আফতাব চৌধুরী::
সৃষ্টির সেরা জীব মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের প্রধান কারণ তার আত্মসচেতনতা, যা
অন্যান্য জীবের নেই। আত্মসচেতনতার মূল আধার মানুষের মন। আর মনের বিকাশ হয়
জ্ঞানচর্চার মাধ্যমে। যার জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত শিক্ষা। শিক্ষার মাধ্যমেই
মনুষ্যত্বের পূর্ণবিকাশ সাধিত হয়। সুস্থ পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়
জীবন গঠনের জন্য প্রত্যেক মানুষের মধ্যে নৈতিকতাবোধ জাগ্রত হওয়া একান্ত
প্রয়োজন। উপযুক্ত শিক্ষাগ্রহণই এ লক্ষ্যের প্রথম পদক্ষেপ। তাই পবিত্র ইসলাম
ধর্মে শিক্ষার ওপর সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। ধূলির ধরায় মহান
আল্লাহ মানুষকে তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে সৃষ্টি করলেন এবং আদি মানব হজরত আদম
(সা.) কে সৃষ্টি করে যাবতীয় নাম শিক্ষা দিলেন। (সূরা বাকারা : ৩০, ৩১)।
পবিত্র কোরআনের সর্বপ্রথম প্রত্যাদেশÑ ‘পাঠ কর, তোমার প্রতিপালকের নামে,
যিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষকে রক্তপি- থেকে। পাঠ কর; আর তোমার প্রতিপালক
অতিদানশীল। তিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন। শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে,
যা সে জানত না।’ (সূরা আলাক : ১-৫)। এভাবে মহান আল্লাহ মানুষকে সর্বাগ্রে
লেখাপড়া শেখার নির্দেশ দিয়েছেন।
শিক্ষার মাধ্যমে অর্জিত হয় জ্ঞান। জ্ঞানের পরশে আত্মা আলোকিত হয়, মন সবল হয়। চিন্তাধারা তীক্ষè হয়, ন্যায়-অন্যায়, ভালো-মন্দ বোধ জাগ্রত হয়, সুন্দর ও অসুন্দরের মধ্যে পার্থক্য করার ক্ষমতা আসে। জ্ঞান ব্যতীত আল্লাহর উপাসনা চলে না, জ্ঞান ছাড়া ধর্মকে সুপ্রতিষ্ঠিত করা যায় না। তাই বিশ্বনবী তাঁর অনুসারীদের জ্ঞানার্জনের জন্য কঠোর সাধনায় ব্রতী হতে নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, ‘শৈশব থেকে মৃত্যু পর্যন্ত জ্ঞান অন্বেষণ কর।’ তিনি তাঁর অনেক বাণীতে জ্ঞান সাধনার জন্য মানুষ জাতিকে অনুপ্রাণিত করেছেন। যেমন মহানবীর ঘোষণাÑ ‘যে জ্ঞানান্বেষণ করে, সে আল্লাহকে অন্বেষণ করে।’ ‘যে ব্যক্তি জ্ঞানান্বেষণে বহির্গত হয়, সে গৃহে প্রত্যাবর্তন করা পর্যন্ত আল্লহর রাস্তায় থাকে।’ জ্ঞান শিক্ষার জন্য এর চেয়ে বেশি মর্যাদা আর কী হতে পারে?
কোরআন, হাদিস তথা দ্বীনি শিক্ষা ইসলামি জীবন ব্যবস্থার মূল ভিত্তি। তাই রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘রাত্রে এক ঘণ্টা জ্ঞানানুশীলন করা পুরো রাত জেগে ইবাদত করা অপেক্ষা উত্তম।’ জ্ঞান সাধকের যথোপযুক্ত মর্যাদা প্রদান করতে মহানবীর দীপ্তকণ্ঠে ঘোষণাÑ ‘নক্ষত্রম-লীর ওপর পূর্ণচন্দ্রের যেরূপ শ্রেষ্ঠত্ব, পুরো উপাসকম-লীর ওপর জ্ঞানীর শ্রেষ্ঠত্বও তদ্রƒপ।’
ইসলাম শুধু একটি আচার-সর্বস্ব ধর্ম নয়, বরং এক সুসংহত ও মহান জীবন বিধান। তাই ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি জাগতিক শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে ইসলাম। মহানবীর ঘোষণাÑ ‘ইহকাল পরকালের শস্যক্ষেত্র।’ এ শস্যক্ষেত্রের সদ্ব্যবহারের জন্য পর্যাপ্ত জাগতিক জ্ঞান আহরণ অত্যাবশ্যক। আত্মপরিচয় ও অস্তিত্ব রক্ষায় ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব যেমন অপরিসীম, তেমনি উন্নত ও মর্যাদাসম্পন্ন নাগরিক জীবনের জন্য সাধারণ শিক্ষা ক্ষেত্রেও উচ্চপর্যায়ের শিক্ষাগ্রহণ অপরিহার্য। জ্ঞানবিজ্ঞানের উচ্চতর পঠন-পাঠনের জন্য প্রয়োজনে বিদেশ ভ্রমণ করতেও নির্দেশ দিয়েছেন বিশ্বনবী।
