Wednesday, June 24

যেভাবে কিডনির রোগ প্রতিরোধে করবেন


কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: ৩০ বছর পর প্রতি দশকে ১০ শতাংশ করে কার্যকারিতা কমতে শুরু করে কিডনির। তার উপর ছোট থেকে যে সমস্ত বদ অভ্যাস চলেছে তাকে সেভাবেই চালালে সমস্যা আরও বাড়ে। কাজেই বয়স যাই হোক না কেন, আজ থেকেই সতর্ক হোন। কী কী খেলে, এবং কি পরিমাণ খেলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। জেনে নিন.... কোথায় রাশ টানবেন চিনি খাওয়া কমান৷ কারণ ক্যালোরি যোগানো ছাড়া চিনির আর কোনও গুণপনা নেই৷ অতিরিক্ত খেলে বরং শরীরে ইউরিক অ্যাসিড তৈরির হার বেড়ে যেতে পারে৷ তার হাত ধরে বাড়তে পারে কিডনি ও হৃদরোগের আশঙ্কা। সফট ড্রিঙ্কেও রাশ টানুন৷ কারণ যাঁরা দিনে দুটোর বেশি সফট ড্রিঙ্ক খান তাদের প্রোটিন-ইউরিয়া নামে ইউরিনের সঙ্গে প্রোটিন বেরোনোর সমস্যা হতে পারে। কিডনি খারাপ হওয়ার বেশ বড়ো মাপের লক্ষণ এটি। জলও যদি প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খাওয়া যায় তা প্রাণঘাতী হতে পারে। কিডনি খারাপ হতে পারে কৃত্রিম রঙয়ে রাঙানো খাবার, জাঙ্ক ফুড, হাই প্রোটিন ডায়েট নিয়মিত খেলে৷ অতিরিক্ত রেডমিট খেলে কিডনি ফেলিওয়ের চান্স ৩ গুণ বেড়ে যায়৷ প্রচুর নুন খেলেও সমস্যা আছে। আচার, সস, কৌটোর খাবার ইত্যাদিতে নুন বেশি থাকে বলে নিয়মিত খেলে প্রেশার বাড়তে পারে৷ আর প্রেশার বাড়া মানে কিডনির উপর অতিরিক্ত চাপ। কিডনি বাঁচানোর খাবার খাবারের মোট ক্যালরির ৬০-৬৫ শতাংশ যেন কার্বোহাইড্রেট থেকে আসে৷ দিনে ছোট এক বাটি ভাত, গোটা চারেক রুটি, চিড়ে, মুড়ি, খই এবং দু-তিন রকম শাক-সবজি-ফল খান৷ বয়স ৪০-এর ধারে কাছে এলে ওজনের ১০ শতাংশর বেশি প্রোটিন খাবেন না৷ অর্থাত্‍ ওজন ৬০ কেজি হলে দিনে ৬০ গ্রাম প্রোটিন৷ কী কী খেলে এই হিসেব মিলবে তা দেখে নিন৷ মাছ-মাংস-ডালের ১০০ গ্রাম মোটামুটি ২০ গ্রাম প্রোটিন থাকে৷ ৫০ গ্রাম ওজনের ডিমে থাকে ৬-৬.৫ গ্রাম৷ ১০০ মিলি দই বা দুধে ৪ গ্রাম৷ অর্থাত, সকালে একটা ডিম বা দুধ/দই/ছানা/চিজ খেতে পারেন। দুপুরে ৫০ গ্রামের দু-পিস মাছ বা মাংস আর ডাল-পনির বা দই খেলে একপিস খান৷ রাতেও এক নিয়ম৷ সকালে ছোলা বা মুগ ভেজানো অল্প খেতে পারেন৷ বিকেলেও অল্প ছোলা-বাদাম চলতে পারে। খেয়াল রাখবেন, হ্যাম, সসেজ, বেকন, রাজমা, সয়াবিন, টোফু