Tuesday, March 26

:: মঙ্গলবার মহান স্বাধীনতা দিবস ::

২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে ১৯৭১ সালের এই দিনে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের স্বাধীন অস্তিত্ব ঘোষিত হয়েছিল। এ ঘোষণার মাধ্যমে স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল জাতি। দীর্ঘ নয় মাস রক্তপাত আর অজস্র প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয় মহান স্বাধীনতা ।



এবার জাতি স্বাধীনতার ৪২ বছর পূর্তি পালন করছে। একাত্তরের অর্জন বলতে একটি ভাষা, সার্বভৌম ভূমি, মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস আর বাক স্বাধীনতা। অবশ্য মুক্তিযুদ্ধের চেতানা বলতে যে অর্থনৈতিক মুক্তি, বৈষম্যহীন, ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত সমাজ, একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রব্যবস্থার কথা বলা হয় গত ৪২ বছরে তার কতোটা অর্জিত হয়েছে তা নিয়ে বিতর্ক এখনো রয়েই গেছে।



স্বাধীনতার ৪২ বছর পরও আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারছে না। আগামী জাতীয় সংসদ্য নিবার্চন নিয়ে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল নিয়েছে দুই মেরুতে শক্ত অবস্থান। আওয়ামী লীগ দলীয় সরকারের অধীনে নিবার্চন করতে চায়। অপরদিকে বিএনপি চায় নিরপেক্ষ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার।



এদিকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবিতে ২৮ ও ২৯ মার্চ ৩৬ ঘণ্টার হরতালের ডাক দিয়েছে।



অপরদিকে বহুপ্রত্যাশীত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করলেও বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। ইতিমধ্যে একটি রায় বিতর্কিত হয়েছে। যার প্রতিক্রিয়ায় শাহবাগ চত্বরে গণজাগরণ মঞ্চের সূচনা।



২৬ মার্চ মঙ্গলবার, সরকারি ছুটির দিন। নানা আনুষ্ঠানিকতায় সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে স্বাধীনতা দিবস পালিত হবে। জাতি বিনম্রশ্রদ্ধায় স্মরণ করবে যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহীদদের, যারা জীবনকে তুচ্ছ করে ছিনিয়ে এনেছিল স্বাধীনতার লাল সূর্য।



স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি মো.আবদুল হামিদ এডভোকেট, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।



সূর্যোদয়ের সময় তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর এলাকায় ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু হবে। সব সরকারি-বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে সূর্যোদয়ের সময় পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে মহান শহীদদের প্রতি জাতির শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব শুরু হবে । অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিরোদলীয় নেতা, রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংগঠনের প্রতিনিধি ও সর্বসাধারণের শ্রদ্ধাঞ্জলির ফুলে ভরে উঠবে জাতীয় স্মৃতিসৌধ।



১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ পশ্চিম পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যখন পূর্ব পাকিস্তানের নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর বর্বরের মতো ঘৃণ্য হামলা চালায়। সে রাতে পশ্চিম পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে পূর্ব পাকিস্তানের জনপ্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বন্দি হন। পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতারা চলে যান আত্মগোপনে। জনগণ তখন কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ে। এই সঙ্কটময় মুহূর্তে মেজর (তৎকালীন) জিয়াউর রহমান পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করে বিদ্রোহ করেন এবং ২৭ শে মার্চ তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র পাঠ করেন।



১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধিকার আন্দোলন ও ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার দীর্ঘ সংগ্রামে বারবার দেশের মাটি রক্তে ভিজিয়ে পবিত্র করেছেন বাংলা মায়ের দামাল ছেলেরা। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ঐতিহাসিক ভাষণে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ জাতিকে এ মুক্তির সংগ্রামে অংশ নিতে নির্দেশ দিয়ে তিনি যার যা কিছু আছে তা-ই নিয়ে শত্রুর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ কালরাত থেকে পাকিস্তানি হানাদারদের পাশাপাশি তাদের এ দেশীয় দোসর শান্তি কমিটি, রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনীর নিষ্ঠুর হামলার শিকার হয় বাঙালি জাতি।



অবশেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ-ভারত যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে হানাদার পাকিস্তান বাহিনী। পৃথিবীতে মানচিত্রে নতুন একটি দেশের অভ্যূদয় ঘটে যার নাম বাংলাদেশ।(banglamail24.com)

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়