আর যে শিক্ষায় মানুষের কোনো কল্যাণ সাধিত হয় না; যে শিক্ষায় মানুষ পথভ্রষ্ট হয়, সে শিক্ষা ইমলামের শিক্ষা নয়। তাই মহানবী (সা.) সাবধান বাণী উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘শিক্ষিত মানুষের মধ্যে যারা অসৎ, মানবসমাজের মধ্যে তারা সর্বাপেক্ষা অধম।’ এভাবে পবিত্র কোরাআন ও হাদিসের বিভিন্ন বাণীতে মানবজাতিকে শিক্ষার মাধ্যমে উন্নত জীবন গড়ে তুলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইসলামি জীবনদর্শনে নারী জাতিকে কখনও বৈষম্যমূলক দৃষ্টিতে দেখা হয়নি। বরং সর্বত্র নারী ও পুরুষের ভারসাম্য রাখা হয়েছে। কোরআনে স্বামী-স্ত্রীকে পরস্পরের সমতুল্য ঘোষণা করে বলা হয়েছেÑ ‘তোমরা একে অপরের ভূষণস্বরূপ।’ অধিকন্তু স্ত্রীর সম্মানে বিশ্বনবীর বাণীÑ ‘তোমাদের মধ্যে তারাই সর্বোত্তম, যারা তাদের নিজ নিজ স্ত্রীর কাছে সর্বোত্তম।’ আবার মায়ের মর্যাদা প্রদানে রাসুল (সা.) ঘোষণা করেছেনÑ ‘তোমাদের বেহেশত তোমাদের নিজ নিজ মায়ের পদতলে।’ নারী-পুরুষের পারস্পরিক অবস্থান সম্পর্কে ঐশী গ্রন্থ কোরআনে অনেক বাণী পাওয়া যায়। যেমনÑ ‘তিনি সৃষ্টি করেছেন যুগলÑ পুরুষ ও নারী শুক্রবিন্দু থেকে।’ (সূরা নাজম : ৪৫-৪৬)। ‘বিশ্বাসী হয়ে পুরুষ ও নারীর মধ্যে যে কেউ সৎকর্ম করবে আমি তাকে নিশ্চয়ই আনন্দপূর্ণ জীবন দান করব, আর তাদের কর্মের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দান করব।’ (সূরা নাহল : ৯৭)। ‘আমি তোমাদের মধ্যে কোনো কর্মনিষ্ঠ পুরুষের বা নারীর কর্ম বিফল করি না। তোমরা পরস্পর সমান।’ (সূরা আলে ইমরান : ১৯৫)। ‘পুরুষ যা অর্জন করে তা তার প্রাপ্য, আর নারী যা অর্জন করে তা তার প্রাপ্য।’ (সূরা নিসা : ৩২)। ‘বিশ্বাসী নারী-পুরুষ একে অপরের বন্ধু।’ (সূরা তওবা : ৭১)। ‘আল্লাহ বিশ্বাসী পুরুষ ও নারীকে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।’ (সূরা তওবা : ৭২)। ‘হে মানবজাতি, আমি তোমাদের এক পুরুষ ও নারী থেকে সৃষ্টি করেছি। অতঃপর তোমাদের বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমরা একে অপরকে চিনতে পার।’ (সূরা হুজুরাত : ১৩)।
শিক্ষার মাধ্যমে অর্জিত হয় জ্ঞান। জ্ঞানের পরশে আত্মা আলোকিত হয়, মন সবল হয়। চিন্তাধারা তীক্ষè হয়, ন্যায়-অন্যায়, ভালো-মন্দ বোধ জাগ্রত হয়, সুন্দর ও অসুন্দরের মধ্যে পার্থক্য করার ক্ষমতা আসে। জ্ঞান ব্যতীত আল্লাহর উপাসনা চলে না, জ্ঞান ছাড়া ধর্মকে সুপ্রতিষ্ঠিত করা যায় না। তাই বিশ্বনবী তাঁর অনুসারীদের জ্ঞানার্জনের জন্য কঠোর সাধনায় ব্রতী হতে নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, ‘শৈশব থেকে মৃত্যু পর্যন্ত জ্ঞান অন্বেষণ কর।’ তিনি তাঁর অনেক বাণীতে জ্ঞান সাধনার জন্য মানুষ জাতিকে অনুপ্রাণিত করেছেন। যেমন মহানবীর ঘোষণাÑ ‘যে জ্ঞানান্বেষণ করে, সে আল্লাহকে অন্বেষণ করে।’ ‘যে ব্যক্তি জ্ঞানান্বেষণে বহির্গত হয়, সে গৃহে প্রত্যাবর্তন করা পর্যন্ত আল্লহর রাস্তায় থাকে।’ জ্ঞান শিক্ষার জন্য এর চেয়ে বেশি মর্যাদা আর কী হতে পারে?
