নিউজ ডেস্ক:
মালয়েশিয়ায় সারওয়াক প্রদেশে শ্রমিক পাঠানোর বিষয়ে অনুমতি দেয়ার
সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশটির স্বায়ত্তশাসিত এই প্রদেশে
কৃষি ও কলকারখানাসহ কয়েকটি খাতে বছরে ৮-১০ হাজার শ্রমিক যাওয়ার সুযোগ রয়েছে
।
সম্প্রতি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ইমরান
আহমদের মালয়েশিয়া সফরে তার নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল
সারওয়াক প্রদেশেদের গভর্নর ও অন্যান্য উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে
বৈঠক করেছেন। ওই প্রতিনিধি দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত
সচিব ড. আহমেদ মুনিরুস সালেহীন।
তিনি বলেন, সারওয়াক সরকার কৃষিখাতে বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগের বিষয়ে
আগ্রহ প্রকাশ করেছে। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে ৪০ জনের
চাহিদাপত্র পেয়েছে। এই ৪০ জনের চাহিদাপত্র অবশ্য কারখানা শ্রমিকের জন্য।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন সূত্র মতে, বেশ কিছুদিন ধরেই সারওয়াক
প্রদেশে শ্রমিক পাঠানোর চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ হাইকমিশনারের
কর্মকর্তারা জানান, সারওয়াকের নিয়োগকর্তাদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠক
হয়েছে এবং সেখানে বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিয়োগের বিষয়ে তারা বেশ আশাবাদী।
বাংলাদেশের রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো বলছে, মালয়েশিয়ার স্বায়ত্তশাসিত এই
প্রদেশটিতে বড় ধরনের উন্নয়ন কার্যক্রম চলছে। ফলে কৃষি খাত ছাড়াও বিভিন্ন
খাতে বাংলাদেশি শ্রমিকদের কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
অতিরক্তি সচিব আহমেদ মুনিরুস সালেহীন বলেন, নীতিগতভাবে সারওয়াক প্রদেশ
থেকে যদি বৈধ কাগজপত্র পাওয়া যায়, সেগুলো যদি যাচাইবাছাইয়ে ঠিক থাকে তাহলে
আমাদের লোক পাঠাব। এ বিষয়গুলো আমরা ডাবল চেক করব।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়ার বিষয়ে সারওয়াক প্রদেশ নিজেই
সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার মন্ত্রী। অর্থাৎ তারা এককভাবে
সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এখন তারা যদি ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট দেয়, আর সেটা
যাচাই করে ঠিক পেলে আমাদের লোক পাঠাতে কোনো অসুবিধা নেই।
এদিকে বর্তমানে সারওয়াক প্রদেশে কতজন বাংলাদেশি রয়েছেন -এ বিষয়ে
দূতাবাস বা মন্ত্রণালয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। অভিবাসন বিশ্লেষকরা বলছেন,
সারওয়াক মালয়েশিয়ায় একটি আলাদা স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশ। এটি পাহাড়ি
এলাকা। ফলে বাংলাদেশি শ্রমিকরা সেখানে অধিকার সংক্রান্ত সমস্যায় পড়তে পারে।
তারা আরও বলছেন, সারওয়াক প্রদেশে বাংলাদেশ মিশনের কোনো কার্যালয় নেই।
ফলে সেখানে শ্রমিকরা কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে দূতাবাসকে জানানো কঠিন হবে।
ফলে শ্রমিকদের চাকরি এবং তাদের জন্য সম্পূর্ণ বীমা কভারেজ নিশ্চিত করার
পরেই কাউকে সারওয়াক প্রদেশে পাঠানো উচিত।
অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা ওয়ারবি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান
সৈয়দ সাইফুল হক বলেন, সারওয়াক প্রদেশ সম্পর্কে যতটুকু জেনেছি এখানে মূলত
পামওয়েল সংগ্রহের কাজ। এখানে কাজের জায়গাটা অত্যন্ত ঝূঁকিপূর্ণ এবং
পরিশ্রমের। আবার অবৈধ হয়ে গেলে কম বেতনে কাজ করানো হয়।
তাছাড়া সারওয়াক স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশ হওয়ায় সেখানকার প্রশাসনের সাথে
বাংলাদেশি শ্রমিকদের অধিকার বিষয়ে আলাদা চুক্তি হওয়া প্রয়োজন বলেও মনে করেন
তিনি।
এ বিষয়ে ড. মুনিরুস সালেহীন বলেন, চুক্তি একটা থাকা উচিত। এ বিষয়ে আমরা
কাজ করব। এর মধ্যে ওখানকার বিজনেস ফেডারেশন, আমাদের হাইকমিশনের
অ্যাটাসটেশন, যারা কাজ দিচ্ছে তাদের গ্যারান্টি যদি পাই তাহলেই আমরা
ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেব।
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়