Sunday, November 16

গোনাহের পরই তাওবা করা চাই


মাওলানা সাআদ উদ্দিন ভাদেশ্বরী খতিব, জামেয়া গহরপুর জামে মসজিদ, সিলেট রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, 'তোমাদের প্রত্যেকেই প্রতি মুহূর্তে ভুল-ত্রুটি করছ, তোমাদের মাঝে তারাই উত্তম যারা ভুল করার পরে বারবার তওবা করে।' ক্ষমা প্রার্থনার ফলে আমরা যেসব ভুল-ত্রুটি করে থাকি তার শাস্তি মাফ হয়ে যায়, অনুতাপ-অনুশোচনার কান্না খারাপ কাজগুলো ঢেকে দেয়। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বারবার ক্ষমা প্রার্থনার কথা বলেছেন এবং কিছু ক্ষেত্রে সরাসরি আদেশ করেছেন। আল্লাহ বলেন, 'এবং তোমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো, নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।' (সূরা মুজজাম্মিল : ২০)। এরশাদ হচ্ছে 'যে গোনাহ করে কিংবা নিজের অনিষ্ট করে, অতঃপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, সে আল্লাহকে ক্ষমাশীল, করুণাময় পায়।' (সূরা আন-নিসা : ১১০)। হজরত আবু বকর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেছেন, কোনো মুসলমানের পক্ষ থেকে কোনো গোনাহ হয়ে গেলে তার উচিত পাক হয়ে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়া এবং আল্লাহর দরবারে গোনাহ থেকে মাফ চাওয়া। তাহলে আশা করা যায়, আল্লাহ তায়ালা তার গোনাহ মাফ করে দেবেন। তারপর তিনি এ আয়াত তেলাওয়াত করেন, 'এবং তাদের অবস্থা এই যে, যদি কখনও তাদের দ্বারা কোনো অশ্লীল কাজ হয়ে যায় অথবা তারা কোনো গোনাহ করে নিজেদের ওপর জুলুম করে, তাহলে তৎক্ষণাৎ তাদের আল্লাহর কথা স্মরণ হয় এবং তাঁর কাছে তারা গোনাহ মাফ চায়। কারণ আল্লাহ ছাড়া আর কে আছে যে গোনাহ মাফ করতে পারে? এবং তারা তাদের কৃত অপরাধের জন্য জ্ঞাতসারে জিদ ধরে না।' (সূরা আলে ইমরান : ১৩৫)। ক্ষমা প্রার্থনা, তওবা কবুল হওয়া নির্ভর করে আল্লাহ পাকের ওপর। যদি তিনি ইচ্ছা করেন তবে তিনি বান্দার প্রার্থনায় সাড়া দেন এবং তাকে ক্ষমা করে দেন। এটি বেশি সম্ভব হবে যদি একেবারে অন্তর থেকে দোয়া করা হয়ে থাকে এবং সত্যিই খারাপ কাজে আর কখনও ফিরে না যাওয়ার দৃঢ়সঙ্কল্প থাকে। আর কিছু বিশেষ সময়ে করা প্রার্থনাও অধিক কবুল হয়ে থাকে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, রাতের শেষ সময়ে আল্লাহ তায়ালা দুনিয়ার দিকে নাজিল হন এবং বলেন, 'ডাকার জন্য কেউ আছে কি যার ডাক আমি শুনব, চাওয়ার জন্য কেউ আছে কি যাকে আমি দেব, গোনাহ মাফ চাওয়ার কেউ আছে কি যার গোনাহ আমি মাফ করব?' (সহিহ বোখারি)। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, 'আল্লাহর শপথ করে বলছি, আমি দৈনিক ৭০ বার আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং তওবা করি।' (সহিহ বোখারি : ১১/১০১)। প্রতি মুহূর্তেই আমরা জেনে, না জেনে কিংবা বুঝে, না বুঝে ভুল করেই চলছি। উপরন্তু, আমরা জানিও না কখন আমাদের ক্ষমা প্রার্থনা কবুল হবে, কাজেই যেখানে যে অবস্থাতেই থাকি না কেন সর্বদা ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকা উচিত।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়