কোরআন, হাদিস তথা দ্বীনি শিক্ষা ইসলামি জীবন ব্যবস্থার মূল ভিত্তি। তাই রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘রাত্রে এক ঘণ্টা জ্ঞানানুশীলন করা পুরো রাত জেগে ইবাদত করা অপেক্ষা উত্তম।’ জ্ঞান সাধকের যথোপযুক্ত মর্যাদা প্রদান করতে মহানবীর দীপ্তকণ্ঠে ঘোষণাÑ ‘নক্ষত্রম-লীর ওপর পূর্ণচন্দ্রের যেরূপ শ্রেষ্ঠত্ব, পুরো উপাসকম-লীর ওপর জ্ঞানীর শ্রেষ্ঠত্বও তদ্রƒপ।’
ইসলাম শুধু একটি আচার-সর্বস্ব ধর্ম নয়, বরং এক সুসংহত ও মহান জীবন বিধান। তাই ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি জাগতিক শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে ইসলাম। মহানবীর ঘোষণাÑ ‘ইহকাল পরকালের শস্যক্ষেত্র।’ এ শস্যক্ষেত্রের সদ্ব্যবহারের জন্য পর্যাপ্ত জাগতিক জ্ঞান আহরণ অত্যাবশ্যক। আত্মপরিচয় ও অস্তিত্ব রক্ষায় ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব যেমন অপরিসীম, তেমনি উন্নত ও মর্যাদাসম্পন্ন নাগরিক জীবনের জন্য সাধারণ শিক্ষা ক্ষেত্রেও উচ্চপর্যায়ের শিক্ষাগ্রহণ অপরিহার্য। জ্ঞানবিজ্ঞানের উচ্চতর পঠন-পাঠনের জন্য প্রয়োজনে বিদেশ ভ্রমণ করতেও নির্দেশ দিয়েছেন বিশ্বনবী।
আর যে শিক্ষায় মানুষের কোনো কল্যাণ সাধিত হয় না; যে শিক্ষায় মানুষ পথভ্রষ্ট হয়, সে শিক্ষা ইমলামের শিক্ষা নয়। তাই মহানবী (সা.) সাবধান বাণী উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘শিক্ষিত মানুষের মধ্যে যারা অসৎ, মানবসমাজের মধ্যে তারা সর্বাপেক্ষা অধম।’ এভাবে পবিত্র কোরাআন ও হাদিসের বিভিন্ন বাণীতে মানবজাতিকে শিক্ষার মাধ্যমে উন্নত জীবন গড়ে তুলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইসলামি জীবনদর্শনে নারী জাতিকে কখনও বৈষম্যমূলক দৃষ্টিতে দেখা হয়নি। বরং সর্বত্র নারী ও পুরুষের ভারসাম্য রাখা হয়েছে। কোরআনে স্বামী-স্ত্রীকে পরস্পরের সমতুল্য ঘোষণা করে বলা হয়েছেÑ ‘তোমরা একে অপরের ভূষণস্বরূপ।’ অধিকন্তু স্ত্রীর সম্মানে বিশ্বনবীর বাণীÑ ‘তোমাদের মধ্যে তারাই সর্বোত্তম, যারা তাদের নিজ নিজ স্ত্রীর কাছে সর্বোত্তম।’ আবার মায়ের মর্যাদা প্রদানে রাসুল (সা.) ঘোষণা করেছেনÑ ‘তোমাদের বেহেশত তোমাদের নিজ নিজ মায়ের পদতলে।’ নারী-পুরুষের পারস্পরিক অবস্থান সম্পর্কে ঐশী গ্রন্থ কোরআনে অনেক বাণী পাওয়া যায়। যেমনÑ ‘তিনি সৃষ্টি করেছেন যুগলÑ পুরুষ ও নারী শুক্রবিন্দু থেকে।’ (সূরা নাজম : ৪৫-৪৬)। ‘বিশ্বাসী হয়ে পুরুষ ও নারীর মধ্যে যে কেউ সৎকর্ম করবে আমি তাকে নিশ্চয়ই আনন্দপূর্ণ জীবন দান করব, আর তাদের কর্মের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দান করব।’ (সূরা নাহল : ৯৭)। ‘আমি তোমাদের মধ্যে কোনো কর্মনিষ্ঠ পুরুষের বা নারীর কর্ম বিফল করি না। তোমরা পরস্পর সমান।’ (সূরা আলে ইমরান : ১৯৫)। ‘পুরুষ যা অর্জন করে তা তার প্রাপ্য, আর নারী যা অর্জন করে তা তার প্রাপ্য।’ (সূরা নিসা : ৩২)। ‘বিশ্বাসী নারী-পুরুষ একে অপরের বন্ধু।’ (সূরা তওবা : ৭১)। ‘আল্লাহ বিশ্বাসী পুরুষ ও নারীকে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।’ (সূরা তওবা : ৭২)। ‘হে মানবজাতি, আমি তোমাদের এক পুরুষ ও নারী থেকে সৃষ্টি করেছি। অতঃপর তোমাদের বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমরা একে অপরকে চিনতে পার।’ (সূরা হুজুরাত : ১৩)।
খবর বিভাগঃ
ইসলাম
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়