Thursday, June 3

সুরমার চরে সবজির মেলা



প্রতিবেদন:সাত্তার আজাদ
ছবি:মাহবুবুর রশিদ





সিলেটসিলেটের কানাইঘাট উপজেলায় সুরমা নদীর চরে প্রতি শীতে বসে সবজির হাট। অবশ্য হাট না বলে একে মেলা বলাই ভালো। কেননা, প্রতি পৌষে শুরু হয়ে পুরো চার মাস বিকিকিনি চলে হাটে। চরে উৎপাদিত শত শত টন সবজি প্রতিদিন ট্রাকে করে চলে যায় দেশের বিভিন্ন জেলায়। এখানকার তরকারি বিদেশেও রপ্তানি হয়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রতি মাসে প্রায় দেড় কোটি টাকার সবজি বিক্রি হয় এ বাজার থেকে। স্থানীয় আড়তদার ও ব্যবসায়ীরা জানান, কানাইঘাট পৌরসভাসংলগ্ন সুরমা তীরবর্তী প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকায় ফলানো সবজি এই হাটে ওঠে। লক্ষ্মীপ্রসাদ, বাইমপুর, পাত্রমাটি, নিয়ালপুর, দক্ষিণ প্রসাদ, ডালাইচর প্রভৃতি গ্রামের কৃষকরা তাঁদের উৎপাদিত কাঁচা তরকারি নিয়ে আসেন এ হাটে। হাতবদলের পর সে সবজি প্রতিদিন সকালে ২০ থেকে ২৫টি ট্রাকে করে চলে যায় সিলেটনগরী, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। বাজার ঘুরে দেখা গেল, প্রতি কেজি টমেটো আট টাকা, ফুলকপি ছয় টাকা, বাঁধাকপি তিন টাকা, শালগম তিন টাকা, আলু ৯ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে দেশের ভোক্তার হাতে পেঁৗছাতে পেঁৗছাতে এসব পণ্যের দাম কয়েক গুণ বেড়ে যাচ্ছে। কৃষক সবজি ফলিয়ে খুব একটা লাভ না পেলেও সে সবজি বিক্রি করে মোটা অঙ্কের টাকা কামিয়ে নিচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীরা। নৌকায় করে টুকরি ভর্তি টমেটো নিয়ে বাজারে এসেছিলেন পাত্রমাটির নয়ন মিয়া। তিনি বলেন, 'ই-ফিরা সার লওয়া অইছে বেশি দাম দিয়া। ওষুধও ছিটানি লাগছে। ই বছর ক্ষেতো পোকর যন্ত্রণা অন্য বছরর থাকি বেশি। এর লাগি ইবার সবজি খরিয়া চাইর থাকি পাঁচ হাজার টেকা ক্ষতি অইব।' এবার আধা বিঘা জমিতে টমেটো চাষ করেছেন বলে জানালেন নয়ন। লক্ষ্মীপ্রসাদের মনোহর আলী বাজারে এসেছিলেন ফুলকপি নিয়ে। তিনি বলেন, 'বাড়িত নিজে নিজে জৈব সার বানাই। ই-সার দিয়া মাঠো ফসল ফলাইছি। এর লাগি কয়টা টেকা লাভোর মুখ দেখমু।' তাঁর মতো নিজেই জৈব সার তৈরি করে চাষে নামার পরামর্শ দেন মনোহর আলী। নিয়ালপুর গ্রামের ছাইদুল ইসলাম জানান, গত বছর সার দিয়ে লাল শাক লাগানোর পর ব্যাপক পোকার আক্রমণ দেখা দেয়। কীটনাশক ছিটিয়েও উপকার পাননি তিনি। এবার তাই জৈব সার ব্যবহার করেছেন।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়