৪ তলা ভবন,ভবনের ছাদের উপর একটি মেয়ে দাড়িয়ে আছে,ভবনের পাশে শত শত মানুষের উপস্থিতি। সবাই এক দৃষ্টিতে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে রয়েছেন,বারণ করছেন লাফ না দেওয়ার জন্য। তারপর ও মেয়েটি কারো কথা শুনছে না। উপর থেকে লাফ দিয়েই প্রাণ হারালো ১৮ বছরের যুবতী ঐ গৃহকর্মী । তার নাম মিনারা বেগম (১৮) । সোমবার বিকাল ২ টায় মদিনা মার্কেটের নিকুঞ্জ-১৩, আনোয়ারা মঞ্জিলে এ ঘটনা ঘটে। মিনারা বেগমের বাড়ি খাদিমনগরে। তিনি পাঠানটুলার সুফিয়া বেগমের বাসায় কাজ করতেন। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দুপুরে বাসার ছাদে উঠে কয়েক মিনিট চিৎকার-চেঁচামেচি করতে থাকেন মিনারা। এসময় আশপাশের লোকজন ও পুলিশ ঘটনাস্থলে জড়ো হয়। সকলেই মিনারাকে ছাদ থেকে নেমে আসার অনুরোধ করলেও মিনারা তা অগ্রাহ্য করে ছাদ লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেন। মিনারা সদর উপজেলার খাদিমনগর ইউনিয়নের চাতল গ্রামের মৃত নাছির উদ্দিনের মেয়ে। তবে মিনারা বেগমের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, মিনারাকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় পাঠানটুলা এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বাসার গৃহকর্ত্রী সুফিয়া বেগম বলেন, মিনারা তাদের বাসায় ৮/১০ বছর ধরে গৃহপরিচারিকার কাজ করে আসছে। ঘটনার পূর্বে সুফিয়া বেগমের নাতি মাহাবি (৫) এর সাথে মিনারা ঝগড়া করলে তাকে তারা বকুনি দেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দৌঁড়ে ৪র্থ তলার ছাদে উঠে আত্মহত্যা করেন মিনারা। এছাড়া, মিনারা মানসিক বিকারগ্রস্ত ছিলেন বলে উল্লেখ করেন গৃহকর্ত্রী।তবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জালালাবাদ থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) সোহেল আহমদ জানান, আত্মহত্যা করা মেয়েটি সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন বলে জানা গেছে। তার আত্মহত্যা করার পেছনে ওই পরিবারের সঙ্গে কোনো কারণ আছে কি-না পুলিশ সে বিষয়টি তদন্ত করছে।ওসি আরও জানান, বাসার ৪র্থ তলার ছাদ থেকে তিনি লাফিয়ে পড়ার সময় নিচে অনেক প্রতিবেশী উপস্থিত ছিলেন। তাকে অনেক অনুনয়-বিনয় করার পরও তিনি ছাদ থেকে নামেননি। ছাদের রেলিং থেকে বেরিয়ে নিচে লাফ দিয়ে পড়লে তার শরীরের প্রায় সব জায়গায় মারাত্মক জখম হয়। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে ডাক্তাররা মৃত ঘোষণা করেন।জালালাবাদ থানা পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার লাশটির ময়নাতদন্ত করা হবে।জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গৌছুল আলম বলেন, মিনারাকে ছাদ থেকে লাফ না দেওয়ার জন্য তিনিসহ সেখানে উপস্থিত শতাধিক মানুষ বারণ করলেও মিনারা তা শুনেনি।মিনারার আত্মহত্যার কারন হিসেবে ওসি গৌসুল আলম জানান, মাস তিনেক পূর্বে সে একটি ছেলের সাথে পালিয়ে গিয়েছিলো। সেই ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়রি করা হয়। পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাসহ সকল বিষয়ে তদন্তের পর আত্মহত্যার মূল কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।এদিকে, মিনারার ভাই খলিলুর রহমান জানান, তার বোন আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে কেউ হত্যা করতে পারে বলে দাবি করেন তিনি। মিনারা তাদের বাসায় ৮/১০ বছর ধরে গৃহ পরিচারিকার কাজ করে আসছে। ঘটনার পূর্বে সুফিয়া বেগমের নাতি মাহাবি(৫)এর সাথে মিনারা ঝগড়া করলে তাকে তারা বকুনি দেন। এতে সে ক্ষোভে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলো বলে জানান তিনি। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মিনারা ছাদ থেকে লাফ দেওয়ার সময় সময় সুফিয়া বেগমের ছেলে নুরুজ্জামান চৌধুরীও ছাদে অবস্থান করছিলেন। নুরুজ্জামান নগরীর লিডিং ইউনিভার্সিটির ছাত্র।সিলেট টুয়েন্টিফোর নিউজ ডটকম:
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়