Thursday, November 27

খুলনা মহানগর আ.লীগের সম্মেলন শনিবার


খুলনা: খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের আর মাত্র একদিন বাকি। দীর্ঘ এক দশক পর বহুকাঙ্খিত এই কাউন্সিল ২৯ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। দল ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় দীর্ঘদিন পর সম্মেলন হওয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে সম্মেলনের আয়োজন, প্রচার প্রচারণা এবং পদ-পদবীর জন্য নেতাকর্মীরা দেদারসে খরচ করছেন বিপুল পরিমাণ অর্থ। শেষ সময়ে এসে কাউন্সিলরদের ম্যানেজ করতে সব প্রার্থীরাই মাঠে নেমেছেন মোটা অংকের অর্থ নিয়ে। এ টাকার পরিমাণ কোটি টাকারও বেশি বলে জানিয়েছেন সাধারণ নেতাকর্মীরা। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে নেতানেত্রীদের ছবিসহ রং-বেরঙের প্ল্যাকার্ড, ব্যানার, ফেস্টুনে আর পোস্টার ও তোরণে ছেয়ে গেছে খুলনার সড়ক-মহাসড়কগুলো। তবে নেতাদের সমর্থনে দলের কিছু বিতর্কিত ব্যক্তি প্ল্যাকার্ড টানিয়েছে। এ নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। নাম প্রকাশ না করা শর্তে দলের একাধিক নেতাকর্মী জানিয়েছেন, এ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দলের কিছু নেতাকর্মী নগরীতে ব্যাপক চাঁদাবাজি শুরু করেছে। নগর আওয়ামী লীগের কয়েকজন শীর্ষ নেতার আশীর্বাদপুষ্ট কিছু বিতর্কিত ব্যক্তি তাদের অপকর্ম ঠিক রাখতে বড় বড় প্ল্যাকার্ড ও বিভিন্ন সড়কে তোরণ নির্মাণ করে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রার্থীর খরচ বহন করতেও তারা চাঁদাবাজির অর্থ তাদেরকে সরবরাহ করছেন- এমন অভিযোগ ঘুরে ফিরছে নগরজুড়ে। এ বিষয়টি স্বীকার করে নগর আওয়ামী লীগের সদস্য ও খুলনা সদর থানা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী সাইফুল ইসলাম বলেন, নগরের চিহ্নিত চাঁদাবাজ, মাদক ব্যবসায়ী ও ছিনতাইকারী তাদের প্রশ্রয়দানকারী নেতাদের পক্ষে নগরীতে বড় বড় তোরণ নির্মাণ করেছে। এ নিয়ে দলের সাধারণ নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। দলের একাধিক নেতাকর্মীর সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, সভাপতি পদে বর্তমান সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক মোটামুটি নিশ্চিত হলেও সাধারণ সম্পাদক পদে মিজানুর রহমান চ্যালেঞ্জের মুখে।এ পদে মিজান ছাড়াও আরও দু’জন প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে জোরালোভাবে মাঠে অবস্থান করছেন। তারা হলেন- খুলনা সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও নগর যুবলীগের আহ্বায়ক সরদার আনিসুর রহমান পপলু। দলের সবাই এখন তাকিয়ে রয়েছেন এ পদটির দিকে। নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও খুলনা সদর আসনের সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান জানান, সম্মেলনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। শান্তিপূর্ণভাবেই সম্মেলন হবে। তিনি বলেন, এবার সম্মেলনকে কেন্দ্র করে তেমন ব্যয় নেই। আমরা কিছু ব্যানার পোস্টার লাগিয়েছি। একটা স্টেজ করা হয়েছে। আর খাবারের কোন ব্যবস্থা থাকছে না। কাউন্সিলদের ম্যানেজ করতে অর্থ ছড়ানোর বিষয়ে তিনি বলেন, এই বিষয়টি সম্পর্কে তেমন কোন কিছু আমার কানে আসেনি। তবে তিনি বলেন, এটা হতেও পারে আবার নাও হতে পারে। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে কেউ যদি চাঁদাবাজি করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই দলের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি। এদিকে সম্মেলন সফল করতে দলের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। ২৯ নভেম্বর সকাল ১০টায় খুলনা সার্কিটহাউস ময়দানে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন এবং বিকালে অফিসার্স ক্লাব মিলনায়তনে দ্বিতীয় অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম সকালে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ১৫ জানুয়ারি খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সর্বশেষ ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে মহানগর কমিটিতে তালুকদার আবদুল খালেক সভাপতি ও মিজানুর রহমান মিজান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়