Saturday, August 22

লোভাছড়া কোয়ারির জব্দকৃত পাথরের মালিকানা নিয়ে ধুম্রজাল

নিজস্ব প্রতিবেদক:   
কানাইঘাট লোভাছড়া পাথর কোয়ারিতে শুকনো মৌসুমে উত্তোলিত পাথরের মধ্যে সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক জব্ধকৃত ১ কোটি ঘনফুট পাথর দ্বিতীয় দিনের মতো পাথর ব্যবসায়ীরা নৌপথে পরিবহন করেছে। তবে পরিবহনকৃত পাথরগুলো রিটকারী ব্যবসায়ীদের না অন্য কারো তা নিয়ে এখনও ধুম্রজাল কাটেনি। এমনকি পরিবেশ অধিদপ্তর এবং প্রশাসন বিষয়টির সুরাহা করতে পারছে না।
জানা গেছে- বৃহস্পতিবার স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক কোয়ারিতে আটক করে রাখা দেড় শতাধিক পাথর বোঝাই জাহাজ ও বলগেট ভর্তি প্রায় ৪ কোটি টাকা সেই পাথর নৌপথে বিক্রির জন্য বিভিন্ন এলাকায় নেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার দ্বিতীয় দিনের মতো কোয়ারী থেকে পাথর বোঝাই করে জাহাজ বলগেট নৌপথে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার কোয়ারি থেকে ছেড়ে যাওয়া অর্ধশতাধিক পাথরবোঝাই জাহাজ-বলগেট সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তরের পাশে সুরমা নদীতে বেআইনিভাবে পাচারের অভিযোগ এনে ওগুলো আটক করে রাখেন ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম। লোভাছড়া কোয়ারী এলাকায় জব্দকৃত পাথরের নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতা সিলেটের গোটাটিকর এলাকার ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামের একটি রিট মামলা উচ্চ আদালতে চলমান থাকায় তিনি পাথর বোঝাই নৌযানগুলো আটকে রাখেন।
এ নিয়ে লোভাছড়া কোয়ারির পাথর ব্যবসায়ী ও নজরুল ইসলামের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এর মাঝে বৃহস্পতিবার গভীর রাত পর্যন্ত পাথরবাহী নৌকাগুলো সেখানে আটক করে রাখা হয়। এক পর্যায়ে এসএমপির দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
এসময় সেখানে গভীর রাত পর্যন্ত সিলেট সিটি কর্পোরেশনের স্থানীয় কাউন্সিলর তৌহিক বক্স লিমন ও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ পাথর ব্যবসায়ী ও নজরুল ইসলাম পক্ষের লোকজনের সাথে মধ্যস্থতা করেন। এরপর পরিবেশ অধিদপ্তরের সুরমা নদীর ঘাট থেকে আজ শুক্রবার আটককৃত পাথরবোঝাই বাহনগুলি ছেড়ে যায় বলে জানা গেছে।
এদিকে কোয়ারিতে পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক জব্দকৃত পাথর দীর্ঘ এক মাসের অধিক সময় আটকে থাকার পর ৫ জন পাথর ব্যবসায়ীর রিট মামলার প্রেক্ষিতে পাথর পরিবহন শুরু হলেও এ নিয়ে ধুম্রজাল শুরু হয়েছে। রিটকারী ব্যবসায়ীরা বলছেন ১৬ দিন পূর্বে উচ্চ আদালত তাদের পাথর পরিবহনের অনুমতি দিয়েছেন। কিন্তু পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেটের র্কমর্কতারা তাদের পাথর পরিবহনে নানা ধরনের জটিলতা সৃষ্টি করে পাথর পরিবহন বন্ধ রেখেছেন। তারা বাধ্য হয়ে তাদের পাথর এখন নৌপথে পরিবহন করছেন। গত ২ দিন কোয়ারী থেকে পাথর পরিবহন করা হলেও পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন এবং উপজেলা প্রশাসন কোন ধরনের পাথর পরিবহনে বাধা নিষেধ দিচ্ছেন না।
তবে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক এমরান হোসেন বলছেন, যেভাবে উচ্চ আদালতের নির্দেশের কথা বলে কোয়ারী থেকে জব্দকৃত পাথর নৌপথে সরবরাহ করা হচ্ছে মহামান্য উচ্চ আদালত সে ধরনের নির্দেশনা রিটকারী পাথর ব্যবসায়ীরা মানছেন না। উচ্চ আদালত সব ধরনের পাথরের মালিকানার কাগজপত্র প্রদান সাপেক্ষে রিটকারীদের পাথর পরিবহনের নির্দেশনা আমাদেরকে দিয়েছেন। কিন্তু বারবার তাদের কাছে পাথরের মালিকানার কাগজপত্র চাওয়ার পরও রিটকারী ব্যবসায়ীরা আজ পর্যন্ত আমাদের কাছে তাদের বৈধ কাগজপত্র বুঝিয়ে না দিয়ে পাথর পরিবহন করছেন। পরিবহনের পাথরগুলো রিটকারী ব্যবসায়ীদের না অন্য কারও তা আমরা কিভাবে নির্ণয় করবো। কেউ যদি উচ্চ আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষিত করে থাকেন তা হলে আমরা সে ভাবে ব্যাবস্থা নেবো।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়