Sunday, October 26

সালাম পারস্পরিক ভালোবাসা বাড়ায়


মারামারি-কাটাকাটি, হিংসা-বিদ্বেষ, হত্যা-গুম ইত্যাদিতে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে আমাদের সামাজিক ব্যবস্থা। এমন একটি দিন বের করা প্রায় অসম্ভব, আরও ভালো করে বললে কাল্পনিক; যেদিন এরূপ কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে। অশান্তির এ দাবানল দিন দিন বেড়েই চলছে। হত্যা থেকে রক্ষা পাচ্ছে না রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, শ্রমিক এমনকি চার-পাঁচ বছরের শিশুও। ইসলামের সোনালি শাসনামলের প্রথম খলিফা হজরত আবু বকর (রা.) এক বছর ধরে আদালতে বসে আছেন কিন্তু কী আশ্চর্য কেউ কোনো মামলা-মোকাদ্দমা নিয়ে আসছে না। হজরত ওমর ইবনে আবদুল আজিজ (রহ.) হজের সময় ঘোষণা করতেন, কেউ কারও উপরে জুলুম করেছে প্রমাণ দিতে পারলে তাকে পুরস্কৃত করা হবে। তাদের মাঝে পরস্পরে কী অপূর্ব মিল-মহব্বতই না ছিল। এ যুগে কি তা কল্পনাও করা সম্ভব? আজ আমাদের অন্যের ভালো দেখলে হিংসা লাগে। কারও সঙ্গে মনোমালিন্য হলে সামান্য কারণে হত্যা করতেও দ্বিধাবোধ করি না। মুসলমান হয়ে এটাই কি আমাদের চরিত্র হওয়া উচিত? রাসূল (সা.) একদিন সাহাবিদের লক্ষ্য করে বললেন, 'তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, যে পর্যন্ত না পরিপূর্ণ ঈমানদার হও, আর পরিপূর্ণ ঈমানদার হতে পারবে না, যে পর্যন্ত না পরস্পরকে ভালোবাস। আমি কি তোমাদের পরস্পরে ভালোবাসা ও মহব্বত বৃদ্ধির একটি আমল বলে দেব, তা হলো সালাম। (মেশকাত শরিফ)। তাই বলা যায়, যে সমাজে সালামের প্রচলন থাকবে সেটি জান্নাতি সমাজে পরিণত হবে। সালামের আদান-প্রদান করতে কোনো কষ্ট হয় না, বরং বিরাট একটি সুন্নতের ওপর আমল হয়। শেষ জামানায় একটি সুন্নতের ওপর আমল করলে ১০০ শহীদের সওয়াব পাওয়া যাবে বলে হাদিসে উল্লেখ রয়েছে। সালামের দ্বারা অন্তরে শান্তি অনুভূত হয়। পরস্পরে মনোমালিন্য দূর হয়। সালাম দেয়ার দ্বারা ৯০ নেকি ও উত্তর দেয়ার দ্বারা ১০ নেকি অর্জন হয়। সর্বদা আগে সালাম দেয়া উত্তম, কেননা যে আগে সালাম দেয় সে অহঙ্কার থেকে মুক্ত হয়। রাসূল (সা.) সর্বদা আগে সালাম দিতেন। সালাম স্পষ্টভাবে উচ্চারণ করে বলা বাঞ্ছনীয়। তাই আসুন, আমরা পরস্পর সব ধরনের হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে, পরস্পর পরস্পরকে ভালোবেসে, সালামের ব্যাপক প্রচলন ঘটিয়ে, সুন্নতের ওপর আমল করে জান্নাতে যাওয়ার পথ সুগম করি। হাফেজ মিযান বিন আবদুল মজিদ

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়