Wednesday, June 24

'আওয়ামী লীগের সবাই মোশতাক হয় নাই'


কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, আওয়ামী লীগের সবাই মোশতাক হয় নাই, বেইমানি করে নাই। মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের ৬৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনাসভায় তিনি এ কথা বলেন। সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘আজ আওয়ামী লীগের গৌরবময় পথচলার ৬৬ বছর। এই ৬৬ বছরের পথচলায় মধ্যে ৩৪ বছর আমাদের দলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন আজকের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এবং আপনাদের পক্ষ থেকে ওনাকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাই।’ সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘এই ৩৪ বছর হুমকি-ধমকি এবং অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে জননেত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। উনি যখন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পান, তখন বয়স ছিল অনেক কম। ছোট দুটি সন্তান। এক ছেলে এবং এক মেয়ের মা। তার ওপর ছিল বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা।’ তিনি আরো বলেন, ‘লন্ডনের ওই দুঃসময়ে শেখ হাসিনা আমাকে সাহায্য করেছেন, সহযোগিতা করেছেন এবং আমাকে বলেছেন, ঘাবড়ানোর কিছু নাই। আমরা আবার আওয়ামী লীগকে গড়ে তুলব এবং বঙ্গবন্ধুর দল আবার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসবে।’ মন্ত্রী বলেন, ‘ কতবার শেখ হাসিনাকে হত্যা করার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু তার পরও তিনি বিচলিত হন নাই। আজও তিনি এই ৬৬ বছরের দলকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। আমি মহান আল্লাহ তালার কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যাতে আরো দীর্ঘায়ু হন এবং সেটা আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাজ কিন্তু শেষ হয় নাই। তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা তিনি প্রতিষ্ঠা করবেন। সেই সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করার জন্য শেখ হাসিনা ৩৪ বছর মানুষের মধ্যে ছিলেন, রাজপথে ছিলেন। ত্যাগ-তিতিক্ষায় জননেত্রী শেখ হাসিনার চেয়ে দ্বিতীয় কোনো ব্যক্তি নেই এই বাংলাদেশে।’ তিনি বলেন, এই গৌরবময় ৬৬ বছরের পথচলা কিন্তু সুখের ছিল না। বারবার আওয়ামী লীগের ওপর আঘাত এসেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে জীবন দিতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর হাজার হাজার কর্মী ও সমর্থক বিভিন্ন আন্দোলনে নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়েছে। রাজনৈতিক দল হিসেবে এমন নজির পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি নেই। এজন্যই বলে, গৌরবময় পথচলার ৬৬ বছর। ‘আমার অনেক স্মৃতি মনে পড়ে আজ। কারণ আমার জন্মই আওয়ামী লীগের ঘরে’- এমন মন্তব্য করে সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু জেলে। আমার বাবা সৈয়দ নজরুল ইসলাম সাহেব তখন অ্যাকটিং প্রেসিডেন্ট। তখন ঢাকায় বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক হতো। তখন আমার বাবার কোনো গাড়ি ছিল না। ময়মনসিংহের স্টেশনে যাওয়ার জন্য আগের দিন রিকশাওয়ালাকে বলতে হতো, আমি কালকে গাড়ি ধরব। তুমি এসে নিয়ে যেয়ো। আমার বাবা রেডি। কিন্তু রিকশা আসে না, আসে না। ‘আমাদের বাড়ি থেকে ময়মনসিংহ স্টেশন ২ কিলোমিটার দূরে উল্লেখ করে তিনি বলেন, হঠাৎ করে আমার বাবা বলে উঠলেন, রিকশা আসুক আর না আসুক, আমাকে যেতেই হবে। কালকে আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক আছে। উনি সুটকেসটা হাতে ধরে মাথায় তুললেন। হেঁটে ময়মনসিংহের ভিতর দিয়ে স্টেশনে চললেন। তাদের নিষ্ঠা ছিল এরকম। তারা বঙ্গবন্ধুর কর্মী ছিলেন, বঙ্গবন্ধুর বন্ধু ছিলেন। জীবনে কোনোদিন তারা বেইমানি করেন নাই। নিজের জীবন দিয়ে প্রমাণ করেছেন। এই গৌরবময় ও গৌরবের ইতিহাসে আওয়ামী লীগের সবাই মোশতাক হয় নাই, বেইমানি করে নাই।’

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়