Friday, October 4

ইতালিতে জাহাজডুবি: মৃতের সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়ে

ঢাকা : ইতালির লাম্পেদুসা দ্বীপের কাছে একটি জাহাজ দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। সিসিলির উপকূলে রক্ষীরা এখনও পর্যন্ত উদ্ধার করেছে ১৩০টি মৃতদেহ। নিখোঁজদের খোঁজে এখনও উদ্ধারকারীদের অভিযান চলছে। এদিকে ইতালির প্রধানমন্ত্রী এই ঘটনায় দেশটিতে একদিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন। 

শুক্রবার ইতালির সব স্কুলে পালন করা হয়েছে এক মিনিট নীরবতা। পাঁচশোরও বেশি আফ্রিকান অভিবাসী নিয়ে জাহাজটি লাম্পেদুসা দ্বিপের কাছে বৃহস্পতিবার আগুন ধরে ডুবে যায়। খবর বিবিসির।

জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর বলছে, জাহাজটি যাত্রা শুরু করেছিলো লিবিয়া থেকে এবং এর যাত্রীরা মূলত আফ্রিকার ইরিত্রিয়া ও সোমালিয়ার অধিবাসী। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার একজন মুখপাত্র সিমোনা মসকারেলি বলেন, জাহাজে আগুন লাগার পর আরোহীরা সবাই হুড়োহুড়ি করে জাহাজের একপাশে চলে গেলে জাহাজটি ডুবে যায়। সমুদ্র থেকে এপর্যন্ত দেড়শ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র লরেন্স জোলস জানান, লিবিয়ার মিসরাতা বন্দর থেকে ছেড়ে আসা ওই নৌকার যাত্রীদের অধিকাংশই ছিলেন ইরিত্রিয়া ও সোমালিয়ার নাগরিক। ৬৬ ফুট দৈর্ঘ্যের ওই নৌকায় চড়ে তারা ইউরোপে আসছিলেন অভিবাসনের আশায়।
দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া আরোহীদের বরাত দিয়ে লেমপেদুসার মেয়র গিউসি নিকোলিনি জানান, বৃহস্পতিবার প্রথম প্রহরে উপকূল থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে থাকতে নৌকার ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। ওই পরিস্থিতিতে কোস্ট গার্ডের দৃষ্টি আকর্ণ করার জন্য কেউ একজন নৌকার ওপর আগুন ধরায়, যা পরে ছড়িয়ে পড়ে। এতে আতঙ্কিত যাত্রীরা সবাই একদিনে সরে গেলে উল্টে যায় নৌকা।
ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যানজেলিনো আলফানো জানিয়েছেন, নৌকার ৩৫ বছর বয়সী সোমালীয় সারেংকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত এপ্রিলেই তাকে ইতালি থেকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছিল।  

সিসিলির কাছে অবস্থিত লাম্পেদুসা দ্বিপটি আফ্রিকা থেকে অবৈধ অভিবাসীদের ইউরোপে প্রবেশের একটি প্রধান পথ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। জাতিসংঘ বলছে, ভূমধ্যসাগর দিয়ে ইউরোপ যাবার সময় লাম্পেদুসা দ্বীপের কাছে ১৯৯০ সাল থেকে এ পর্যন্ত ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছে।
জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা বলছে, শুধুমাত্র এ বছরই প্রায় ৩০ হাজার আশ্রয়প্রার্থী ইতালির উপকূল দিয়ে ইউরোপে ঢুকেছে যাদের বেশিরভাগই এসেছে লিবিয়া হয়ে। সংস্থাটি বলছে আফ্রিকার দারিদ্র্য-পীড়িত দেশগুলোর হাজার হাজার মানুষ প্রতিবছর এ ধরনের বিপজ্জনক যাত্রা করে ইতালিতে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করে থাকে।

গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, তিউনিসিয়া ও সিসিলি দ্বীপের মাঝখানে ভূমধ্যসাগরে লেমপেদুসাই ইউরোপে প্রবেশের পথে প্রথম দ্বীপ। প্রতিবছর হাজার হাজার অবৈধ অভিবাসী ও আশ্রয়প্রার্থী এই পথ দিয়ে ইউরোপে ঢোকে। গত সপ্তাহেই ইতালির সিসিলি উপকূলে যাওয়ার চেষ্টার সময় ১৩ অভিবাসী ডুবে মারা যান।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়