Saturday, December 29

II দেশজুড়ে শৈত্যপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত II

দেশজুড়ে শৈত্যপ্রবাহে জনজীবন বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। শৈত্যপ্রবাহের সঙ্গে উত্তরী হাওয়া যোগ হওয়ায় দেশে জেঁকে বসেছে তীব্র শীত। লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামে মৃত্যু হয়েছে ৩ জন করে ৬ জন্যের। এছাড়া সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ, গাজীপুরের কালীগঞ্জে মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বর্তমানে রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, বরিশাল বিভাগে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। শৈত্যপ্রবাহ বইছে ঢাকা বিভাগের কিছু জেলাতেও। তবে ঢাকা মহানগরী রয়েছে শৈত্যপ্রবাহের বাইরে। এ পরিস্থিতি চলবে আরও দু'দিন। শৈত্যপ্রবাহে গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় যশোরে- ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান জানান, উত্তরী হাওয়ায় শীতের সঙ্গে দেখা দিয়েছে কুয়াশা। এতে মানুষের দুর্ভোগ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানচলাচল ব্যাহত করছে।



তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায় ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে গতকাল তা দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ ২০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে ঠাণ্ডা হাওয়ার কারণে নগরীতে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে। তিনি বলেন, জানুয়ারিতে দেশে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ (তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে) বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শীতে উত্তরাঞ্চলে শিশু ও নবজাতকদের মধ্যে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার হার বেড়েছে। ফলে হাসপাতালগুলোতে ঠাণ্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাতে তাপমাত্রা হালকা কমতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে। দিনভর শুকনো আবহাওয়া থাকলেও আকাশ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। নদী অববাহিকায় ঘন কুয়াশা থাকবে। অন্যত্র মধ্যরাত থেকে দুপুর পর্যন্ত মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশার সম্ভাবনা রয়েছে। চলতি মাসের শুরুতে দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, মাসের শেসার্ধে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে (১-২টি) মৃদু বা মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। ঢাকায় তাপমাত্রার তারতম্য কমতে থাকায় মানুষ বেশি মাত্রায় শীত অনুভব করছে।



বাড়তি মাত্রায় শীত অনুভূত হওয়ার বিষয়ে হাফিজুর রহমান বলেন, পৌষের মাঝামাঝি এসে দিনে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যেমন কমে সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও কম থাকে। এ দু'য়ের পার্থক্য কম থাকায় কুয়াশা বাড়ে। সঙ্গে হিমেল হাওয়া যোগ হলে বাড়ে শীতের অনুভূতি। গত বছরও এ রকম সময়ে এমন আবহাওয়া ছিল। তিনি জানান, এবারও পৌষের প্রথম দু'দিন ধরে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায় রাজশাহী অঞ্চলে। গত শনিবার ঈশ্বরদী ও চুয়াডাঙ্গায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়। পরে তা ফরিদপুর ও বরিশালেও বিস্তৃত হয়। এদিকে, চলমান মৃদু শৈত্যপ্রবাহে উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে ভাসমান মানুষদের ভোগান্তি চরমে উঠেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক শীতার্ত মানুষদের শীতবস্ত্র দিতে কয়েক দিন আগেই সব বাণিজ্যিক ব্যাংককে নির্দেশ পাঠিয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে মাওয়া ও পাটুরিয়ায় নদী পারাপার ব্যাহত হচ্ছে। সময় মেনে চলতে পারছে না দূরপাল্লার বাসও।লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানান, লালমনিরহাটে কনকনে শীতে গতকাল ২ শিশুসহ ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে শিশুরা। সকাল ৬টায় লালমনিরহাট সরকারি হাসপাতালে শীতে ৭ মাসের শিশু আসমা মারা যায়। হাতিবান্ধা উপজেলার চর গড্ডিমারী এলাকায় কায়েস আলী নামের এক বৃদ্ধ মারা যায়। এছাড়া কালীগঞ্জ উপজেলায় এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।



