Thursday, August 27

গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধিতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সাধারণ মানুষ


ঢাকা: ভোক্তা পর্যায়ে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে সরকার। গ্যাসের দাম গড়ে ২৬.২৯ শতাংশ এবং বিদ্যুতের দাম গ্রাহক পর্যায়ে ২.৯৩ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। গৃহস্থালির গ্যাস ব্যবহারের জন্য গ্রাহককে এক চুলার ক্ষেত্রে ৬০০ টাকা এবং দুই চুলার ক্ষেত্রে ৬৫০ টাকা দিতে হবে। গৃহস্থালিতে মিটারভিত্তিক গ্যাসের বিল প্রতি ঘনমিটার ৫ টাকা ১৬ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৭ টাকা করা হয়েছে, যা আগামী মাস থেকেই কার্যকর হবে। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কম থাকা সত্ত্বেও গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির এ সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের আশঙ্কা, দ্রব্যমূ্ল্যের দামও বাড়বে, যাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সাধারণ মানুষ। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান এ আর খান গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দেন। ঘোষণা অনুসারে, গ্রাহক পর্যায়ে ১-৭৫ ইউনিট বিদ্যুতের নতুন মূল্য ৩ টাকা ৮০ পয়সা, ৭৩-২০০ ইউনিটে ৫ টাকা ১৪ পয়সা, ২০১-৩০০ ইউনিটে ৫ টাকা ৩৬ পয়সা, ৩০১-৪০০ ইউনিটে ৫ টাকা ৬৩ পয়সা, ৪০১-৬০০ ইউনিটের জন্য ৮ টাকা ৭০ পয়সা ও ৬০০ ইউনিটের উপরে ৯ টাকা ৯৮ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। গাড়িতে ব্যবহৃত সিএনজির দাম প্রতি ঘনমিটারে ৫ টাকা বাড়িয়ে ৩৫ টাকা করা হয়েছে। একইসঙ্গে শিল্পের ক্ষেত্রে ৫ টাকা ৮৬ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৬ টাকা ৭৪ পয়সা, ক্যাপটিভ ক্ষেত্রে ৪ টাকা ১৮ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৮ টাকা ৩৬ পয়সা, বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে ৯ টাকা ৪৭ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১১ টাকা ৩৬ পয়সা, গাড়িতে জ্বালানি হিসাবে ব্যবহৃত রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস বা সিএনজির দাম প্রতি ঘনমিটার ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩৫ টাকা করা হয়েছে। সার ও বিদ্যুৎ উৎপাদন ছাড়া সব ক্ষেত্রে গ্যাসের এ দাম কার্যকর হবে। আর সেচ ও প্রান্তিক পর্যায় ছাড়া বাকি সবক্ষেত্রে বিদ্যুতের নতুন দাম কার্যকর হবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভোক্তা পর্যায়ে ক্রেতাদের অবস্থা বিবেচনা না করে অযৌক্তিকভাবে গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি সদস্য সচিব অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিষয়ে অনেক গণশুনানি হয়েছে। তাতে অংশগ্রহণকারী সবাই না বাড়ানোর মতামত দিয়েছে। এখন সরকার বিশেষ গোষ্ঠির স্বার্থ রক্ষা করতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি বলেন, “বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমলেও সরকার তেলের দাম না কমিয়ে উল্টো বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। জ্বালানি তেলের দাম কমার কারণে দেশে বিদ্যুতের দাম কমা উচিত, সেখানে দাম বাড়িয়েছে।” আনু মুহাম্মদ বলেন, “যে কমিশন জনস্বার্থে কাজ করেনা সে কমিশনের কোনো দরকার নাই। এ ধরনের কমিশন পুরোটাই অযৌক্তিক।” কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) বিশেষজ্ঞ ও চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড.এম শামসুল আলম বলেন, “গ্যাস ও বিদ্যুতের যে দাম বাড়ানোর হয়েছে, তা কোনভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। এটি একটি জনস্বার্থ বিরোধী সিদ্ধান্ত। সরকারের এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা উচিত। এটি বাতিল করা উচিত। এর ফলে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়