Thursday, November 6

রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব দুর্বল হয়ে পড়ছে : খালেদা


নিজস্ব প্রতিবেদক : আধিপত্যবাদী শক্তি দেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ‘শিখন্ডি’ বসিয়ে একের পর এক গোপন চুক্তির মাধ্যমে গোটা দেশকে গ্রাস করতে চাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।তিনি বলেন, এই জবরদখলকারী শিখন্ডি সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব দিনের পর দিন ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে পড়ছে। ভোটারবিহীন সরকারের নতজানু নীতির কারণেই আবহমানকালের কৃষ্টি, ঐতিহ্য, ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর বাধাহীন আগ্রাসন চলছে। ৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে বিএনপি প্রধান এসব মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, এইভাবে তারা দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করে প্রভুত্ব কায়েম রাখতে চায়। সরকার জবরদস্তি করে ক্ষমতা দখল করে ‘গণতন্ত্রের পক্ষে’ লড়াকু নেতা-কর্মীদেরকে বিভৎস নির্মমতায় দমন করছে বলে অভিযোগ করেন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক অধিকারগুলোকে নির্দয় ফ্যাসিবাদী শাসনের জাঁতাকলে পৈশাচিকভাবে পিষ্ট করছে। ৭ নভেম্বরের চেতনায় জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান বিএনপি চেয়ারপারসন। একই সঙ্গে আধিপত্যবাদী আগ্রাসন প্রতিরোধ করে জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা এই মূহুর্তে অত্যন্ত জরুরি বলেও মনে করেন তিনি। ৭ নভেম্বরের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করতে গিয়ে বাণীতে প্রাক্তন এ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ দিন জাতীয় জীবনের এক ঐতিহাসিক দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনে জাতীয় স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষার দৃঢ় প্রত্যয় বুকে নিয়ে সৈনিক-জনতা রাজপথে নেমে এসেছিলো। তাই ৭ নভেম্বরের ঐতিহাসিক বিপ্ল¬ব অত্যন্ত তাৎপর্যমন্ডিত।’ তিনি বলেন, স্বাধীনতাত্তোর রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা, তৎকালীন ক্ষমতাসীন মহলের নিজেদের স্বার্থের অনুকূলে দেশের স্বাধীনতা বিকিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা করা হয়েছে। ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য মানুষের বাকশক্তি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে গলাটিপে হত্যা করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করা হয়। ফলে দেশে চরম অশান্তি ও হতাশা নেমে আসে। বাকশালী সরকার চরম অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী পন্থায় মানুষের ন্যায়সংগত প্রতিবাদকে দমন করে। বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, জাতির এই চরম সংকটকালে ১৯৭৫ এর ৩ নভেম্বর আধিপত্যবাদের এদেশীয় এজেন্টদের কুটকৌশলে মহান স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানকে সপরিবারে ক্যান্টনমেন্টে বন্দি করা হয়। এই অরাজক পরিস্থিতিতে জাতির স্বাধীনতা রক্ষায় অকুতোভয় দেশপ্রেমিক সৈনিক এবং জনতার ঢল রাজপথে এক অনন্য সংহতির স্ফুরণে ৭ নভেম্বর জিয়া মুক্ত হন।’ তিনি বলেন, এই পটপরিবর্তনে জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতা সুরক্ষিত হয় ও গণতন্ত্র অগ্রগতির পথে এগিয়ে যায়, বহুদলীয় গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়। মানুষের মনে স্বস্তি ফিরে আসে। খালেদা জিয়া বলেন, আধিপত্যবাদী শক্তি ও তাদের এদেশীয় অনুচররা উদ্দেশ্য সাধনের পথে কাঁটা মনে করে ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াকে হত্যা করে। জিয়া শাহাদাত বরণ করলেও তার আদর্শে বলীয়ান মানুষ দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় এখনও দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে’ দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান খালেদা জিয়া। অপর এক বাণীতে দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ’৭৫-এর ৭ নভেম্বর সৈনিক-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবে জাতিসত্বার স্বাধীন অস্তিত্ব ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথচলা নিশ্চিত হয়। তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের এ দিনে আধিপত্যবাদী শক্তির নীল নকশা প্রতিহত করে এদেশের বীর সৈনিক ও জনতা। সম্মিলিত প্রয়াসে জনগণ নতুন প্রত্যয়ে জেগে উঠে। ৭ নভেম্বর বিপ্লবের সফলতার সিঁড়ি বেয়েই আমরা বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং অর্থনৈতিক মুক্তির পথ পেয়েছি। আর সেজন্যই জাতীয় জীবনে ৭ নভেম্বরের গুরুত্ব অপরিসীম।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়