স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম থেকে জানান: কুড়িগ্রামে শীতজনিত রোগে আরও ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল ভোরে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে এক দিন বয়সী একজন শিশু নিউ বেবী ও জয় (৯মাস) নামে দু'শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া সকালে সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের সন্ন্যাসী গ্রামের কেতকেতু (৫২) নামে এক বৃদ্ধ মারা গেছে। এ নিয়ে জেলায় চলতি শীত মওসুমে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ২৮ জনে। এর মধ্যে শিশুর সংখ্যা ১৯ জন। কনকনে শীত আর হিমেল হাওয়ায় স্থবির হয়ে আছে জনজীবন। শুক্রবার সকাল ১১টা পর্যন্ত শহরের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ ছিল। কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম জানান, শুক্রবার ভোরে এই হাসপাতালে নিউ বেবি ও জয় (৯ মাস) নামে দু'শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শীতজনিত বিভিন্ন রোগে প্রায় অর্ধশত শিশু এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। প্রচণ্ড শীতে হিমালয় পাদদেশীয় এ অঞ্চলের জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে এসেছে। কুড়িগ্রামের ধরলা, ব্রহ্মপুত্র তিস্তা, দুধকুমোরসহ ১৬টি নদ-নদীর ৪শ' ৫টি চর-দ্বীপচরের ও বাঁধের পারের প্রায় ১০ লাখ দুস্থ গরিব শ্রেণীর বস্ত্রহীন মানুষ দুঃসহ পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে। টানা ১০ দিন থেকে শৈত্যপ্রবাহে মানুষের দুর্গতি আরও চরমে উঠেছে। সরকার কুড়িগ্রাম জেলার শীতার্ত মানুষের সহায়তায় তিন দফায় ১৭ হাজার ৬৮৮টি কম্বল বরাদ্দ দিয়েছে। এসব কম্বল ইতোমধ্যে ৭২টি ইউনিয়ন ও ৩টি পৌর এলাকায় বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসক জরুরিভিত্তিতে আরও ২০ হাজার কম্বল চেয়ে ঢাকায় ফ্যাক্সবার্তা পাঠিয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান। কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক প্রতিপ কুমার মণ্ডল জানান, তীব্র শীতে আগাম জাতের আলু ও ধানের চারায় কোল্ড ইনজুরি রোগ দেখা দিয়েছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের বীজতলায় সম্প�রক সেচ ও ওষুধ সেপ্র করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।



রাজাপুর (ঝালকাঠি) প্রতিনিধি জানান, ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার পালট ও বড়ইয়া গ্রামের পাঁচ শতাধিক প্রতিবন্ধীরা প্রচণ্ড শীতে গরম কাপড় ছাড়াই অত্যন্ত মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন। বিষখালি নদীর তীরবর্তী ভাঙন কবলিত সহায় সম্বলহীন এসব প্রতিবন্ধীরা ঝুপড়ি ঘরে শীতের সঙ্গে যুদ্ধ করেই দিনাতিপাত করছেন। গত তিনদিনের একটানা শৈত্যপ্রবাহ ও প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় ১২ প্রতিবন্ধীর অসুস্থতার খবর পাওয়া গেছে। দুই শারীরিক প্রতিবন্ধী সন্তান কাদের ও মনিরের মা কুলসুম বেগম বলেন, প্রচণ্ড শীতে দুই সন্তানকে নিয়ে ঠাণ্ডায় রাত কাটাতে প্রচণ্ড কষ্ট হয় তাদের। সেজন্য মাটির পাত্রে আগুন নিয়ে তারা রাতযাপন করেন। সেও একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। প্রচণ্ড শীতে গরম কাপড় ছাড়াই দিনযাপনে প্রতিবন্ধী গ্রামের ১২ অসহায় প্রতিবন্ধীর অসুস্থতার খবর নিশ্চিত করেছেন পালট বড়ইয়া প্রতিবন্ধী সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আলমগীর শরীফ। অসুস্থ প্রতিবন্ধীরা হলেন- অহিদ, কুলসুম, সিমা আক্তার, শিরিন, আছিয়া বেগম, ফজলে আলী শরীফ, রহিম মোল্লা, কাদের ও মনির।স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর থেকে জানান, 'টাকাও চাহিয়ে না, খাবার চাহিয়ে না, হামাক একটা শীতের কাপড়া দেন, হামার বড় ছোঁয়ালরা রাইতোত ঠাণ্ডায় মরি যাছে। হামাক এ্যানা বাঁচিরার ব্যাপস্থা করিয়া দ্যান' -এই আকুতি দিনমজুর রমজান আলীর। দিনাজপুরের বিরল উপজেলার পলাশবাড়ি এলাকার রমজান এসেছেন, কাজের খোঁজে দিনাজপুর শহরের ষষ্ঠিতলা শ্রমবাজারে। সেখানে এ কথাগুলো বলছিল কাজে নিতে আসা লোকের সামনে। বলছিল, আজ কাজের পারিশ্রমিক হিসেবে সে একটা শীতবস্ত্র (কম্বল) নেবে। এ শীতবস্ত্র যে দেবে, তার কাজ করবে সে। শুধু রমজান নয়, এমন অবস্থা অনেকের। ঘন কুয়াশা, গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির মতো শৈত্যপ্রবাহ আর কনকনে শীতে কাবু হয়ে পড়েছে উত্তরের সীমান্ত জেলা দিনাজপুরের মানুষ। প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন শ্রমজীবি-হতদরিদ্র, ছিন্নমূল মানুষ। বিশেষ করে শ্রমজীবী মানষের বেড়েছে চরম দুর্দশা। ঠাণ্ডার কারণে বের হতে পারছেন না তারা ঘরের বাইরে।



