ভারতের লোকসভা নির্বাচনের সব ধাপের ভোটগ্রহণ শেষ, কে আসছে বিশ্বের
বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশটির আগামী ৫ বছরের ক্ষমতায় তা জানা যাবে আগামী
বৃহস্পতিবার (২৩ মে)। বিশ্বের বৃহত্তম এই ভোটের গণনার প্রক্রিয়াও বেশ
সময়সাপেক্ষ, ৯০ কোটির বেশি ভোটার ছিল এবার লোকসভা নির্বাচনে। দেশটির
নির্বাচন কমিশন জানায়, গণনার দিন সকাল ৭টায় পর্যবেক্ষক, রিটার্নিং অফিসার
বা অ্যাসিট্যান্ট রিটার্নিং অফিসার, প্রার্থী বা তার প্রতিনিধির উপস্থিতিতে
স্ট্রং রুম খোলা হবে।
পোস্টাল ব্যালট দিয়ে ভোট গণনা শুরু হবে সকাল সাড়ে ৮টায়। প্রতি একজন
অ্যাডিশনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট রিটার্নিং অফিসার পাবেন ৫০০ পোস্টাল ব্যালট।
ইলেকট্রনিকালি ট্রান্সমিটেড পোস্টাল ব্যালট সিস্টেম (ইটিপিবিএস) সার্ভিস
ভোটাররা (সেনাবাহিনী এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য) এই পদ্ধতিতে ভোট দিয়েছেন।
ইটিপিবিএসের তিনটি অংশে কিউআর কোড থাকবে। তা স্ক্যান করার জন্য প্রতি ৫০০
ভোটের জন্য ৩টা মেশিন থাকবে।
সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) গণনা শুরু। ইভিএমের
কন্ট্রোল ইউনিটের তৃতীয় অংশে থাকে রেজাল্ট সেকশন। আউটার ডোরে একটি ফ্ল্যাপ
থাকে। তা খোলা হয়। তারপর ইন্ডোর ডোর খোলা হয়। সেখান থেকেই ইভিএমে থাকা
প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট জানা যায়। ওই রেজাল্ট সেকশনটি জালের বাইরে থাকা
প্রার্থীর এজেন্টকে দেখানো হবে।
প্রতিটি রাউন্ডের গণনার শেষে দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক স্বাক্ষর করবেন।
পরের রাউন্ডের ইভিএম গণনাকেন্দ্রে আসবে। এ ভাবেই গণনা চলবে। পর্যবেক্ষকের
স্বাক্ষরের পরেই তা দেশটির নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট, নিউ সুবিধা অ্যাপ,
ভোটার হেল্পলাইন অ্যাপে দেখা যাবে। ইভিএমের গণনা শেষ হওয়ার পরে ভোটার
ভেরিফায়েব্ল পেপার অডিট ট্রেল (ভিভিপ্যাট) গণনা হবে।
ভিভিপ্যাট গণনার জন্য বিধানসভা প্রতি পাঁচটি করে বুথ লটারির মাধ্যমে
বাছাই হবে। পর্যবেক্ষক, প্রার্থী বা তার প্রতিনিধির উপস্থিতিতেই রিটার্নিং
অফিসার লটারি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন। ভিভিপ্যাট গণনার জন্য ভিভিপ্যাট
কাউন্টিং বুথ (ভিসিবি) তৈরি হবে। যার পাঁচ দিক ঢাকা। যা ব্যাঙ্কের
ক্যাশিয়ারের কাউন্টারের মতো হবে। ভিভিপ্যাটের ১০x৫ দশমিক ৬ সেন্টিমিটার
কাগজের বান্ডিল গুনতে পানিতে আঙুল ভেজানো যাবে না।
২৫টি করে ভিভিপ্যাটের কাগজ বান্ডিল হবে। যদি কোনও বুথের ইভিএমের
কন্ট্রোল ইউনিট প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট না দেখায়, তা হলে সংশ্লিষ্ট বুথের
ভিভিপ্যাট গণনা হবে। ওই বুথে ভিভিপ্যাটের গণনাই চূড়ান্ত হবে। সেক্ষেত্রে
লটারি প্রক্রিয়ায় ওই ভিভিপ্যাটটি থাকবে না।
ভোট গণনার ক্ষেত্রে নেয়া হয়েছে ৩ ধাপের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রথম
ধাপে গণনাকেন্দ্রের ১০০ মিটার এলাকায় অনুমতিহীন কেউ থাকতে পারবেন না।
নিরাপত্তায় থাকবে জেলা এক্সিকিউটিভ পুলিশ (ডিইপি)। দ্বিতীয় ধাপে
গণনাকেন্দ্রের পরিসীমার দরজায় ডোর ফ্রেম মেটাল ডিটেক্টর, হ্যান্ড হেল্ড
মেটাল ডিটেক্টর নিয়ে প্রাদেশিক সশস্ত্র পুলিশ থাকবে।
তৃতীয় ধাপে গণনাকেন্দ্র এবং স্ট্রং রুমে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে।
পর্যবেক্ষক এবং রিটার্নিং অফিসার ছাড়া কেউ গণনাকেন্দ্রে মোবাইল নিয়ে
প্রবেশ করতে পারবেন না। নারীদের হাতব্যাগ নিয়ে প্রথম ধাপ পেরোতে পারলেও বড়
ব্যাগ, পানির বোতল বা খাবার নিয়ে ভেতরে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
পোস্টাল ব্যালট গণনায় এক জন কাউন্টিং সুপারভাইজার, দু’জন কাউন্টিং
অ্যাসিট্যান্ট, একজন কাউন্টিং মাইক্রো পর্যবেক্ষক থাকবে গণনায়। ইভিএম গণনায়
থাকবে একজন কাউন্টিং সুপারভাইজার, একজন কাউন্টিং অ্যাসিট্যান্ট ও একজন
কাউন্টিং মাইক্রো পর্যবেক্ষক। এখনও পর্যন্ত ১৪৪ জন পর্যবেক্ষক গণনা
প্রক্রিয়ায় থাকবেন বলে স্থির করেছে কমিশন। এক জন পর্যবেক্ষকের আওতায় দুই
থেকে চারটি বিধানসভাকেন্দ্র থাকার কথা রয়েছে।
খবর বিভাগঃ
দেশের বাইরে
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়