Sunday, November 16

অপি যেন উৎসবের চাঁদ


কৃষ্ণকান্ত চক্রবর্তী 'মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?' রবি ঠাকুরের গানের মতো করেই বলতে হয়, মাঝে মাঝে তার দেখা পাওয়া যায়। কালে-ভদ্রে কোনো নাটকে অভিনয় করেন তিনি। কথা হচ্ছে অভিনেত্রী ও শিক্ষক অপি করিমকে নিয়ে। বর্তমানে শিক্ষকতা নিয়ে বেশ সিরিয়াস তিনি। আশির দশকের সেই 'সকাল-সন্ধ্যা' নাটকের 'পারুল' চরিত্রের অপি করিম কি আগের অপিই আছেন? সকাল-সন্ধ্যার পর 'শুকতারা' ও 'আপনজন'-এর মতো বিটিভির জনপ্রিয় দুটি ধারাবাহিকে তিনি অভিনয় করেন। এরপর অনেক দিনের বিরতি। ১৯৯৭ সালে একটি টুথপেস্টের বিজ্ঞাপন চিত্রের মডেল হওয়ার মধ্য দিয়ে অপি আবারও ১৯৯৯ সালে আনন্দধারা ম্যাগাজিনের মিস ফটোজেনিক পুরস্কারে ভূষিত হন। একই বছর তেপান্তরের রূপকথা টেলিফিল্মে অভিনয় করেন। এরপর থেকে তার অভিনয় চলতেই থাকে। মঞ্চেও অভিনয় করার ফলে তিনি গ্রহণযোগ্যতা পেতে শুরু করেন। গুজবও রটে যায়, নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়ের 'রক্তকরবী' নাটকের জন্য প্রথমে অন্য অভিনেত্রীকে সুযোগ দেয়া হয়েছিল। তারা পারেননি। রক্তকরবীর নন্দিনী চরিত্রে অভিনয় করার জন্য যেসব গুণের প্রয়োজন, তা পাওয়া গেল অপির মধ্যেই। বুয়েটের শিক্ষাজীবন শেষ করে শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। নেশা কিন্তু থাকে অভিনয়ই। শিক্ষকতার পাশাপাশি অভিনয় চলতে থাকে। ভালোই চলছিল সব। বিয়েটা সবকিছু অনিয়মিত করে দিল। জাপান প্রবাসী ড. আসির আহমেদের সঙ্গে বিয়ে, বিদেশ যাত্রা, ফিরে আসা, বিচ্ছেদ_ এসব ঘটে গেল পরপর। বিয়েটা তার না টিকলেও ভালো অভিনেত্রী হওয়ার গুণে এবং ভক্ত-দর্শকদের কল্যাণে মিডিয়ায় অবস্থান ঠিক ছিল। ২০০৭ সালের পর আবারও ২০১১ সালে তার বিয়ে হয়। বিয়ের বিষয়টি জানাজানি হওয়ার আগে থেকেই প্রেম চলছিল পরিচালক মাসুদ হাসান উজ্জ্বলের সঙ্গে। প্রথম বিয়েটি পরিবারের সম্মতিতে হলেও দ্বিতীয় বিয়েটি প্রেম করেই করেন অপি। তবে এ বিয়েটিও টেকেনি। অভিনয়েও অনিয়মিত হয়ে গেলেন। তবে টিকে গেল শিক্ষকতা। তার ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে জানা গেল, অপি ম্যাম যখন পড়ান, তখন বোঝাই যায় না, তিনি একজন অভিনেত্রী। ক্লাসে তিনি ভিন্ন এক অপি করিম। একবার অপি মিডিয়ায় বলেছিলেন, 'আমি একটা সহজ জীবন চাই। চাকরি করব, অফিস থেকে বাসায় ফিরে সংসার করব, পড়ব, সিনেমা দেখব। নিজের জীবনটা নিজের মতো যাপন করব। অভিনয় করলে এসব করা যায় না। সারাক্ষণ শুধু শুটিং আর শুটিং। শুটিং করলে আমি পড়তে পারি না। একদিন কোনো বই না পড়তে পারলে নিজেকে অশিক্ষিত মনে হয়।' তার বক্তব্য শুনে অনেকেই অবাক হয়েছিলেন। অনেকেই বলেছেন, এতদিন এ কথা কোথায় ছিল? তার জীবনে এত দুর্ঘটনা ঘটার পরও মিডিয়া তাকে সুযোগ দিয়েছে। তারপরও মিডিয়ার প্রতি এমন আচরণ কেন? এরপর তিনি এও বলেছেন, তিনি নির্মাতা হতে চান। ভালো গল্প পেলে নাটক বানাবেন। তাও না হয় মানা গেল। এদিকে এবার বিজয় দিবস উপলক্ষে 'বাংলাদেশ' নামে মাহমুদ দিদারের একটি নাটকে অভিনয় করছেন তিনি। শত নাটকের ভিড়ে হাতেগোনা দুই-একটি নাটক করছেন তিনি। দর্শকদের বঞ্চিতও করছেন না, তার শিক্ষার্থীদের তো নয়ই। এদিকে তার শুভাকাঙ্ক্ষীরা আশায় আছেন, অপি আবারও নিয়মিত হবেন। অভিনয়, না হয় পরিচালনায়।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়