দিনাজপুরের প্রায় ৩০ লাখ মানুষের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিতরণ করা হচ্ছে ৭ হাজার কম্বল। যা অত্যন্ত অপ্রতুল। শীত ও শৈত্যপ্রবাহে নাকাল হয়ে পড়েছে হতদরিদ্র-ছিন্নমূল মানুষ। উত্তরের জেলা দিনাজপুরে শৈত্যপ্রবাহ আর শীতে জবুথবু অবস্থা। বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষের বেড়েছে চরম দুর্দশা। শৈত্যপ্রবাহ, শীত ও ঘন কুয়াশায় নাকাল হয়ে পড়েছে হতদরিদ্র-ছিন্নমূল মানুষ। শীতবস্ত্রের অভাবে সীমাহীন কষ্টে দিনাতিপাত করছেন তারা। অনেকেই খড়-কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা চালাচ্ছেন। ঘন কুয়াশার কারণে দিনের বেলাতেও রাস্তায় যানবাহন চালাতে হচ্ছে হেড লাইট জ্বালিয়ে। এরপরও রাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। হঠাৎ করে গতরাত থেকে ঘন কুয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। ঠিকমতো উঠছে না সূর্য।তীব্র শীতের কারণে দেখা দিয়েছে নানা রোগ। হাসপাতালে বেড়ে চলেছে শিশু ও বয়স্ক রোগী সংখ্যা। অন্যদিকে ঘন কুয়াশায় বিনষ্ট হচ্ছে বোরো বীজতলা ও আগাম জাতের আলুসহ বিভিন্ন ফসল। কৃষকরা ফসল নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, এ বছরে শীত মওসুমে এ পর্যন্ত সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জানুয়ারির প্রধম দিকে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে বলে জানিয়েছেন, দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।



মৌলভীবাজার প্রতিনিধি জানান, মৌলভীবাজারে কনকনে ঠাণ্ডা আর অব্যাহত শৈতপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চলতি মাসে ১২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ভর্তি হয়েছেন প্রায় এক হাজারের মতো শিশু। প্রতিদিন নিমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শতাধিক শিশু হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছে। ডাক্তাররা শিশু রোগী দেখতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন।হাওর, নদী, পাহাড় ও টিলাবেষ্টিত মৌলভীবাজার জেলায় বরাবরই শীতের প্রকোপ অন্যান্য এলাকার চেয়ে একটু বেশি। এবারে পৌষের শুরুতেই এ জেলায় শীতের তীব্রতা প্রচণ্ডভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। কনকনে ঠাণ্ডা বাতাস সে সঙ্গে শৈত্যপ্রবাহ ও ঘনকুয়াশা মানুষজনকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। সবচেয়ে বেশি কাহিল করেছে বয়স্ক মানুষ ও শিশুদের। ঠাণ্ডায় নানা রকমের রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে শিশুরা। মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চলতি ডিসেম্বর মাসে ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে ১২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া এ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে, প্রায় এক হাজার শিশু। এরা প্রত্যেকেই নিমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিযায় আক্রান্ত। ২৫০ শয্যা মৌলভীবাজার হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার দীনেশ সূত্রধর চলতি ডিসেম্বর মাসে ১২ শিশুর মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, ঠাণ্ডার কারণেই শিশুদের নানা রোগ দেখা দিয়েছে। তবে তারা আপ্রাণ চেষ্টা করছেন যাতে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা কমাতে। এছাড়া শিশুর পিতামাতাক পরামর্শ দিয়েছেন, সবসময় শিশুকে গরম কাপড়মোড়া দিয়ে রাখতে। এছাড়াও শিশুর শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে আসার কথা বলেছেন। এদিকে শিশু ওয়ার্ড সূত্রে জানা গেছে, শ্বাসকষ্ট ও নিমোনিয়ায় এ পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৫৫৪ জন শিশু। তাছাড়া ডায়রিয়ায় ভর্তি হয়েছে, ৩৬৫ জন শিশু। অপরদিকে বহির্বিভাগে ঠাণ্ডায় আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন শতাধিক শিশু চিকিৎসা নিচ্ছে। রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়াতে চিকিৎসা দিতে ডাক্তাররা রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গতকাল শুক্রবার (২৮শে ডিসেম্বর) মৌলভীবাজারের তাপমাত্রা সকাল ৯টায় শ্রীমঙ্গলে রেকর্ড করা হয়েছে সর্বনিম্ন ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অফিস (শ্রীমঙ্গল)-এর সিনিয়র অবজারভার গৌতম আচার্য আরও জানিয়েছে, শৈত্যপ্রবাহ ও কনকনে ঠাণ্ডা আরও ২ সপ্তাহজুড়ে অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।



