করেছে। ফলে নগর শাখার সম্মেলন না হওয়ায় জেলা শাখার সম্মেলন নিয়েও রয়েছে ধোঁয়াশা। কবে সম্মেলন হবে, তাও কেউ বলতে পারছে না। তবে খুলনার নেতাকর্মীরা আশা করছেন, খুব শিগগির খুলনায় বিএনপির সম্মেলন হবে। জেলা বিএনপির সভাপতির পদ নিয়ে খুব একটা টানাটানি নেই। এই পদে একক প্রার্থী হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এস এম শফিকুল আলম মনার। সম্মেলনের কোনো দিন-তারিখ ঠিক না হলেও কমিটিতে স্থান পেতে তোড়জোড় শুরু করেছেন অনেকেই। বিশেষ করে শীর্ষ দুই পদের আশায় বুক বেঁধেছেন উদীয়মান কয়েকজন নেতা। তবে তাদের অনেকেরই লক্ষ্য সাধারণ সম্পাদকের পদ। দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, যারা সাধারণ সম্পাদকের পদ চাইছেন, তাদের সবার বিরুদ্ধে কিছু না কিছু অভিযোগ রয়েছে। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের পদ প্রত্যাশা করছেন বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি ও জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি মনিরুজ্জামান মন্টু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু হোসেন বাবু, সাংগঠনিক সম্পাদক আমীর এজাজ খান, জেলা প্রচার সম্পাদক ও যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম বাপ্পী ও যুগ্ম সম্পাদক মোল্লা খাইরুল ইসলাম। দলীয় সূত্রানুযায়ী, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর এই নেতাদের অনেকেই খুলনা ছেড়ে পালিয়ে যান, আবার কেউ কেউ সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে আঁতাত করে আন্দোলনে না থেকে মামলার হাত থেকে রেহাই পেয়েছেন। জেলার এক উপজেলায় দলীয় কার্যালয় দখল করে সেখানে মার্কেট করেছেন এক নেতা। বনদস্যুদের সঙ্গে আঁতাত করে সুন্দরবনের কাঠ পাচার করার অভিযোগ রয়েছে নগর বিএনপির শীর্ষ নেতার কাঁধে ভর দিয়ে চলা একজন নেতার। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করার অভিযোগে দুবার দল থেকে বহিষ্কার হওয়া এবং দীর্ঘদিন ধরে চরমপন্থীদের সঙ্গে আঁতাত করে চলছেন একজন। ফলে এসব নেতাকে দিয়ে আগামী দিনে দল সঠিকভাবে পরিচালিত হবে কি না তা নিয়ে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে। জেলা বিএনপির সহসভাপতি মনিরুজ্জামান মন্টু বলেন, সম্মেলনের ব্যাপারে দলের হাইকমান্ড থেকে এখনো পর্যন্ত নির্দেশনা জেলা কমিটি পায়নি। তবে দলের সক্রিয় ও ধারাবাহিকভাবে যারা দলের সব কর্মকা-ে অংশ নিচ্ছেন, তারা নেতৃত্বপ্রত্যাশী। দলকে আরও গতিশীল করতে এ ব্যাপারে শিগগিরই কেন্দ্র উদ্যোগ নেবে বলে তারা আশাবাদী। এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এম শফিকুল আলম মনা ঢাকাটাইমসকে বলেন, খুব তাড়াতাড়ি জেলা বিএনপির সম্মেলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কাউন্সিল হবে, না কেন্দ্র থেকে কমিটি নির্ধারণ করে দেয়া হবে, তা তিনি বলতে পারেননি। তবে কেন্দ্র যে নির্দেশনা দেবে, তাই মেনে নেয়া হবে বলে তিনি জানান। শফিকুল বলেন, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তাদের নেতা নির্বাচিত করা হবে কি না, তা কেন্দ্র অথবা তৃণমূল নেতাকর্মীরাই নির্ধারণ করবে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়