সবই কিন্তু প্রোটিন৷ একটা খেলে আরেকটা কমিয়ে ব্যালেন্স রাখবেন। সারা দিনে যতোটা নুন আপনি খান তার চেয়ে মাত্র ২ গ্রাম খাওয়া কমিয়ে দিলে কিডনির অসুখের আশংকা কমে যায় ২০ শতাংশ৷ স্বাভাবিক খাবার খেলে মোটমুটি ৭৷ গ্রাম নুন আমাদের খাওয়ার কথা৷ তার বদলে যদি ৫ গ্রাম, এক চা-চামচ নুন খান, আপনার কিডনি আর পাঁচজনের থেকে বেশি সুরক্ষিত থাকবে৷ কিডনি ভালো রাখতে পরিমাণ মতো জল খান৷ কী ধরনের কাজ করেন তার উপর নির্ভর করে দিনে আড়াই-তিন লিটার থেকে ম্যাক্সিমাম ৪ লিটার৷ এর কম খেলে কিডনি স্টোনের প্রবণতা বাড়বে, বেশি খেলে অতিরিক্ত খাটুনিতে কিডনি হাঁফিয়ে পড়বে৷ সতর্ক থাকবেন হাই ক্যালোরি খাবার খেয়ে ওজন বাড়ানোর ব্যাপারেও৷ যতো বেশি ওজন ততো কিডনির ক্ষতি৷ ৬০ কেজি ওজনের একজন মানুষের তুলনায় ১২০ কেজি ওজনের মানুষের কিডনি খারাপ হওয়ার আশঙ্কা দ্বিগুণ৷ কাজেই সুষম খাবার খেয়ে, ভালো করে ব্যায়াম করে ওজন ও কিডনি ঠিক রাখুন৷ কিডনি ভালো রাখার ব্যায়াম কিডনি ভালো রাখতে গেলে একেবারে শুয়ে-বসে থাকা যেমন চলবে না, অতিরিক্ত জিম করলেও বিপদ৷ দিনে ৩০-৪০ মিনিট কার্ডিও এক্সারসাইজ যেমন, ব্রিস্ক ওয়াকিং, সাঁতার, সাইক্লিং ইত্যাদিই যথেষ্ট৷ সঙ্গে মিনিট ২০ যোগা৷ খেলাধুলা করলে তো কথাই নেই৷ এতে টেনশনও কম থাকে৷ কিডনি ভালো রাখার আরেক অব্যর্থ শর্ত৷ এর পাশাপাশি সতর্ক থাকা উচিত ওষুধ-পত্রের ব্যাপারেও৷ ওষুধের বিষে ননস্টেরয়ডাল অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি গ্রুপের ব্যথার ওষুধ নিয়মিত খেলে সমস্যা হতে পারে৷ প্যারাসিটামল সাধারণভাবে ভালো৷ তবে নিয়মিত খাবেন না৷ এ রকম আরও অসংখ্য ওষুধ আছে, যা ডাক্তারি তত্ত্বাবধান ছাড়া খেলে বিপদ হতে পারে৷ এই তালিকায় রয়েছে বেশ কিছু অ্যান্টিবায়োটিক, মৃগী বা টিবির ওষুধ, স্টেরয়েড, ত্বকের রং হালকা করার ক্রিম ইত্যাদি৷ নেশা ও কিডনি নেশা করতে গিয়ে নেফ্রাইটিস হয়ে রেনাল ফেলিওর হয়ে গিয়েছে এমন উদাহরণও আছে অনেক৷ অ্যাম্ফিটামিন, হেরোইন, কোকেন, গাঁজা, ভাং এমনকী দীর্ঘ দিন ধরে প্রচুর পরিমাণে মদ খেয়ে গেলেও বিপদ হতে পারে৷ আবার দেশি মদে, যেখানে মিথাইল অ্যালকোহল ভেজাল মেশানো হয়, তা খেলে সঙ্গে সঙ্গেই কিডনি ফেইল করতে পারে৷ বিপদ হয় ধূমপান থেকেও৷

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়