স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে জানান, গত কয়েকদিন ধরে শৈত্যপ্রবাহ চলছে, বাড়ছে কনকনে শীত। ঘনকুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় খুলনাসহ দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে শীতের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে গোটা শহর। দুপুর ৩টা পর্যন্ত সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। ফলে শীতের তীব্রতায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তীব্র শীতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে করে তুলেছে স্থবির। সূর্যের কিরণ থেকে উষ্ণতা না পাওয়ায় কনকনে ঠাণ্ডা বাতাসে শীতার্ত ছিন্নমূল মানুষের এখন জবুথবু অবস্থা। গত কয়েক দিনের চেয়ে গতকাল শুক্রবারের তাপমাত্রাও কমেছে। দিনভর ঘন কুয়াশা এবং ঠাণ্ডা বাতাসের করণে শীতের প্রকোপ বেড়েছে। শীতবস্ত্রের অভাবে দারুণভাবে কষ্ট করছে অসহায় হতদরিদ্র ছিন্নমূল মানুষ। অনেককেই খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে দেখা গেছে। এ পরিস্থিতিতে শীতবস্ত্র বিতরণে নেই সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ের কোন উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ। ফলে বাড়ছে নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্ভোগ। এদিকে সবচেয়ে দুর্ভোগ বেড়েছে খেটে খাওয়া মানুষের। প্রচণ্ড শীতের কারণে ঘর থেকে কাজে বের হতে পারছে না তারা। এছাড়া রেলওয়ে স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড এবং ফুটপাত এবং বাণিজ্য কেন্দ্রের খোলা বারান্দায় আশ্রয় নেয়া ছিন্নমূল মানুষের অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।



তীব্র শীতের কারণে শুক্রবার ছুটির দিনেও ফুটপাথসহ শহরের বিভিন্ন দোকানে শীতবস্ত্র বিক্রির হিড়িক পড়েছে। শহরের অলিগলিতে বসা ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে। সারা দিনে চলে শীতবস্ত্র বিকিকিনি। লোকের ভিড়ে অনেক রাত পর্যন্ত সরগরম থাকে দোকানগুলো। লেপ-তোষক তৈরির কারিগররা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। শীতের কারণে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, সর্দি-কাশিসহ বিভিন্ন ধরনের শীতজনিত রোগে শিশু ও বৃদ্ধরা আক্রান্ত হচ্ছে। খুলনার শিশু হাসপাতালে রোগীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। হাসপাতালের বারান্দায় মেঝেতেও রোগীদের ঠাঁই মিলছে না। সবমিলিয়ে শীত ও শৈত্যপ্রবাহের ফলে শিল্প ও বন্দরনগরী খুলনার জনজীবন বিপন্ন। উত্তরাঞ্চল প্রতিনিধি জানান, ঘনকুয়াশা এবং কনকনে ঠাণ্ডায় কাহিল অবস্থা হয়েছে উত্তর জনপদের ৮ জেলার দরিদ্র মানুষ। সরকারিভাবে শীতবস (ফেয়ার নিউজ)


শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়