Friday, November 7

সিলেট জেলা বিএনপির সম্মেলন কবে?


১৫ এপ্রিল রাতে ঘোষণা করা হয়েছিল সিলেট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি। বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয় বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নিখোঁজ এম ইলিয়াস আলীর গঠন করা নেতৃত্বাধীন জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি। ইলিয়াস আলী নিখোঁজ থাকায় আহ্বায়ক কমিটিতে স্থান পান ইলিয়াস পতœী তাহসিনা রুশদীর লুনা। তাকে করা হয় কমিটির অন্যতম সদস্য। রাজনীতিতে তার অভিষেক এ কমিটি ঘোষণার মধ্য দিয়ে। আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছিলেন দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এ কমিটিকে সম্মেলন করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে তিনি সময় বেঁধে দেন ৪৫ দিন। কিন্তু ৬ মাসের বেশি সময় হলো এখনো হয়নি সিলেট জেলা বিএনপির সম্মেলন। কবে হবে সম্মেলন এ প্রশ্নেরও কোনো জবাব নেই। এ অবস্থায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশ উপেক্ষা করেছে সিলেট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির নেতারা। যার ফলে জেলা বিএনপির সম্মেলন নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। আর এ কমিটিতে ১জন আহ্বায়ক ছাড়া যুগ্ম আহ্বায়ক রয়েছেন আরো ৮জন। এর মধ্যে ২ জনই আছেন লন্ডনে। ওই ২ নেতা হলেন যুগ্ম আহবায়ক অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামান ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এমরান আহমদ চৌধুরী। বর্তমানে তাদের ছাড়াই সব কার্যক্রম চলাচ্ছেন ১ জন আহ্বায়ক ও ৬ জন যুগ্ম আহ্বায়ক। দলীয় সূত্রে মতে, ১৩ উপজেলা ও ৪ পৌরসভার ১৭ কমিটির মধ্যে গঠন করা হয়েছে ৪টি কমিটি। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পর ১৩ উপজেলার একটিরও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেনি জেলা আহ্বায়ক কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্তরা। তবে গোলাপগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট পৌরসভার কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপজেলা ও থানা কমিটি শেষে করা হবে জেলা বিএনপির সম্মেলনÑ এমন তথ্য দলীয় নেতাদের। তবে কবে জেলা বিএনপির সম্মেলন করা সম্ভব তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না আহ্বায়ক কমিটির নেতারা। ৪ পৌর কমিটি গঠন করা হলেও উপজেলা কমিটি গঠন নিয়ে দেখা দিয়েছে আশঙ্কা। আর জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের মতো সম্মেলন ছাড়াই জেলা বিএনপির পকেট কমিটি গঠনের গুঞ্জনও উঠেছে। দলের গুরুত্বপূর্ণ পদপ্রত্যাশী প্রবাসী নেতার লন্ডন কানেকশনের কারণেই এমন আলোচনার জন্ম দিয়েছে বিএনপি পরিবারে। কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন ছাত্রদলের জেলা ও মহানগর কমিটির মতো সিলেট জেলা বিএনপির কমিটিও সম্মেলন ছাড়া করার তদবির চলছে। অপরদিকে কমিটির আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়কদের সবাই নতুন কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকতে চান। এর মধ্যে জেলার আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নুরুল হক, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক দিলদার হোসেন সেলিম, যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবদুল গফ্ফার সভাপতি পদপ্রত্যাশী। অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য লবিং করছেন যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামান, আবুল কাহের শামীম, আবদুর রাজ্জাক ও আলী আহমদ। আর সাংগঠনিক সম্পাদক হতে চান জেলা ছাত্রদলের সদ্য সাবেক সভাপতি লন্ডন প্রবাসী জেলা বিএনপির আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক এমরান আহমদ চৌধুরী। ওই পদে ছাত্রদলের শীর্ষ আরো ৩ নেতা লবিং করছেন বলে জানিয়েছে দলের নির্ভরযোগ্য সূত্র। জেলা বিএনপির সম্মেলন কবে হবে তা জানেন না জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নুরুল হক। তিনি জানান, ৪৫ দিনের সময় মৌখিকভাবে দেওয়া হয়েছে। এ সময় লিখিত নয়। আমরা ৪টি পৌরসভা কমিটি করেছি। আগামী মাস থেকে সব থানা ও উপজেলা কমিটি গঠন করা হবে। সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি হবে, পকেট কমিটি হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক দিলদার হোসেন সেলিম বলেন, সম্মেলন আরো আগে হওয়া উচিত ছিল। যেকোনো কারণে হয়ত তা বিলম্ব হয়েছে। এখন দ্রুত গতিতে সাংগঠনিক কাজ এগিয়ে নিয়ে সম্মেলন করা দরকার। জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবদুল গফফ্ার বলেন, সম্মেলন কবে হবে তা তার জানা নেই। তবে তিনি সভাপতি পদে প্রার্থী। তিনি বলেন, সম্মেলন হওয়া জরুরি। আহ্বায়ক কমিটির সবাই আরো আন্তরিক হলে শিগগিরই সম্মেলন করা সম্ভব। অপরদিকে আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য ও নিখোঁজ ইলিয়াস আলীর সহধর্মিণী তাহসিনা রুশদীর লুনাকে সভাপতি পদে দেখতে চায় বিএনপির বড় একটি অংশ। অবশ্য পদপদবি নিয়ে ইলিয়াসপতœী লুনার কোনো আগ্রহ নেই।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়