Tuesday, December 22

মৌলভীবাজারে শরীরে গরম পানি ঢেলে গৃহকর্মীকে নির্যাতন


মৌলভীবাজার প্রতিনিধি, মঙ্গলবার, ২২ ডিসেম্বর ২০১৫ :: ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ’ নীতিমালা অনুমোদনের একদিনের মাথায়ই মৌলভীবাজারে এক গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সদর উপজেলায় এক গৃহকর্মীর গায়ে গরম পানি ঢেলে ঝলসে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মেয়েটিকে নির্যাতনের ৪ দিন পর রবিবার উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত মেডিক্যাল সহকারী জাহিদুল ইসলাম জানান, মেয়েটির শরীরের প্রায় ৭ ভাগ স্থান পড়ে গেছে। পুড়ে যাওয়া ক্ষতের অবস্থা বেশ গুরুতর। ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৫ ডিসেম্বর বিকালে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার একাটুনা ইউনিয়নের বড়কাপন গ্রামের আয়াজ মিয়া মহাজনের বাড়িতে। ঝলসে যাওয়া গৃহকর্মী তাসলিমা আক্তার কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চৈতন্যগঞ্জ গ্রামের মৃত রহিম মিয়ার মেয়ে। তাসলিমা আক্তার জানায়, আয়াজ মিয়া মহাজনের মেয়ে নাঈমা আক্তার (১২) গরম পানি ঢেলে এ অবস্থার সৃষ্টি করেছে। ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তাসলিমা আক্তার আরো জানায়, আয়াজ মিয়ার স্ত্রী সুলতানা আক্তার গোসলের জন্য গরম পানি করে দিতে তাকে বলেন। একই সময় মেয়ে নাঈমা আক্তারও গরম পানি দিতে বলে। মেয়েকে পরে গরম পানি করে দিবে বলায় সে চুলায় ফুটানো গরম পানি একটি বালতিতে করে এনে তার গায়ে ঢেলে দেয়। গরম পানিতে তাসলিমার ডান হাতের কুনইর একাংশ ও পিটের ডান দিকের বেশ কিছু অংশ ঝলসে যায়। গরম পানিতে পুড়ে যাওয়ার পর আবার মা ও মেয়ে মিলে তাকে জুতা দিয়ে পেটায়। ঘটনার পর গৃহকর্র্তা ও মেয়ে মিলে তাকে তিন দিন কোন চিকিৎসা সেবা না দিয়ে মারধর করে আটক রাখে। ঘটনার ৪ দিন পর উল্টো নানা অপবাদে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে সে পর পুরুষের সাথে পালাচ্ছে বলে তার ভাই মধু মিয়াকে খবর দিলে ভাই বড়কাপন গ্রামে গিয়ে বোনকে উদ্ধার করে এনে রোববার (২০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। আহত তাসলিমা আরও জানান, ভাইয়ের সাথে সে আসার সময় গৃহকর্তা ও মেয়ে তার কাপড় চোপড় ও জমানো ৫০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। থানায় কোন অভিযোগ করেছেন কিনা জানতে চাইলে তাসলিমা জানায়, আমরা গরিব মানুষ, আমাদের টাকা পয়সা নাই। আমরা কিভাবে মামলা করবো। তবে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সহযোগিতা ফেলে মামলা করব। গৃহকর্মী তাসলিমার অভিযোগ সম্পর্কে জানতে আয়াজ মিয়ার স্ত্রী সুলতানা আক্তারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলে বন্ধ পাওয়া যায়।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়