Monday, August 19

দুর্নীতির অভিযোগে ২ শিক্ষককে বিদ্যালয় ত্যাগের নির্দেশ


রায়পুর (লক্ষ্মীপুর): দুর্নীতি-অনিয়ম ও অন্য শিক্ষককে ভুয়া সার্টিফিকেটের নামে টাকা নেয়ার অভিযোগ ওঠেছে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর-রামগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী মাসিমপুর এএলএম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান ও সহকারি প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই দুই প্রধান শিক্ষককে তিন মাসের মধ্যে সকল কাগজপত্র বুঝিয়ে দিয়ে বিদ্যালয় ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন ম্যানেজিং কমিটি। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় চলছে। বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও শিক্ষাকার্যক্রম ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। 
সোমবার চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার দত্রা গ্রামের মৃত ছফিউল্যার ছেলে মোঃ আবদুর রবের লিখিত অভিযোগে জানা যায়, তার কাছ থেকে ২০১০ সালের ৬ জুন তিন লাখ টাকার বিনিময়ে বিএড সার্টিফিকেট এনে দেন মাসিমপুর এএলএম উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক (ইংরেজি) মাহবুবুর রহমান লিটন। এর সুবাধে তিনি ওই উপজেলার কাঞ্চনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের বিএড শিক্ষক হিসেবে তিন বছর কর্মরত ছিলেন এবং স্কুল থেকে বেতন ভোগ করতেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সরকারি তালিকা (এমপিও) না হওয়ায় তার চাকরী চলে যায়। পরে তিনি শিক্ষক লিটনের কাছে টাকা ফেরত চাইলে তিনি দেব, দিচ্ছি বলে কালক্ষেপন করতে থাকেন। অতঃপর তিনি বাধ্য হয়ে চলতি বছরের ১৪ আগষ্ট ওই টাকাগুলো ফেরত পেতে লিটনের বিরুদ্ধে তার বিদ্যালয়ের কমিটির সভাপতি কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। 
এছাড়াও সহকারি প্রধান শিক্ষক লিটন তার কাছে প্রাইভেট পড়া শিক্ষার্থীরা অকৃতকার্য হলেও তাদেরকে কৃতকার্য করা এবং যারা তার কাছে প্রাইভেট পড়ত না তারা কৃতকার্য হলেও তাদেরকে অকৃতকার্য করা হত। পরে পরিক্ষার কাগজ পরীক্ষা করে প্রমাণিত হওয়ায় লিটনের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্ণীতি খুঁজে পান পরিচালনা কমিটি। প্রধান শিক্ষকের যোগসাজস এবং তার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের আয়-ব্যায় খাতে নানা অসঙ্গতিসহ দুর্ণীতি-অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়। 
এ ব্যাপারে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবদুর রাজ্জাক পাটওয়ারী মোবাইল ফোনে জানান, প্রধান শিক্ষক প্রায় তিন বছর ও সহকারি প্রধান শিক্ষক আড়াই বছর আগে এ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। এরপর থেকেই তারা দুইজনেই যোগসাজস হয়ে বিদ্যালয়ে নানা অনিয়ম দুর্ণীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তাদের অপসারণে অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী কয়েকবার সমাবেশ ও বিক্ষোভ করেছে। অবশেষে সহকারি প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তারই পার্শ্ববর্তী অন্য এক বিদ্যালয়ের  আবদুর রব নামের এক শিক্ষককের কাছ থেকে বিএড সার্টিফিকেট দেয়ার নামে প্রায় ৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ পাওয়া যায়। তাদের দুই প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্ণীতি, অনিয়ম প্রমাণিত হওয়ায় তাদেরকে তিন মাসের মধ্যে সকল হিসাব-নিকাশ বুঝিয়ে দিয়ে বিদ্যালয় ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে প্রধান শিক্ষক নারায়ন চন্দ্র দেবনাথ বলেন, বিদ্যালয়ের সকল কিছু কমিটির সভাপতির নির্দেশ মোতাবেক না করায় তিনি আমার বিনুদ্ধে ওঠেপড়ে লেগেছেন। আমি কোনো অন্যায় দুর্ণীতি করিনি। সহকারি প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান লিটনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করছেন না।
রামগঞ্জ উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ কামাল হোসেন মোবাইল ফোনে জানান, এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। তবে সহকারি প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মৌখিকভাবে কয়েকটি অভিযোগ শুনেছি। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটি তাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।---ডিনিউজ

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়