Thursday, January 24

:: পুলিশ বাহিনীর জন্য পৃথক বিভাগ গঠিত হবে : প্রধানমন্ত্রী ::


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পুলিশ বাহিনীর কর্মকাণ্ড অধিকতর দক্ষতার সঙ্গে সমন্বয় করতে এই বাহিনীর জন্য একটি পৃথক বিভাগ গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী গতকাল বুধবার 'পুলিশ সপ্তাহ-২০১৩' উপলক্ষে তাঁর কার্যালয়ে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে ভাষণকালে বলেন, আমি মনে করি পুলিশ বাহিনীর জন্য পৃথক একটি বিভাগের প্রয়োজন। এটি যুক্তিসঙ্গত, যা আমাদের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে। কিন্তু এজন্য সময় প্রয়োজন। তিনি বিষয়টি আগামী বাজেটে অন্তর্ভূক্ত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়ে বলেন, এটি আগামী বছর সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়নের সহায়ক হবে। 'দেশের সার্বিক উন্নয়নে পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা সীমাহীন'-উল্লেখ করে শেখ হাসিনা সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ দমনে পুলিশের ভূমিকায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, অনেক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও পুলিশ বাহিনী বিশেষ করে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ দমনসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে। প্রধানমন্ত্রী সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব, আন্তরিকতা ও দক্ষতার সাথে জনগণের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে তাদের আস্তা ও বিশ্বাস অর্জন করতে পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান। শেখ হাসিনা বলেন, প্রযুক্তি ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের সাথে অপরাধের ধরন ও কৌশল পাল্টাচ্ছে। অপরাধের সাথে জড়িত মানুষের সংখ্যা বেশি নয়, তবে তাদের অপরাধের ধরন এমন যে তারা সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের শান্তি বিনষ্ট করতে পারে। তিনি বলেন, 'বিএনপির পৃষ্ঠপোষকতায় জামায়াত-শিবির চক্র যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করতে দেশব্যাপী এক অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। তারা পুলিশের ওপর বর্বর হামলা চালিয়েছে। কিন্তু তারা এই বিচার বন্ধ করতে পারবে না। কারণ এটা গণমানুষের দাবি। বিচারের রায় অবশ্যই কার্যকর হবে।'

জনগণের মৌলিক অধিকার যেন লংঘিত না হয়, সে ব্যাপারে সজাগ থাকতে পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'একথা মনে রাখতে হবে যে, আপনাদের ছোট ছোট ভুলের জন্য সরকারের ভাবমূর্তি যেন ক্ষুণ� না হয়।' পুলিশ কর্মকর্তারা ত্যাগ ও সেবার আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করতে এগিয়ে আসবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান সরকার সুখী, সমৃদ্ধ ও নিরাপদ এক বাংলাদেশ গঠনে অঙ্গীকারাবদ্ধ। বিগত চার বছর তাঁর সরকার সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদে মদদ দেয়নি। তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা ও মানবাধিকার রক্ষা এবং জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং গুরুত্বপূর্ণ হত্যাকাণ্ডের তদন্তে পুলিশ বাহিনীর নিরপেক্ষ ও দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রশংসিত হয়েছে। এজন্য তিনি পুলিশ বাহিনীর সকল সদস্যকে অভিনন্দন জানান। পুলিশ বাহিনীর উন্নয়নে নেয়া বিভিন্ন ব্যবস্থার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার ২৮ বছর পর বঙ্গবন্ধুর দেয়া আইজিপি র‌্যাংক ব্যাজ পুনঃপ্রবর্তন করেছে। বর্তমান সরকার পুলিশের জন্য দু'টি প্রথম শ্রেণীর পদ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার গত চার বছরে পুলিশ বাহিনীতে ৫শ' ক্যাডার পদসহ ২৭ হাজার ৫১৬টি নতুন পদ সৃষ্টি করেছে। সাব-ইন্সপেক্টর ও সার্জন পদকে দ্বিতীয় শ্রেণী এবং ইন্সপেক্টর পদকে প্রথম শ্রেণীর নন-ক্যাডার পদে উন্নীত করেছে। তিনি বলেন, সরকার পুলিশ বাহিনীর জন্য তিন বছর মেয়াদি কৌশল পরিকল্পনা (২০১২-২০১৪) প্রণয়ন করেছে। এছাড়া অবকাঠামো উন্নয়ন ও যানবাহনের যোগানসহ ব্যাপক উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে।

তাঁর সরকার পদোন্নতি ও বদলির ক্ষেত্রে মেধা, দক্ষতা, পেশাগত অভিজ্ঞতাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে - উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, 'আমরা প্রশিক্ষণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি এবং পুলিশ বাহিনীকে একটি আধুনিক, গতিশীল, সময়োপযোগী এবং জনসেবামুখী প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।' স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর, একই মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সি কিউ কে মোস্তাক আহমেদ, পুলিশ মহাপরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার এবং অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক শহীদুল হক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট শামসুল হক টুকু ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব শেখ মো. ওয়াহিদ উজ জামান এসময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।(ফেয়ার নিউজ)


শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়