Saturday, March 14

খালেদার পাশে নেই তারা!


ঢাকা: দীর্ঘ দিন পর নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখলেন দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এ নিয়ে গত দুই দিন ধরে সরগরম ছিল রাজনৈতিক অঙ্গন।খালেদার মুখোমুখি হওয়ার জন্য উন্মুখ হয়েছিলেন সাংবাদিকরা।প্রস্তুত ছিলো শাসক দল আওয়ামী লীগও। টানা আন্দোলনের মধ্যে হঠাৎ খালেদার এই সংবাদ সম্মেলন নিয়ে বাড়তি মনযোগ ছিল সর্বস্তরের মানুষের। কি বলতে পারেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী-তা জানার জন্য সবারই চোখ ছিল গুলশানের কার্যালয়ের দিকে। তবে লিখিত একটি বক্তব্য পাঠ করে সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের জবাব না দিয়ে খালেদার হঠাৎ সম্মেলনস্থল ত্যাগ করায় জানা গেল না অনেক কিছুই। দলের চেয়ারপারসনের এই সম্মেলন নিয়ে দলের মধ্যেও একধরণের ক্ষোভ বিরাজ করছে।বিএনপির মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে যে অবিশ্বাস সন্দেহ দানা বাঁধছে বলে শোনা যাচ্ছিল তার নমুনাও দেখা গেল এই সংবাদ সম্মেলনে। দলের নীতি নির্ধারণী অর্থাৎ স্থায়ী কমিটির কাউকেই দেখা গেল না খালেদার জিয়ার পাশে। টানা আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকেই ধীরে ধীরে দলের সিনিয়র নেতারা খালেদার কাছ থেকে দূরে সরে যেতে থাকেন। আন্দোলন চললেও এ নিয়ে আলোচনা পর্যালোচনা করার জন্য দলের কোনো পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গেই খালেদাকে বৈঠকে বসতে দেখা যায়নি।কিছু দিন আগে খালেদার ছোট ছেলের মৃত্যুর পর স্থায়ী কমিটির কয়েকজন নেতাকে গুলশানের কার্যালয়ে দেখা গেলেও তারা শোাকার্ত খালেদা জিয়ার সাক্ষাৎ পাাননি।এ নিয়েও নানা কথা শোনা যায়। দীর্ঘ দিন ধরে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে “আটকা” পড়া দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম ছাড়া আর তেমন কাউকেই দেখা গেল না। এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এমএ কাইয়ুম এবং সহ মহিলা বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানাকে দেখা যায় খালেদার পাশে। দলের সিনিয়র নেতারা যারা বেগম খালেদা জিয়ার যেকোনো অনুষ্ঠানে সাধারণত সরব থাকেন তাদের মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আরএ গণি, ড. আব্দুল মঈন খান, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহাবুবুর রহমান, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী, ব্যারিস্টার শাজাহান ওমর প্রমুখ নেতাদের কাউকে দেখা যায়নি। তবে মওদুদ আহমদ বেশ কিছু দিন ধরেই রাজনৈতিক কর্মসূচি এড়িয়ে চলছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে স্থায়ী কমিটির কেনো দলের সিনিয়র কোনো নেতাকেই সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়নি বা আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। যেচে কয়েকজন সাবেক এমপি খালেদার কার্যালয়ে ঢোকার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত তারা ব্যর্থ হন। খালেদা জিয়ার প্রেস উইংয়ের সদস্যরা বাইরের কাউকেই ভেতরে ঢুকতে দেয়নি। তবে পূর্ব ঘোষিত এ সংবাদ সম্মেলনে নতুন কোনো দিক নির্দেশনা দেননি বিএনপি চেয়ারপারসন। গত ৫ জানুয়ারি তাৎক্ষণিকভাবে একক সিদ্ধান্তে অনির্দিষ্টকালের অবরোধ ডাকেন খালেদা জিয়া। পরবর্তীতে সেটা ২০ দলীয় জোটের আন্দোলন বলে চালানো হয়। এরপর সারা দেশে ব্যাপক সহিংসতার পরিস্থিতিতে এ কর্মসূচি নিয়ে তখন থেকেই দলের মধ্যে দ্বিমত ছিল। এনিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসন তার বক্তব্য তুলে ধরেছেন। সেটাই আমাদের বক্তব্য। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদেরকে ওনি যখন ঢাকেন তখনই আমরা ছুটে যাই। আজ হয়তো তিনি প্রয়োজন মনে করেননি তাই ডাকেননি। আমরাও যাইনি।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়