Monday, November 28

কানাইঘাটে আমন ধানের বাম্পার ফলন ! কৃষকের মুখে হাসি


নিজস্ব প্রতিবেদক: কানাইঘাট উপজেলায় গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর উপজেলা জুড়ে আমন ধানের রেকর্ড বাম্পার ফলন হওয়ায় ঘরে ঘরে কৃষকের মুখে সাফল্যের হাসি ফুটে উঠেছে। যেদিকে চোখ যায় বিস্তৃর্ণ ফসলের মাঠে পাকা ধানের সোনালী ঢেউয়ে প্রাণ জুড়ায় সকলের। মাঠ জুড়ে মনের আনন্দে কৃষকরা ধান কাটতে ব্যস্ত রয়েছেন। ধান মাড়াই কলের কদরও বেড়েছে কৃষক কৃষাণীদের মাঝে। বাড়ীতে বাড়ীতে যেন ধান মাড়াইর উৎসব চলছে। এ বছর রেকর্ড বাম্পার ফলন হওয়ায় ধান কাটা শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তা ও মাঠকর্মীরা সোনালী আমন ধানের ফসল সঠিক ভাবে যাতে করে কৃষকরা ঘরে তুলতে পারেন এজন্য তাদের সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কৃষকরা তাদের কষ্টের ফসল আমন ধান ঘরে তুলতে পারবেন বলে কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে। এদিকে কৃষকদের এ আনন্দে শামিল হওয়ার জন্য এ বছর উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি অফিসের উদ্যোগে কৃষকদের নিয়ে নবান্ন উৎসবেরও আয়োজন করা হয়েছে। সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তারেক মোহাম্মদ জাকারিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার মুন্সী মোঃ তোফায়েল ইসলাম ও কৃষি অফিসের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা ও স্থানীয় সাংবাদিক জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বিস্তৃর্ণ ফসলের মাঠে গিয়ে কৃষকদের সাথে ধান কাটা উৎসবে সামিল হন। কৃষকরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কৃষি অফিসের কর্মকর্তাদের তাদের কাছে পেয়ে মনের আনন্দ অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, আল্লাহর রহমতে এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় তারা কয়েক বছরের তুলনায় বাম্পার ফলন পেয়েছেন। উপযুক্ত ধানের দামও পাওয়ায় তারা অত্যন্ত খুশী। ভালো ফলনের পিছনে উপজেলা কৃষি অফিসের অবদান রয়েছে বলে তারা স্বীকার করেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুন্সী তোফায়েল ইসলাম কানাইঘাট নিউজকে জানান প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবছর উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় আমন ধানের রেকর্ড বাম্পার ফলন উৎপাদন হয়েছে। উপজেলায় আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৪০৩৫ হেক্টর, কিন্তু সেই লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে আমাদের কৃষক ভায়েরা ১৭৭০০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ করেছেন। যা লক্ষ মাত্রার চাইতে ৩৬৬৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদ করা হয়েছে। প্রতি হেক্টরে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছড়িয়ে আমন ধান পেয়েছেন কৃষকরা। কৃষি বিভাগের সার্বক্ষণিক তদারকি ও পরামর্শে আমন ধানের উচ্চ ফলনশীল জাত যেমন ব্রি ধান ৪৯, ব্রি ধান ৫১, ব্রি ধান ৫২, ব্রি ধান ৪৬, ব্রি ধান ৪১ জাতীয় ধান আবাদ করায় বাম্পার ফলন হয়েছে। হেক্টর প্রতি উচ্চ ফলনশীল হতে ২.৯টন ও স্থানীয় হতে ১.৭টন গড় ফলন পাওয়া গেছে। কৃষকরা যাতে করে তাদের পাকা ধান নির্বিঘ্নে ঘরে তুলতে পারেন এ জন্য ধান কাটা ও মাড়াই মেশিন দিয়ে ধান তোলার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে কৃষকরা তাদের ফসল শতভাগ ঘরে তুলতে সক্ষম হবেন। নবান্ন উৎসব প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তারেক মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, কৃষক ভায়েরা হচ্ছে দেশের উন্নয়ন ও উৎপাদনের চালিকাশক্তি। আমরা সবাই কৃষকের সন্তান। কৃষকরা যখন ভালো ফলন পান তখন আমাদের মন ভরে যায় ও দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়। নবান্ন উৎসবের মধ্য দিয়ে কৃষকদের সাথে সামিল হতে পেরে সত্যি মনটা আনন্দে ভরে গেছে। তাদের এ সাফল্যের অংশীদার হতে পেরে নিজেকে গর্বিতবোধ করছি।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়